ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জামায়াত-শিবিরের নাশকতা, নৈরাজ্যের নতুন ছক

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ২৮ মার্চ ২০১৬

জামায়াত-শিবিরের নাশকতা, নৈরাজ্যের নতুন ছক

শংকর কুমার দে ॥ দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে নাশকতা ও নৈরাজ্যের ছক কষে তৎপরতা শুরু করেছে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি জামায়াত-শিবির। সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেয়ার প্রতিবাদের নামে সোমবার দেশব্যাপী যে হরতাল ডেকেছে এর নেপথ্য থেকে তাদের মদদ দিচ্ছে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে তাদের এ তৎপরতায় ইন্ধন যোগাচ্ছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটসহ উগ্র মৌলবাদী ধর্মান্ধ দল ও বিভিন্ন জঙ্গীগোষ্ঠী। যুদ্ধাপরাধীর মামলা, রায়, ফাঁসি কার্যকর করার কোন ইস্যুতেই নাশকতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির মাধ্যমে সুবিধা করতে না পেরে এখন আবার ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে ফের অপতৎপরতায় লিপ্ত হচ্ছে জামায়াত-শিবির। সরকারের ওপর মহল থেকে জামায়াত-শিবিরের ডাকা হরতালের নামে নাশকতা ও নৈরাজ্যের পরিকল্পনা কঠোর হস্তে দমন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে এ ধরনের তথ্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়Ñ দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে বিভিন্ন সময়ে জঙ্গী সংগঠন আইএস, আল কায়েদা, জেএমবি, হরকাতুল জিহাদ, আনসারুল্লাহ বাংলা টিমসহ জঙ্গী সংগঠনগুলোর নাম ব্যবহার করে আসছে জামায়াত-শিবির। ভিন্ন মতাবলম্বী মসজিদ, মন্দির, উপাসনালয়ে হামলা, হত্যা, পেট্রোলবোমা সন্ত্রাস চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে আবার তারা নতুন করে নাশকতা ও নৈরাজ্যের ছক কষেছে। চোরাগোপ্তা হামলা, গুপ্তহত্যা, স্পর্শকাতর স্থানে হামলা, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের হত্যার টার্গেট করে ছক কষেছে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বেশ কয়েকটি এলাকাকে টার্গেট করা আছে তাদের পরিকল্পনায়। যুদ্ধাপরাধের বিচারের রায় ফাঁসি কার্যকর বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে তাদের অন্যতম ও মূল টার্গেট। তাদের নাশকতার ছক বাস্তবায়নে নিষিদ্ধঘোষিত বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যদের কাজে লাগানো হচ্ছে বলে তথ্য পেয়েছে সরকারের সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থা। গোয়েন্দা সংস্থার সূত্র জানায়, সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে তাদের অপ্রকাশ্য গোষ্ঠী জেএমবি-আনসারুল্লাহ বাংলা টিম এক হয়েছে, এরাই একগোষ্ঠী। দেশে আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠন আইএসের অস্তিত্ব না থাকলেও বার বার অঘটন ঘটিয়েই দ্রুততার সঙ্গে এ সংগঠনটির নাম ব্যবহার করে বিদেশী রাষ্ট্র ও শক্তির দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করে যাচ্ছে জামায়াত-শিবির। আবারও রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের নামে হরতাল ডেকে যুদ্ধাপরাধীর বিচারের রায় ফাঁসি ঠেকাতে তারা মানুষজনকে বিভ্রান্ত করতে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের পরিকল্পনা নিয়েছে। এজন্য সকাল-সন্ধ্যা দেশব্যাপী হরতালের নামে কর্মসূচী দিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে হুঙ্কার ও হুঁশিয়ারি দিয়েছে জামায়াত-শিবির। গোয়েন্দা সংস্থার একজন কর্মকর্তা বলেন, জামায়াতÑশিবিরের পরিকল্পনা রুখতে রাজধানী ঢাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন এলাকা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দ সংস্থা। এসব এলাকায় জামায়াত-শিবির যে নাশকতার ছক তৈরি করেছে, তা প্রতিহত করতে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় নাশকতার অভিযোগে জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসীরা ধরাও পড়ছে। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে পাকিস্তানের গোয়েন্দ সংস্থা আইএসআইয়ের অর্থ যোগানসহ মদদদান সংক্রান্ত বেশকিছু তথ্য উদ্ধার করা হয়েছে। জামায়াত-শিবির নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকেও এ ধরনের তথ্য উদ্ধার করা হয়েছে। নাশকতা ও নৈরাজ্য কঠোর হস্তে দমন করাসহ গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে।
×