ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জাতীয় ফুটবল দলে ডাক পাওয়া নতুন মুখ তূর্য

‘বাবার সম্মান রক্ষা করতে চাই’

প্রকাশিত: ০৪:৩৪, ১২ মে ২০১৬

‘বাবার সম্মান রক্ষা করতে চাই’

রুমেল খান ॥ ‘বাবা সৈয়দ মনিরউদ্দিন আহমেদ ছিলেন সাবেক জাতীয় বক্সার। শিরোপা জিতেছিলেন দশ বার (বর্তমান তিনি বক্সিং ফেডারেশনের জাতীয় দলের কোচ)। তিনি যেমন জাতীয় দলে খেলেছিলেন, তেমনি তার ছেলে হয়ে আমিও চাই জাতীয় ফুটবল দলে খেলতে। প্রথমবারের মতো জাতীয় দলের প্রাথমিক দলে ডাক পাওয়ায় দারুণ রোমাঞ্চিত বোধ করছি। চেষ্টা থাকবে চূড়ান্ত দলে থাকার। আমার লক্ষ্য জাতীয় দলে খেলে বাবার মান রক্ষা করা।’ কথাগুলো যার, তার নাম তূর্য। ভাল নাম সৈয়দ রাশেদ। খেলেন রহমতগঞ্জের হয়ে। আগামী জুনের প্রথম সপ্তাহে দুটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বের প্লে অফ ম্যাচে ২ ও ৭ জুন তাজিকিস্তানের বিপক্ষে খেলবে ‘বেঙ্গল টাইগার্স’ দল। এ উপলক্ষে মঙ্গলবার ৩৪ জনের প্রাথমিক দল ঘোষণা করে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। বুধবার থেকে শুরু হয় জাতীয় দলের অনুশীলন। এই ৩৪ জনের দলে নতুন মুখ পাঁচজন। তারা হচ্ছেন : ডিফেন্ডার খালেকুজ্জামান সবুজ, মিডফিল্ডার কৌশিক বড়ুয়া এবং তিন ফরোয়ার্ড মান্নান রাব্বি, নুরুল আবসার ও সৈয়দ রাশেদ তূর্য। বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসের জীবন্ত কিংবদন্তি কাজী মোঃ সালাউদ্দিনেরও ডাকনাম ছিল তূর্য। ১৯৮৪ সালে যখন তিনি খেলোয়াড়ী জীবনের অবসান ঘটান, তখন রাশেদ তূর্যর জন্মই হয়নি! তার জন্ম আরও পরে, ১৯৯০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। ২৬ বছর বয়সী তূর্য তাই সালাউদ্দিনের খেলা দেখেননি, তবে দেখেছেন আলফাজ আহমেদের খেলা। তাকেই আদর্শ মানেন তিনি। আর বিদেশে প্রিয় ফুটবলার রোনাল্ডো এবং ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। বুধবার জাতীয় দলের ক্যাম্প উপলক্ষে ফুটবলারদের রিপোর্টিংয়ের সময় ছিল বেলা ১২টা। অথচ বাফুফে ভবনে সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যেই লাগেজ নিয়ে এসে হাজির তূর্য! এত আগে কেন? বাসা কি অনেক দূরে? ‘না।’ লাজুক কণ্ঠে জবাব তূর্যর, ‘বাসা খিলগাঁয়ে। আসলে প্রথম ডাক পেয়েছি তো, তাই ভীষণ এক্সাইটেড। এ জন্যই আগেই চলে এসেছি!’ ইন্টারেস্টিং বিষয় হচ্ছে- তূর্যর জীবনের ১০ বছর কেটেছে জাপানে। কাহিনীটা তার মুখেই শোনা যাক, ‘বাবার কারণেই সপরিবারে জাপান যাওয়া ১৯৯৬ সালে। ওখানে বাবা একটি রেস্টুরেন্টের শেফ ছিলেন। ওখানেই স্কুলে পড়েছি। ফুটবলের হাতেখড়ি ওখানেই। স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে প্রচুর ফুটবল খেলেছি। দেশে ফিরে মোহামেডানের অনুর্ধ-১৬ দলে ট্রায়াল দিয়ে টিকে যাই। এখান থেকেই শুরু।’ ২০০৮ থেকে এ পর্যন্ত ছয়টি ক্লাবে খেলেছেন তূর্য। এগুলো হলো : ঢাকা মোহামেডান, আরামবাগ, ব্রাদার্স ইউনিয়ন, ফেনী সকার, অগ্রণী ব্যাংক এবং রহমতগঞ্জ। মাঝে অবশ্য বছর খানেক ফুটবলে ছিলেন না। অনেক চেষ্টা করেও কারণটা বলতে রাজি হলেন না তূর্য। সবশেষে জানান, ‘জাপান থেকে ফিরে যখন খেলা শুরু করি, তখন বাংলাদেশের ফুটবল সম্পর্কে কোন ধারণাই ছিল না। পরে খেলতে খেলতে হয়েছে। দেশের বর্তমান ফুটবল নিয়ে যারা নৈরাশ্যবাদী, আমি তাদের দলে নেই। আমার মতে, দেশের ফুটবল ভালর দিকেই এগুচ্ছে। আমি আশাবাদী, দেশের ফুটবল আরও উন্নতি করবে।’
×