ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আট মাসে কৃষিঋণ বিতরণ ৬৯ শতাংশ

প্রকাশিত: ০৪:৩৭, ২৯ মার্চ ২০১৬

আট মাসে কৃষিঋণ বিতরণ ৬৯ শতাংশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ কৃষিখাতে ঋণ বিতরণ বাড়ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো লক্ষ্যমাত্রার ৬৯ শতাংশ কৃষিঋণ বিতরণ করেছে। পাশাপাশি এ সময়ে যে পরিমাণ কৃষিঋণ বিতরণ হয়েছে তা গেল অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ১৫ শতাংশ বেশি। তবে এ সময়ে সরকারী খাতের ব্যাংকের চেয়ে বেসরকারী ও বিদেশী খাতের ব্যাংকগুলো কৃষিঋণ বিতরণে এগিয়ে রয়েছে। যদিও এ সময় পর্যন্ত বিদেশী ব্যাংকগুলোর মধ্যে ব্যাংক আল ফালাহ, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন ও ন্যাশনাল ব্যাংক অব পকিস্তান কোন ঋণ বিতরণ করতে পারেনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। চলতি অর্থবছরের জন্য কৃষি খাতে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। প্রতিবেদন দেখা গেছে, জুলাই-ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই আট মাসে ব্যাংকগুলো ১১ হাজার ৩৭৪ কোটি ৪২ লাখ কৃষি ঋণ বিতরণ করেছে। যা লক্ষ্যমাত্রার ৬৯ দশমিক ৩৭ শতাংশ। গেল ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে এ খাতে ৯ হাজার ৯১৪ কোটি ১০ লাখ টাকার ঋণ বিতরণ করা হয়েছিল। এ হিসেবে চলতি অর্থবছরে কৃষিঋণ বিতরণ বেড়েছে ১৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ। প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে সরকারী খাতের ব্যাংকগুলোর কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ হাজার ২৯০ কোটি টাকা। প্রথম আট মাসে বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ৫ হাজার ৮০৯ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার ৬২ দশমিক ৫৪ শতাংশ। এর মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৭০ কোটি ২৬ লাখ টাকা, সোনালী ব্যাংক ৮৩২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ৭০৬ কোটি ৩ লাখ টাকার কৃষি ঋণ বিতরণ করেছে। বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক মাত্র ১ কোটি ৩৬ লাখ টাকার কৃষি ঋণ বিতরণ করেছে, যা লক্ষ্যমাত্রার ২ দশমিক ৭২ শতাংশ। এ সময়ে বেসরকারী ও বিদেশী খাতের ব্যাংকগুলো কৃষিঋণ বিতরণ করেছে ৫ হাজার ৫৬৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার ৭৮ দশমিক ২৯ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে বেসরকারী ও বিদেশী ব্যাংকগুলোর জন্য ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছে ৭ হাজার ১১০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংক সর্বোচ্চ ৭৬৭ কোটি ৪৭ লাখ টাকার ঋণ বিতরণ করেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই ৮ মাসে ব্যাংকগুলো সবচেয়ে বেশি ঋণ বিতরণ করেছে খাদ্যশস্য উৎপাদনে। এতে বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ৫ হাজার ৮৮২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। এর পরে কৃষকরা বেশি ঋণ নিয়েছে মুরগি পালন ও মাছ চাষের জন্য। মুরগি পালনের জন্য ব্যাংকগুলোর বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৬২৭ কোটি ৯১ লাখ এবং মাছ চাষে মোট ঋণ দেয়া হয়েছে ১ হাজার ২০২ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। এদিকে, একক মাস হিসেবে ফেব্রুয়ারি মাসে কৃষিঋণ বিতরণ কমেছে। এ মাসে কৃষিঋণ বিতরণ হয়েছে ১ হাজার ২৯৭ কোটি টাকা। যা জানুয়ারি মাসে ছিল ১ হাজার ৩২৩ কোটি টাকা। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইতে কৃষিঋণ বিতরণ হয়েছিল মাত্র ৮৬১ কোটি ৯১ লাখ টাকা। তবে আগস্টের থেকে কৃষিঋণ বিতরণ স্বাভাবিক হতে শুরু করে। আগস্ট মাসে কৃষিঋণ বিতরণ হয় ৯৫২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। সেপ্টেম্বর ১ হাজার ৩৮৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা, অক্টোবরে ১ হাজার ৪২৭ কোটি, নবেম্বরে ৯০৩ কোটি ও ডিসেম্বরে ৩ হাজার ২২১ কোটি টাকার টাকার কৃষিঋণ বিতরণ হয়। চলতি অর্থবছরে ব্যাংকগুলোকে মোট ঋণের ন্যূনতম আড়াই শতাংশ কৃষি ও পল্লী খাতে বিতরণ করতে হবে। নতুন ব্যাংকগুলোর জন্য এ হার ৫ শতাংশ। কৃষি নীতিমালা অনুযায়ী, যারা লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্ষম হবে না তাদেরকে অর্থবছর শেষে লক্ষ্যমাত্রার অনর্জিত অংশ বাংলাদেশ ব্যাংকে বাধ্যতামূলক জমা করতে হবে। ব্যাংক এই জমার ওপর কোন সুদ পাবে না।
×