ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রংপুর সুপার মার্কেটে ফাটল ॥ ধসের শঙ্কা

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ২৭ মার্চ ২০১৬

রংপুর সুপার মার্কেটে ফাটল ॥ ধসের শঙ্কা

স্টাফ রিপোর্টার, রংপুর ॥ বিভাগের সর্ববৃহৎ জেলা পরিষদ সুপার মার্কেটের পূর্ব-দক্ষিণাংশের একটা বড় অংশের পিলারগুলোতে ভয়ানক ফাটল দেখা দিয়েছে। মার্কেটের ব্যবসায়ীরা বর্তমানে গাছের গুঁড়ি ও বাঁশ দিয়ে কোন রকমে ছাদ ধসা ঠেকাবার চেষ্টা চালালেও যে কোন সময় ধসে পড়ে ঘটতে পারে রানা প্লাজার মতো ভয়ানক কোন দুর্ঘটনাসহ প্রাণহানির ঘটনাও। এ অবস্থার মাঝেও মার্কেটের ক্রেতা এবং দোকান কর্মচারীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে বলে জানালেও মার্কেট সমিতির নেতৃবৃন্দ বলছেন, অচিরেই সংস্কার কাজ শুরু করার কথা। অন্যদিকে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ বলছে, পরিস্থিতি সামাল দিতে স্থানীয়ভাবে তাদের করার কিছুই নেই। তারা বিশেষজ্ঞ দল চেয়ে ঢাকায় উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন। তবে এ জন্য সময় লেগে যেতে পারে দুই থেকে তিন মাস। শুধু তাই নয়, এ নিয়ে মার্কেট কর্তৃপক্ষ এবং জেলা পরিষদ দু’পক্ষই একে অপরকে দোষারোপ করছেন। সরেজমিন দেখা গেছে, ওই মার্কেটের পূর্ব-দক্ষিণাংশের অন্তত সাতটি পিলার ফুলে ফেঁপে উঠেছে। দেখা দিয়েছে বড় ফাটলেরও। এছাড়াও মার্কেটের পেছনে জেলা পরিষদেরই উদ্যোগে আরেকটি ১৮ তলাবিশিষ্ট অত্যাধুনিক মার্কেট নির্মাণ কাজ চলছে। বর্তমানে এর ভিত্তির পাইলিংয়ের কাজ চলার কারণে প্রায়ই কেঁপে উঠছে এ সুপার মার্কেটটি। জানা গেছে, ১৯৮৬ সালে মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র নবাবগঞ্জ বাজারের পশ্চিমদিকে গড়ে ওঠে তিনতলা ফাউন্ডেশনের উপর দোতলা জেলা পরিষদ সুপার মাকেটটি। পরবর্তীতে ’৯০ সালে নির্মিত হয় তৃতীয়তলা। এই তৃতীয় তলাসহ মূল মার্কেটটিতে রয়েছেÑ তৈরি ও কাটা কাপড়, কসমেটিক্স, খেলাধুলার সামগ্রী, ইলেক্ট্রনিক্সসহ বিভিন্ন আইটেমের ৩শ’ ৫০টি দোকান। এসব দোকানে গড়ে অন্তত ৪ জন করে স্টাফ নিয়ে ১৩শ’ জন স্টাফসহ প্রতিদিন অন্তত ৫ থেকে ৬ হাজার মানুষের পদচারণায় মুখরিত থাকে মার্কেটটি। এদের সকলেই এখন চরম আতঙ্কে মার্কেটে কেনাকাটা করছেন। দোকান কর্মচারীরা বলছেন, পেটের তাগিদে বর্তমানে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই কাজ করতে হচ্ছে তাদের। তারা চাইছেন দ্রুত এর সংস্কার। অন্যদিকে মার্কেট কমিটির সহসভাপতি মোঃ এমদাদুল হক ও সভাপতি মোঃ জাবেদ হোসেন জুয়েল জানান, নির্মাণকালে ত্রুটিপূর্ণ কাজের কারণেই মাত্র ৩০ বছর বয়সেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে তারা এ বিষয়ে পত্রিকায় রিপোর্ট না করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, এ বিষয়ে রিপোর্ট হলে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হবে এবং মাকের্টে ক্রেতাদের আসা-যাওয়া কমে যাবে। তারা জানান, বিষয়টি নিয়ে তারা জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন। দুই-এক দিনের মধ্যেই সংস্কার কাজ শুরু হবে। আর ক্রেতা এবং কর্মচারীরা প্রশ্ন তুলেছেন, ক্রেতা কমে যাবে সেটা বড় প্রশ্ন? নাকি প্রাণহানি ঘটতে পারে সেটি বড়? অন্যদিকে রক্ষণাবেক্ষণকারী জেলা পরিষদের সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী এ জেড এম আহছান উল্লা জানান, মার্কেটটি আসলে তিনতলা ভিত্তির উপর নির্মিত। কিন্তু ব্যবসায়ীরা তাদের অবহিত না করেই চতুর্থ তলায় নামাজ ঘর ও টয়লেট বানিয়েছে। এই টয়লেটের পানিতেই ওই অংশটুকু স্যাঁতস্যাঁতে হওয়ায় এ ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। তিনি জানান, এ বিষয়ে স্থানীয়ভাবে তাদের করার কিছুই নেই। তাই তারা বিশেষজ্ঞ টিম চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন। বিশেষজ্ঞ দলের মতামতের প্রেক্ষিতেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×