ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মংলা বন্দরে পিপিপি ভিত্তিতে দুটি জেটি নির্মাণের উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৬:০০, ২৭ মার্চ ২০১৬

মংলা বন্দরে পিপিপি ভিত্তিতে দুটি  জেটি নির্মাণের উদ্যোগ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ মংলা বন্দর আরও কার্যকর করে তুলতে সরকারী-বেসরকারী অংশীদারিত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে দুটি জেটি উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এই জেটি দুটি হলো ৩ ও ৪ নম্বর। জেটি নির্মাণে প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২ দশমিক ৭৫ মিলয়ন ডলার। প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে জিএমএপিএস-পাওয়ার পিসি কনসোর্টিয়াম। প্রায় চার দশক আগে একটি বিদেশী ঠিকাদার কোম্পানি কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে বন্দরের ৩ ও ৪ নম্বর জেটি দু’টি উন্নয়ন শুরু করলেও নানা কারণে সেসময় প্রকল্পটি পরিত্যক্ত হয়ে যায়। দীর্ঘদিন পড়ে থাকার পর বর্তমান সরকার জেটি দুটির কাজ আবার শুরু করার উদ্যোগ নিয়েছে। বিশেষ করে পদ্মাসেতু নির্মাণ শেষ হলে মংলা বন্দরের গুরুত্ব কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। এছাড়া ভবিষ্যতে বন্দরে আমদানি-রফতানি করা পণ্যের চাপ সামলাতে বন্দরের সংরক্ষিত এলাকায় ১০ ও ১১ নম্বর জেটি দু’টিকে হাই মালটি পারপাস জেটি নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। মাওয়া সেতু নির্মাণ কাজ সমাপ্তের পর পরই মংলা বন্দরে পণ্য পরিবহনের চাপ সামলাতে মংলা-ঢাকা সড়ককে চার লেন সড়ক তৈরির প্রস্তাাব দিয়েছে মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দরের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মংলা বন্দর উন্নয়নের জন্য বর্তমান সরকার অগ্রাধিকার ও বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। বন্দর উন্নয়নের জন্য এ সরকারের আমলে ