ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

টাঙ্গাইলের গোপালপুর ও ভুঞাপুর উপজেলার ১৩ ইউপিতে বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে ভোটগ্রহণ

প্রকাশিত: ০৩:১৫, ৩১ মার্চ ২০১৬

টাঙ্গাইলের গোপালপুর ও ভুঞাপুর উপজেলার ১৩ ইউপিতে বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে ভোটগ্রহণ

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল ॥ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ২য় দফায় বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর ও গোপালপুরের ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদে দুই একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে ভোট গ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল থেকেই উৎসবমুখর পরিবেশে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোটারদের ভোট দিতে দেখা যায়। সকালের দিকে কেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি কম থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে ভোটার উপস্থিতি বাড়তে থাকে। পুরুষের চেয়ে মহিলা ভোটারের উপস্থিতি বেশী। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীক থাকায় গ্রামীন জনপদে ভোটের উৎসব দেখা যায়। এদিকে বিকেলের দিকে জাল ভোট ও আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ভূঞাপুরে চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ১৯ জনকে আটক করেছে পুলিশ। আটকরা হলো- অলোয়া ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ওয়াহিদুজ্জামান পলাশ, তার মা সাবেক চেয়ারম্যান ওয়াজেদা সালাম পপি, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক আব্দুল হামিদ ভোলা, লতিফ তালুকদার, ফরিদুল ইসলাম, বেল্লাল হোসেন, আম্বিয়া খাতুন, কল্পনা বেগম, শাহ্ জাহান, খসরু মিয়া, লিয়াকত সরকার, আব্দুল লতিফ, মকবুল হোসেন, আলমগীর হোসেন, হারুন, বুলবুল, আলমগীর, মনিরুজ্জামান ও সাইদুল ইসলাম। টাঙ্গাইলের সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) হাফিজুর রহমান জানান, ভুঞাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক আওয়ামী লীগ নেতা ভোলার নেতৃত্বে কয়েকজন অলোয়া ইউনিয়নের ৪৫নং ভারই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে জাল ভোট দিচ্ছেন এমন খবর পেয়ে পুলিশ ১০ জনকে হাতেনাতে আটক করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে অর্ধশতাধিক ব্যালট পেপার উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় উত্তেজনা সৃষ্টি হলে পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ তিন রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে। অপরদিকে ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুল কবির জানান, উপজেলার বিভিন্ন কেন্দ্রে জাল ভোট দেয়ার সময় আরো ৯ জনকে আটক করা হয়। আটককৃত ১৯জনকে ভূঞাপুর থানায় রাখা হয়েছে। এদিকে টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের বিএনপির প্রাথী মোস্তাফিজুর রহমান জসিম ভোট বর্জন করেছেন। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় তার নিজ বাসভবনে সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি ভোট বর্জনের ঘোষনা দেন। তিনি জানান, মির্জাপুর ইউনিয়নে ৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ৭টি কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও তার লোকজন পুলিশের সহযোগিতায় ধানের শীষের এজেন্টদের ভোট কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে কেন্দ্র দখল করে জাল ভোট দেয়ার কারণে তিনি নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়ানোর ঘোষনা দেন। মির্জাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রিজাইডিং অফিসার আব্দুল লতিফ ফলাফলের সীটে সকাল ৮টায় প্রার্থীর এজেন্টদের স্বাক্ষর নেয়ার কথা স্বীকার করে জানান, সকাল ৯টার পর কোন এজেন্ট পাওয়া যায়নি। তবে এ বিষয়ে আমার কাছে কেউ কোন অভিযোগ করেনি। জানা যায়, দুইটি উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে মোট ভোটার রয়েছে ২লাখ ৮১হাজার ৯০৮জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১লাখ ৪১হাজার ৫২৭জন এবং মহিলা ভোটার ১লাখ ৪০হাজার ৩৮১জন। মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১২২টি এবং ভোট কক্ষের সংখ্যা ৭৫৩টি। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৫৩জন, সাধারণ সদস্য পদে ৪০৭জন এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১২৩জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তার মধ্যে গোপালপুর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ২৭জন, সাধারণ সদস্য পদে ২২৭জন এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৬৪জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দি¦তা করছেন। মোট ভোটার রয়েছেন ১লাখ ৫৮হাজার ৮৫৪জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৭৯হাজার ২৮৫জন এবং মহিলা ভোটার ৭৯ হাজার ৫৬৯জন। ৬৫টি ভোট কেন্দ্রের ৪১০টি কক্ষে ৬৫জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৪১০জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং ৮২০জন পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করেন। অপরদিকে, ভুঞাপুর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ২৬ জন, সাধারণ সদস্য পদে ১৮০ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৫৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মোট ভোটার রয়েছেন, ১ লাখ ২৩ হাজার ৫৪ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৬২ হাজার ২৪২জন এবং মহিলা ভোটার ৬০ হাজার ৮১২জন। ৫৭টি ভোট কেন্দ্রের ৩৪৩টি কক্ষে ৫৭জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৩৪৩জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং ৬৮৬জন পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করেন। দুইটি উপজেলার প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে বিজিবি, পুলিশ, র‌্যাব, আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করে। এছাড়াও ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে ষ্টাইকিং ফোর্স ও ভ্রাম্যমান আদালত টহল দেয়।
×