ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

আইএসবিরোধী লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে অর্থ ও সৈন্য দিতে হবে

সৌদি থেকে তেল কেনা বন্ধের হুমকি ট্রাম্পের

প্রকাশিত: ০৩:২৫, ২৮ মার্চ ২০১৬

সৌদি থেকে তেল কেনা বন্ধের হুমকি ট্রাম্পের

মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে রিপাবলিকান পার্টির প্রধান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, নির্বাচিত হলে তিনি সৌদি আরব ও অন্যান্য আরব মিত্রের কাছ থেকে তেল কেনা বন্ধ করে দিতে পারেন, যে পর্যন্ত না তারা ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে স্থল সৈন্য যোগান দেয় বা ঐ জঙ্গী দলটির বিরুদ্ধে লড়াই চালানো বাবদ যুক্তরাষ্ট্রকে উল্লেখযোগ্যভাবে অর্থ সরবরাহ করে। জঙ্গী দলটি ঐসব দেশের স্থিতিশীলতার প্রতি হুমকির সৃষ্টি করেছে। খবর নিউইয়র্ক টাইমস অনলাইনের। ট্রাম্প বলেন, যদি সৌদি আরব আমেরিকার নিরাপত্তা-বলয়ের বাইরে থাকত, তবে সেটি টিকে থাকত বলে আমি মনে করি না। তিনি শুক্রবার টেলিফোনে পররাষ্ট্র নীতি নিয়ে ১০০ মিনিটের এক সাক্ষাতকার দিচ্ছিলেন। তিনি আরও বলেন, তিনি উত্তর কোরিয়া ও চীনের বিরুদ্ধে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াকে আত্মরক্ষার্থে আমেরিকার পরমাণু ব্যুহের ওপর নির্ভর করার চেয়ে বরং তাদের নিজস্ব পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে দিতে ইচ্ছুক থাকবেন। তিনি বলেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র এর পথেই, এর বর্তমান দুর্বল পথেই চলতে থাকে, তাহলে তারা আমাদের সঙ্গে কথা বলে বা না বলেই যে কোনভাবেই সেই অস্ত্র পেতে চাইবে। ট্রাম্প এ কথাও বলেন, যদি জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া উভয়ই মার্কিন সৈন্যদের গৃহসংস্থান ও ভরণ-পোষণের ব্যয় মেটানোর ক্ষেত্রে তাদের অর্থ-সহায়তা উল্লেখযোগ্যভাবে না বাড়ায়, তাহলে তিনি উভয় দেশ থেকে ঐ সৈন্যদের সরিয়ে নিতে ইচ্ছুক হবেন। তিনি বলেন, সুখদায়ক নয়, কিন্তু উত্তর বলো হ্যাঁ সূচক। ট্রাম্প আরও বলেন, তিনি সম্ভবত জাপানের সঙ্গে ৫৬ বছর ধরে চালু থাকা নিরাপত্তা চুক্তিসহ আমেরিকান মিত্রদের সঙ্গে স্বাক্ষরিত অনেকগুলো মৌলিক চুক্তি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু করতে চাইবেন। তিনি এসব চুক্তিকে একপেশে বলে বর্ণনা করে। বিশ্ব সম্পর্কে ট্রাম্পের ধারণায় যুক্তরাষ্ট্র এক নিষ্প্রভ ব্যক্তিকে পরিণতও হয়েছে। তিনি প্রদানত অর্থনৈতিক দর কষাকষির মাধ্যমেই বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূমিকা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চান। গত বছর ওবামা প্রশাসন ইরানের সঙ্গে যেভাবে আলোচনা সম্পন্ন করেন, ট্রাম্প আরও সমালোচনা করেন, কিন্তু তিনি কিভাবে ইরান চুক্তির বিষয়বস্তু বদলাবেন সেই সম্পর্কে কেবল এক নতুন ধারণাই দেন এবং তা হলো উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে ইরানের বাণিজ্য নিষিদ্ধ করা। ন্যাটোর ভবিষ্যত নিয়ে আলোচনা করতে গিয়েও ট্রাম্প একই সুরে কথা বলেন। তিনি ন্যাটোকে আমেরিকার প্রতি অর্থনৈতিক দিক দিয়ে পক্ষপাতিত্বমূলক বলে বর্ণনা করেন। তিনি যুক্তি দেখান যে, দক্ষিণ চীন সাগরে পুনরুদ্ধার করা দ্বীপগুলোতে সামরিক বিমানবন্দর নির্মাণ এবং বিমান-বিধ্বংসী ব্যাটারি মোতায়েন করা থেকে চীনকে বিরত রাখার সর্বোত্তম পথ হলো চীনকে আমেরিকান বাজারে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না বলে হুমকি দেয়া। চীনের ওপর আমাদের বিশাল অর্থনৈতিক ক্ষমতা রয়েছে বলে তিনি যুক্তি দেন। আর সেটি হলো বাণিজ্যের ক্ষমতা। তিনি বেজিংয়ের অর্থনৈতিক প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষমতা সম্পর্কে কোন কিছু বলেননি। ট্রাম্পের ধ্যান ধারণাকে সংক্ষেপে আমেরিকা ফার্স্ট বলা যেতে পারে এমন অভিমতের সঙ্গে তিনি একমত হন। তিনি বলেন, আমি বিচ্ছিন্ন থাকার পক্ষপাতী নই, কিন্তু আমি আমেরিকা ফার্স্ট। আমি একথাটি পছন্দ করি। তিনি বলেন যে, যদি অংশীদাররা বিশ্বে আমেরিকান বাহিনীর উপস্থিতির ব্যয়ের জন্য নগদ অর্থ বা সৈন্য সরবরাহ করতে ইচ্ছুক না হয়, তবে তিনি পুরনো আমেরিকান মৈত্রী চুক্তিগুলোর বিষয়ে পুনর্বিবেচনা করতে ইচ্ছুক। আমরা আর ঠকতে চাই না বলে তিনি মন্তব্য করেন।
×