ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা অর্থদ-, অনাদায়ে ৭ দিনের কারাদ- ;###;বিষয়টি নৈতিকতা সংশ্লিষ্ট, মন্ত্রিত্ব থাকবে কিনা সে সিদ্ধান্ত নেবে মন্ত্রিপরিষদÑ এ্যাটর্নি জেনারেল ;###;দুই মন্ত্রীর শুধু অর্থদ- হয়েছে এতে উনাদের কিছুই হবে না, এ্যাটর্নি জেনারেল যা বলেছেন তা ঠিক

দুই মন্ত্রীর জরিমানা ॥ আদালত অবমাননা

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ২৮ মার্চ ২০১৬

দুই মন্ত্রীর জরিমানা ॥ আদালত অবমাননা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আদালত অবমাননার দায়ে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হককে দোষী সাব্যস্ত করেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা অর্থদ- দিয়েছে আপীল বিভাগ। তাদের সাত দিনের মধ্যে জরিমানার টাকা ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতাল ও লিভার ফাউন্ডেশনকে দিতে হবে। জরিমানা অনাদায়ে সাত দিনের কারাদ- ভোগ করতে হবে। নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে আদালত অবমাননার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চেয়ে করা দুই মন্ত্রীর আবেদন নামঞ্জুর করে সর্বোচ্চ আদালত রায় দিয়েছে। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপীল বিভাগের আট সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ রবিবার এ আদেশ প্রদান করেছেন। গত ৫ মার্চ ঢাকায় ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির এক গোলটেবিল আলোচনায় জামায়াত নেতা মীর কাশেমের মামলার রায়ের আগে বিচারপ্রক্রিয়া সম্পর্কে মন্তব্য করায় তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হয়। এদিকে আদেশের পর আবদুল বাসেত মজুমদার রিভিউ প্রসঙ্গে মক্কেলদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন। আপীল বিভাগের আদেশের পর এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, আদালত অবমাননার দায়ে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার পর দুই মন্ত্রীর মন্ত্রিত্ব থাকবে কিনাÑ সে বিষয়টি ‘নৈতিকতার সঙ্গে জড়িত ও মন্ত্রিপরিষদ সিদ্ধান্ত নেবে।’ অন্যদিকে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, নৈতিকতার বিষয় থাকায় তাদের অবিলম্বে মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করা উচিত। যদি তারা পদত্যাগ না করেন তবে প্রধানমন্ত্রীর উচিত তাদের মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে নেয়া। সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যরিস্টার শফিক আহমেদ জনকণ্ঠকে বলেছেন, সংবিধানের ৬৬ ধারায় বলা আছেÑ যদি কেউ ফৌজদারি মামলায় ২ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হন তাহলে তার মেম্বারশিপ চলে যাবে। এখানে দুই মন্ত্রীর শুধু অর্থদ- হয়েছে। এতে উনাদের কিছুই হবে না। উনি কেন, যে কোন মন্ত্রীর বেলাতেই হবে না। এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রীর ওপর। তিনি আরও বলেন, এ্যাটর্নি জেনারেল যা বলেছেন তাও ঠিক নয়। কেবিনেট কেন সিদ্ধান্ত নেবে। আদালত অবমাননার দায়ে দুই মন্ত্রীর জরিমানা হওয়ার আগে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, অবমাননার দায়ে মন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মোজাম্মেল হককে অর্থদ- দিয়ে আদালতের মর্যাদা ক্ষুণেœর বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার বার্তা দেয়া হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ আবারও না ঘটে। জাতি জানুক, সর্বোচ্চ আদালত কত কঠোর হতে পারে। টাকার খেলা কোন্ দিকে হয়েছে তা