বিডিনিউজ ॥ মালয়েশিয়া সরকার চারটি খাতে বিদেশী শ্রমিক নেয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির পরিবহন মন্ত্রী লিও টিয়ংলাই।
কর্মী সঙ্কটে ভুগতে থাকা ম্যানুফ্যাকচারিং, নির্মাণ, প্ল্যান্টেশন ও আসবাব শিল্পের উদ্যোক্তাদের আবেদনে মালয়েশিয়ার মন্ত্রিসভা এই সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে বলে দেশটির ইংরেজী নিউজ পোর্টাল স্টার অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
মন্ত্রী লিও টিয়ংলাইকে উদ্ধৃত করে স্টারের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘লোকবলের তীব্র সঙ্কটের কথা মাথায় রেখে এসব খাতে বিদেশী শ্রমিক নিয়োগের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে।’
তিনি বলেন, মালয়েশিয়ার মন্ত্রিসভা ইতোমধ্যে বিদেশী শ্রমিক নিয়োগ ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য কাজ করছে এবং তা শেষ হলে অন্যান্য খাতের ওপর থেকেও ধাপে ধাপে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে।
এর আগে গত ২৯ এপ্রিল মালয়েশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী আহমেদ জাহিদ হামিদিও ‘শীঘ্রই’ বিদেশী শ্রমিক নেয়ার বিষয়ে ইতিবাচক ঘোষণার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়া বাংলাদেশের জনশক্তি রফতানির গুরুত্বপূর্ণ বাজার। বর্তমানে প্রায় ছয় লাখ বাংলাদেশী সেখানে বিভিন্ন পেশায় রয়েছেন।
আগামী পাঁচ বছর বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেয়ার বিষয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে দুই দেশের সরকারের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হলেও পরদিনই বিদেশী শ্রমিক নেয়া স্থগিতের ঘোষণা দেয় দেশটির সরকার।
ওই সমঝোতা স্মারকে কত শ্রমিক নেয়া হবে সে বিষয়ে কিছু উল্লেখ না থাকলেও মৌখিকভাবে বছরে তিন লাখ করে মোট ১৫ লাখ শ্রমিক নেয়ার বিষয়ে সমঝোতা হয় বলে সে সময় বাংলাদেশী কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন।
দীর্ঘদিন বন্ধ রাখার পর ২০১৩ সালে বাংলাদেশ থেকে কেবল ‘প্ল্যান্টেশন’ খাতে শ্রমিক নেয়া শুরু করে মালয়েশিয়া। এরপর গতবছর বাংলাদেশকে মালয়েশিয়ার জনশক্তির জন্য ‘সোর্স কান্ট্রির’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং সেবা, উৎপাদন, নির্মাণসহ অন্যান্য খাতে কর্মী নেয়ার আলোচনা শুরু হয়।
এর ধারাবাহিকতায় মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী রিচার্ড রায়ত জায়েম এবং বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় সমঝোতা স্মারকে সই করেন।
ওই চুক্তির আওতায় মালয়েশিয়া তাদের পাঁচটি খাতে সরকারী-বেসরকারী পর্যায়ের সমন্বয়ে ‘জিটুজি প্লাস’ বাংলাদেশী কর্মী নেবে বলে অনুষ্ঠানের পর জানানো হয়।
কিন্তু তার ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই মালয়েশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী হামিদি বাংলাদেশসহ সব ‘সোর্স কান্ট্রি’ থেকে জনশক্তি আমদানি স্থগিতের ঘোষণা দেন।
তিনি সে সময় বলেছিলেন, ‘কত শ্রমিক আমাদের প্রয়োজন সে বিষয়ে সরকার সন্তোষজনক তথ্য না পাওয়া পর্যন্ত বিদেশী কর্মী নেয়া স্থগিত থাকবে।’
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: