ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জঙ্গীগোষ্ঠীর বার বার হত্যাকাণ্ডে সংসদীয় কমিটির অসন্তোষ

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ১২ মে ২০১৬

জঙ্গীগোষ্ঠীর বার বার হত্যাকাণ্ডে সংসদীয় কমিটির অসন্তোষ

সংসদ রিপোর্টার ॥ দেশে বার বার জঙ্গীগোষ্ঠীর পরিকল্পিত হত্যাকা-ের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দুষলো সংসদীয় কমিটি। সরকারের কঠোর অবস্থান সত্ত্বেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃশ্যমান পদক্ষেপ না থাকায় সাম্প্রদায়িক জঙ্গীগোষ্ঠী একের পর এক পরিকল্পিত হত্যাকা- ঘটাচ্ছে উল্লেখ করে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কমিটির পক্ষ থেকে জঙ্গী সন্ত্রাসীদের দ্রুতবিচার নিশ্চিত ও তাদের শাস্তি দৃশ্যমান করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়। কমিটির সভাপতি টিপু মুন্শির সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, মোঃ শামসুল হক টুকু, ওমর ফারুক চৌধুরী, মোঃ ফরিদুল হক খান, ফখরুল ইমাম ও কামরুন নাহার চৌধুরী এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। কমিটি সূত্র জানায়, বৈঠকে সাম্প্রতিক সময়ে জঙ্গীগোষ্ঠীর হাতে নিহত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের অধ্যাপক রেজাউল করিম সিদ্দিকী এবং ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের সাবেক কর্মকর্তা জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু তনয় হত্যাকা-ের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচ্যসূচীভুক্ত না থাকলেও বিষয়টিকে উদ্বেগজনক উল্লেখ করে তা নিয়ে আলোচনা করেন কমিটির সদস্যরা। তারা চাঞ্চল্যকর ওই হত্যাকা- নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, বার বার এ ধরনের ঘটনা ঘটলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ নেই। ঘটনা ঘটিয়ে জঙ্গীরা নির্বিঘেœ পার পেয়ে যাচ্ছে। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সরকার। সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা কমে যাচ্ছে। অথচ সরকার জঙ্গীবাদ দমনে যথেষ্ঠ কঠোর ও আন্তরিক। কমিটির সদস্যরা জঙ্গীদের অপতৎপরতা নির্মূলে হত্যাকারীদের শাস্তির মুখোমুখি করতে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার তাগিদ দেন। বৈঠক শেষে এ বিষয়ে কমিটির সদস্য ফখরুল ইমাম সাংবাদিকদের বলেন, সম্প্রতি সন্ত্রাসী হামলায় কয়েকজন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে মানুষের মধ্যে বিষণœতা দেখা দিয়েছে। তাই মানুষের মাঝে আস্থা ফিরিয়ে আনতে হলে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করে তা দৃশ্যমান করতে হবে। কমিটি তাই মন্ত্রণালয়কে দ্রুত অপরাধীদের শাস্তি দৃশ্যমান করার তাগিদ দিয়েছে। বৈঠকে সাম্প্রদায়িক জঙ্গীবাদ রোধে সারাদেশে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের কার্যক্রম আরও জোরদার করার সুপারিশ করা হয়েছে। এদিকে বৈঠকে মাদকবিরোধী কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচনা শেষে ২০১৪ ও ২০১৫ সালে উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও মাদকের সঠিক তথ্যসংবলিত প্রতিবেদন পরবর্তী বৈঠকে উপস্থাপনের জন্য বলা হয়। আর রাজধানীতে পুলিশের উদ্যোগে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে মাদকরোধ, বাল্যবিবাহ ও অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার সুপারিশ করা হয়। এই কাজে ইমাম-পুরোহিতসহ বিভিন্ন ধর্মের গুরুজনদের সম্পৃক্ত করার পরামর্শ দেয়া হয়। এছাড়া বৈঠকে ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ে রোডের নিরাপত্তায় পুলিশের পাশাপাশি পরিবহন মালিক কর্তৃপক্ষকে এগিয়ে আসার এবং পরিবহনের ড্রাইভার নিয়োগে পুলিশের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা অনুসরণের তাগিদ দেয়া হয়। আর দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে পুলিশকে আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের জন্য বলা হয়।
×