রায়ে আসবে। আদালত তার আদেশে আরও জানায়, দুই মন্ত্রী নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে এবং অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চেয়ে যে আবেদন করেছেন তা আমরা গ্রহণ করতে রাজি নই। আবেদনকারীরা মন্ত্রী, সাংবিধানিক পদধারী। তারা সংবিধান রক্ষার শপথবদ্ধ। তারা যে মন্তব্য করেছেন, প্রধান বিচারপতি ও সর্বোচ্চ আদালতকে অবমাননা করে তারা যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা আমাদের কাছে উদ্দেশ্যমূলক বলে মনে হয়েছে। রবিবার সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে আদালতে মামলার শুনানি উপলক্ষে উপস্থিত হন খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তাদের উপস্থিতিতে সকাল ৯টা ২৭ মিনিটে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে ৮ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে মামলার শুনানি শুরু হয়। এ সময় দুই মন্ত্রী দাঁড়ালে প্রধান বিচারপতি তাদের বসতে বলেন। শুরুতেই সিনিয়র আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদার খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের পক্ষে নিঃশর্ত ক্ষমার আবেদন করেন। এরপর বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিয়া এ্যাটর্নি জেনারেলকে দুই মন্ত্রীর বক্তব্য সংবলিত দৈনিক জনকণ্ঠের প্রতিবেদনটি পড়তে বলেন। এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম পত্রিকায় প্রকাশিত দীর্ঘ সেই প্রতিবেদনটি পড়ে শুনান। পরে প্রধান বিচারপতি বক্তব্য নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন। এরপর সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটের দিকে আদালতের কার্যক্রম ১০ মিনিটের জন্য মুলতবি করে বিচারপতিরা খাস কামরায় যান। সেখান থেকে ১০টা ২০ মিনিটের দিকে বিচারপতিরা আবার এজলাসে বসেন। এরপর দুই মন্ত্রীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে রায় দেন। জরিমানার অর্থ ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতাল ও লিভার ফাউন্ডেশনে দিতে বলেছে আদালত। অর্থ দিতে ব্যর্থ হলে তাদের সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদ- ভোগ করতে হবে। যুদ্ধাপরাধী মীর কাশেমের আপীল মামলার রায় নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতিকে জড়িয়ে বক্তব্য দিয়েছিলেন দুই মন্ত্রী। ওই বক্তব্যের জন্যই আদালত তাদের অবমাননার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করেছে। দুই মন্ত্রী ক্ষমা চেয়ে আদালতে আবেদন করার পর গত ২০ মার্চ শুনানিতে প্রধান বিচারপতি বলেছিলেন, দুই মন্ত্রীর বক্তব্য ঔদ্ধত্যপূর্ণ। তারা সর্বোচ্চ আদালতের অবমাননা করেছেন। সংবিধান রক্ষার শপথ নিয়ে তা ভঙ্গের পরিণাম কী হওয়া উচিতÑ তাও তিনি জানতে চেয়েছিলেন দুই মন্ত্রীর আইনজীবীর কাছে। রবিবার রায়ের আগে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা উচ্চ আদালতের বিচারকরা সব কিছু পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিবেচনা করেছি। প্রতিবেদনে (দুই মন্ত্রী যে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিয়েছিলেন, সেই অনুষ্ঠান নিয়ে গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন) অনেকের নাম এসেছে। সবার নামে আমরা প্রসিডিংস ড্র করিনি। প্রকৃতপক্ষে কনটেম্পট নিয়ে আমরা বাড়াবাড়ি করতে চাইনি। ‘দুই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কনটেম্পট প্রসিডিংস ড্র করা হয়েছে একটি বার্তা পৌঁছে দেয়ার জন্য।’ আদালতের মর্যাদা কোনভাবেই ক্ষুণœ করা উচিত নয়Ñ এ বিষয়টি যাতে দুই মন্ত্রীর সাজার মধ্য দিয়ে দেশের মানুষ বুঝতে পারেÑ সেই বার্তাই আপীল বিভাগ দিতে চেয়েছে বলে আদেশের পর সাংবাদিকদের জানান এ্যার্টনি জেনারেল মাহবুবে আলম। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশে আদালত অবমাননার দায়ে কোন মন্ত্রীর সাজা এই প্রথম নয়। ‘আমার যতদূর মনে পড়ে, হাবিবুল্লাহ খান নামে একজনের সাজা হয়েছিল। তিনি ছিলেন এইচ এম এরশাদ সরকারের মন্ত্রী।’ গত ৫ মার্চ ঢাকায় ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির এক গোলটেবিল আলোচনায় কামরুল ইসলাম বলেন, যুদ্ধাপরাধী মীর কাশেম আলীর আপীল মামলার শুনানিতে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসকিউশন দলের কাজ নিয়ে প্রধান বিচারপতির অসন্তোষ প্রকাশের মধ্য দিয়ে ‘রায়েরই ইঙ্গিত’ মিলছে। রায় নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতিকে বাদ দিয়ে নতুন বেঞ্চে পুনঃশুনানির দাবি তোলেন সরকারের এই মন্ত্রী। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হকও প্রধান বিচারপতির মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান। এর তিন দিনের মাথায় আপীল বিভাগ জামায়াত নেতা মীর কাশেমের আপীলের যে রায় দেয়, তাতেও মৃত্যুদ- বহাল থাকে। ওই রায় ঘোষণার আগে পুরো আপীল বিভাগকে নিয়ে বসে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা দুই মন্ত্রীকে তলবের আদেশ দেন। দুই মন্ত্রীর দেয়া যে বক্তব্য সংবাদমাধ্যমে এসেছে তা বিচার প্রশাসনের ওপর হস্তক্ষেপ এবং সুপ্রীমকোর্টের সম্মান ও মর্যাদাকে হেয় করার শামিল বিবেচনা করে আদালত অবমাননার রুল জারি হয় তাদের বিরুদ্ধে। মীর কাশেমের আইনজীবী সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন এবং বিএনপি নেতারা মন্ত্রীদের বক্তব্যকে ‘ঔদ্ধত্যপূর্ণ’ আখ্যায়িত করে বলেন, এটা বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ। রবিবার শুনানির একপর্যায়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, আপনারা তো সাংবিধানিক পদ ধারণ করেন। আপনারা কেন এ বিষয়ে মন্তব্য করলেন? ‘স্বাধীনতার পর তিনজন এ্যাটর্নি জেনারেল পেয়েছে এ দেশ, যারা খুবই সৎভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। তারা হলেনÑ মাহমুদুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম এবং বর্তমান এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।’ প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, দুই মন্ত্রীর আদালত অবমাননা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়েই দেখা মিলবে টাকার খেলা কোন দিকে হয়েছে। রায়ের আগে প্রধান বিচারপতি বলেন, উচ্চ আদালতের সব বিচারক পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তাদের বক্তব্য শুনেছেন। এ অভিযোগটি আমরা বিচার বিশ্লেষণ করেছি। জনকণ্ঠ পত্রিকায় যাদের নাম এসেছে আমরা তাদের সবাইকে ডাকিনি। অনেকে বক্তব্য দিয়েছেন, নানা দিক বিবেচনায় নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেইনি। প্রকৃতপক্ষে আদালত অবমাননা নিয়ে আমরা বাড়াবাড়ি করতে চাই না। তিনি আরও বলেন, এই দুই মন্ত্রীর সাংবিধানিক দায়দায়িত্ব রয়েছে। আজকে এই দুজনের ব্যাপারে রায় দেয়া হলো। এর মাধ্যমে দেশবাসী একটা বার্তা পাবে। এরপর বাসেত মজুমদার বলেন, দুঃখিত জনকণ্ঠের রিপোর্ট আমি পড়িনি। এরপর বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিয়া বলেন, আমরা প্রতিবেদনটি পড়লাম এ কারণে যে, তারা যা বলেছেন তা সবার জানা দরকার। প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, টাকার খেলা কোন দিকে হয়েছে তা রায়ে আসবে। প্রধান বিচারপতির এ বক্তব্য প্রসঙ্গে এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ‘আমি যতটুকু বুঝতে পেরেছি আদালত প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থার ওপর চরমভাবে ক্ষুব্ধ। তবে রায়ের কপি পেলেই এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।’ পরে রায়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ক্ষমা চেয়েছেন। কিন্তু আদালত তাদের ক্ষমার আবেদন গ্রহণ করতে অপারগ। তারা সংবিধান রক্ষার শপথ নিয়েছেন। কিন্তু যে ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন তাতে প্রধান বিচারপতির দফতর ও বিচার বিভাগকে হেয়প্রতিপন্ন করেছেন। বিচার বিভাগকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন। তাই তাদের আবেদন খারিজ করা হলো। শুরুতেই তারা নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করায় তাদের সাজা দেয়ার ক্ষেত্রে নমনীয় দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছি। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। আদালতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর পক্ষে ব্যারিস্টার রফিক-উল হক ও খাদ্যমন্ত্রীর পক্ষে আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদার শুনানিতে অংশ নেন। তাদের সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এস এম আবুল হোসেন ও সৈয়দ মামুন মাহবুব। এ্যাটর্নি জেনারেল ॥ আদালত অবমাননার দায়ে ৫০ হাজার করে টাকা জরিমানার পর দুই মন্ত্রীর মন্ত্রিত্ব থাকবে কি-না, তা ‘নৈতিকতার সঙ্গে জড়িত ও মন্ত্রিপরিষদ সিদ্ধান্ত নেবে’ বলে মন্তব্য করেছেন এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগের আদেশের পর রবিবার সকালে এ্যাটর্নি জেনারেলের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। মন্ত্রী পদ থাকবে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে মাহবুবে আলম বলেন, ‘এটি এ মুহূর্তে আমার পক্ষে বলা সম্ভব নয়। সংবিধানে এ ব্যাপারে বিস্তারিত আছে বলে মনে হয় না। তবে বিষয়টি নৈতিকতার সঙ্গে জড়িত। তাদের মন্ত্রিত্ব রাখবেন কি-না, তার সিদ্ধান্ত নেবে মন্ত্রিসভা।’ আদালতের আদেশের বিষয়ে মাহবুবে আলম বলেন, ‘দুইজন মন্ত্রী নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছিলেন। আদালত সংক্ষিপ্ত আদেশে বলেছেনÑ অপরাধের গুরুত্ব এতটা বেশি, ক্ষমা প্রার্থনা করে তারা যে দরখাস্ত দিয়েছেন, তা গ্রহণ করে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।’ খন্দকার মাহবুব হোসেন ॥ আদালত অবমাননার দায়ে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের লাখ টাকা জরিমানা হওয়ার পর সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, দুই মন্ত্রীর গাড়িতে স্বাধীন দেশের মানুষ পতাকা দেখতে চায় না। যদি তাদের গাড়িতে এই পতাকা থাকে তাহলে দেশের মানুষ লজ্জা পাবে। রবিবার সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। খন্দকার মাহবুব বলেন, দুইজন মন্ত্রী যে ভাষায় প্রধান বিচারপতি ও আপীল বিভাগের বিচারকদের নিয়ে ‘জঘন্য’ মন্তব্য করেছেন, এরপর তারা গাড়িতে জাতীয় পতাকা নিয়ে রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এটি দেশের জন্য মঙ্গলজনক নয়। তাদের মন্ত্রী পদে বহাল থাকা মোটেও উচিত নয়। শপথ ভঙ্গের অপরাধে সর্বোচ্চ আদালত দোষী সাব্যস্ত করে দুই মন্ত্রীকে সাজা দিয়েছে। নৈতিকতার বিষয় থাকায় তাদের অবিলম্বে মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করা উচিত। যদি তারা পদত্যাগ না করেন তবে প্রধানমন্ত্রীর উচিত তাদের মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে নেয়া।
×