ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

‘হারিয়ে যাচ্ছে গন্ধযুক্ত ফুল’

প্রকাশিত: ০৩:০১, ২৯ মার্চ ২০১৬

‘হারিয়ে যাচ্ছে গন্ধযুক্ত ফুল’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিজ্ঞানীদের গন্ধযুক্ত ফুল উদ্ভাবনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরি বলেছেন, দেশে ফুল চাষের অপার সম্ভাবনা থাকা সত্তেও গন্ধযুক্ত ফুল হারিয়ে যাচ্ছে। গন্ধযুক্ত বসরাই গোলাপ আর দেখা যায় না, সুগন্ধী যুক্ত এই গোলাপ আর দেখতে পাই না। ফুল আছে রঙ আছে তবে গন্ধ নেই! তাই ফুলের সঙ্গে সুবাস যুক্ত করতে হবে। বিজ্ঞানীদের অবশ্যই গন্ধযুক্ত ফুল নিয়ে ভাবতে হবে। ফুলকে একদিকে যেমন সৌন্দর্য দিয়ে আকর্ষণ করতে হবে, ঠিক তেমনি গন্ধ দিয়েও। তাই বিজ্ঞানী ও ফুলচাষীদের গন্ধযুক্ত ফুল নিয়ে কাজ করতে হবে। মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে ‘বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার ফেস্ট’-র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দেশে প্রথমবারের মতো দুই দিনব্যাপী এই ফুল মেলার আয়োজন করেছে যৌথভাবে বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটি (বিএফএস), ইউএসএআইডি’র এভিসি প্রকল্প ও দেশিফুল ডট কম। কৃষিমন্ত্রী বলেন, ফুল জিনিসটা আমাদের সহজাভাবেই টানে। পেটে ক্ষুধা থাকলে ফুলের দিকে তাকানোর সময় হয় না। আবার ফুলের শ্রমিকরা শুধু পেটের ক্ষুধাই নয়, ফুলচাষের মাধ্যমে পরিবারের চাহিদাও মেটাচ্ছে। ফুলের দিকে তাকানোর সময় হয়েছে কেবল ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণের মাধ্যমেই। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মোঃ হামিদুর রহমান বলেন, আমার পরপর তিনটি মেলা আয়োজন করেছি সবজি মেলা, মৌ মেলা ও ফুলমেলা। মেলা আয়োজনে এক ধরণের উদ্ভাবনী চিন্তা কাজ করেছে। ফুলকে খুব বড় পণ্য হিসাবে দেখা হয় না। অবহেলায় ধীরে ধীরে বেড়ে উঠা ফুলের সঙ্গ আজ সারসরি ১৬ হাজার কৃষক যুক্ত। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দিন আবদুল্লাহ বলেন, ফুলের ব্যবসা প্রসারে যা যা করা দরকার আমরা তাই করবো। ফুল গবেষণার ব্যাপকতা বৃদ্ধি করা হবে। অনুষ্ঠানে ‘ফুল চাষের সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএফএস’র উপদেষ্টা ড. গায়নাথ সরকার। মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, ফুলের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলচাষীরাও নতুন ফুল চাষে আগ্রহী। অর্থনীতিতেও ফুলের যথেষ্ট অবদান রয়েছে। তবে ফলের চেইন মার্কেট তেমন উন্নত নয়। উৎপাদিত ফুল রিটেইল মার্কেটে নিয়ে আসতে আসতেই তার ২২ শতাংশ ফুল নষ্ট হয়ে যায়। বাংলাদেশের ফুল রফতানীরও যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। তিনি আরও জানান, ফুল চাষীদের কথা বিবেচনা করে খুব শীঘ্রই দেশে একটি ফুলের বাজার গড়ে তোলা হবে। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বর্তমানে ২৩ টি জেলায় ১০ হেক্টর জমিতে প্রায় ১৬ হাজার কৃষক সরাসরি বিভিন্ন জাতের ফুল উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ২০ লক্ষ মানুষ এ খাতে নিয়োজিত। দেশে বছরে প্রায় ৮০০ কোটি টাকার ফুল উৎপাদিত হচ্ছে। আয়োজকরা জানান, মেলায় ফুল উৎপাদক, ফুল ব্যবসায়ী, ফুল সেক্টরের সংশ্লিষ্ট সংগঠন, সাজসজ্জা বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠন অংশগ্রহণ করছে। মোট ২০ টি স্টল প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছে। এছাড়া ফেস্টিভ্যালে গোলটেবিল বৈঠক, ফুলের ফ্যাশন শো ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও থাকছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিএফএস’র সভাপতি মোঃ আব্দুর রহিমের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন ইউএসএআইডি’র টিম লিডার মার্ক টেজেন ফিল্ড ও এভিসি প্রকল্পের মাইকেল ফিল্ড।
×