ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আত্মবিশ্বাস বেড়েছে- মাশরাফি

প্রকাশিত: ০৭:১৫, ২৮ মার্চ ২০১৬

আত্মবিশ্বাস বেড়েছে- মাশরাফি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এবার ভারতের মাটিতে টি২০ বিশ্বকাপটা কেমন গেল বাংলাদেশ দলের? অনেকগুলো আক্ষেপে ভরা ছিল এবারের বিশ্বকাপ অভিযান। বিশেষ করে ভারতের কাছে প্রায় নিশ্চিত বিজয়ের ম্যাচে শেষ পর্যন্ত ১ রানের পরাজয়টি তাড়া করে ফিরবে বাংলাদেশকে। আর শেষটা হয়েছে ভয়াবহ রকমের লজ্জা দিয়ে। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে মাত্র ৭০ রানে অলআউট হওয়া ম্যাচে ৭৫ রানে পরাজিত হয়ে ব্যর্থতার ষোলোকলা পূর্ণ করেছে বাংলাদেশ দল। তবে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের বিরুদ্ধে দারুণ ম্যাচ দুটি থেকে আত্মবিশ্বাস পেয়ে গেছেন ক্রিকেটাররা। ওয়ানডে ক্রিকেটে যেমন নিজেদের শক্তি অনুসারে খেললেই এখন যে কোন দলকে হারাতে পারে টাইগাররা। এখন টি২০ ক্রিকেটেও যে কোন দলকে হারানোর আত্মবিশ্বাস পেয়ে গেছে দল। এমনটাই দাবি করলেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। কলকাতার ইডেন গার্ডেনে শনিবার শেষ ম্যাচ খেলার পর রবিবার সকালেই দেশে ফেরে বাংলাদেশ দল। আর সে সময় বিমানবন্দরে এসব কথা বলেন মাশরাফি। এবার এশিয়া কাপ থেকেই বাংলাদেশ দলের টি২০ ক্রিকেটেও উত্থানের শুরু। অনেক ক্রিকেট বিশ্লেষকই বলছিলেন এবার বাংলাদেশ দল সেমিফাইনাল খেলবে। কারণ এশিয়া কাপ টি২০ আসরে দুর্দান্ত খেলে মাশরাফি বাহিনী হয়ে যায় রানার্সআপ। হারিয়ে দেয় শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানকে। সেটার আগে পর্যন্ত ক্ষুদ্রতম ফরমেটের এ ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের অবস্থা তেমন ভাল ছিল না। তবে টি২০ বিশ্বকাপে গিয়ে নানাবিধ ঘটনার সম্মুখীন হন মাশরাফিরা। দলের অন্যতম পেসস্তম্ভ মুস্তাফিজুর রহমান ইনজুরির কারণে ফিটনেস সমস্যায় খেলতে পারছিলেন না। প্রাথমিক রাউন্ডে হল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচে তাসকিন আহমেদ ও আরাফাত সানির বোলিং এ্যাকশনে ত্রুটি ধরেন আম্পায়াররা। সুপার টেনে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলার পরই ত্রুটি নিশ্চিত হলে দু’জনকেই সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। সেটা ছিল বাংলাদেশ দলের জন্য বিশাল ধাক্কা। এরপরও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মাশরাফিরা। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তাসকিন যে নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়বে, এটা আমরা ভাবতেও পারিনি। কেবল আমরা নই, অন্যান্য দেশের বিশেষজ্ঞরাও খুব অবাক হয়েছে এতে। তারাও মোটামুটি নিশ্চিত ছিল যে তাসকিনের এ্যাকশন নিয়ে কোন সমস্যা হবে না। যেহেতু ওর সমস্যা শুধু বাউন্সারে, তাই ওকে আমরা খেলাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সেটা পারিনি। আর সেটা আমাদের দলের জন্য অনেক বড় ধাক্কা ছিল।’ মাশরাফি মনে করেন দ্রুতই দলে ফিরবেন দু’জন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আশা করছি সে দ্রুতই ফিরবে। তাসকিনের মতো বোলারকে হারানোটা বিরাট ক্ষতি দলের জন্য। তবে আরাফাত সানি নিজেও জানে ওর সমস্যাটা। আমার আশা, সেও তাড়াতাড়ি নিজেকে শুধরেই ফিরবে।’ সেমিফাইনালের লক্ষ্য নিয়ে ভারতে পা রেখেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। কিন্তু ছোট ছোট কিছু অর্জন ছাড়া সুপার টেন পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছে বাংলাদেশ দল। শনিবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষের ম্যাচটি ছিল শুধুই আনুষ্ঠানিকতা। কিন্তু সে ম্যাচটিতেই হয়েছে এ আসরের সবচেয়ে খারাপ অভিজ্ঞতা। ভালমন্দ অভিজ্ঞতা নিয়েই নিজের দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ দল। কিন্তু দলের সার্বিক নৈপুণ্য নিয়ে মাশরাফি বলেন, ‘আমরা টি২০ ক্রিকেটেও এগিয়ে গেছি অনেকখানি। অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের বিরুদ্ধে যেমন খেলেছি সেটাই তার প্রমাণ। এই বিশ্বকাপ শেষে সবার মধ্যে এই আত্মবিশ্বাস এসেছে যে সামর্থ্য অনুসারে খেলতে পারলে টি২০ ক্রিকেটেও আমরা যে কোন দলকে হারাতে সক্ষম। সব মিলিয়ে ভাল ছিল। শেষের দুটো ম্যাচ ছাড়া। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটা নিয়ে আমরা হতাশ। এছাড়া বেশ কিছু ইতিবাচক ব্যাপার ছিল। সেগুলোই আমাদের সামনে ভাল করতে সাহায্য করবে।’ দলে অলরাউন্ডার নাসির হোসেন থাকা সত্ত্বেও তাকে না খেলানোর বিষয়টি একটি আশ্চর্যবোধক চিহ্নের জন্ম দিয়েছে দলকে নিয়ে। এশিয়া কাপের স্কোয়াডে তিনি থাকলেও খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন কেবল ফাইনালে। এরপর বিশ্বকাপেও একই অবস্থা। এক হল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ খেলেছেন, এছাড়া গোটা টি২০ বিশ্বকাপেই বেঞ্চে বসে কাটিয়েছেন। অবশ্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলছেন, মূলত শৃঙ্খলাজনিত কারণেই একাদশের বাইরে ছিলেন নাসির। এ বিষয়ে মাশরাফি বলেন, ‘সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, কেমন দল হবে। এটা কারও একক সিদ্ধান্ত নয়। নাসিরকে খেলানো হয়নি টিম কম্বিনেশন ঠিক রাখতেই। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি নাসির দুর্দান্ত একজন খেলোয়াড়। আশা করব, সে নিজের খেলাটাকে আরও উন্নত করবে। বাংলাদেশ দলকে সে আরও অনেকদিন সেবা দেবে বলেই বিশ্বাস আমার।’
×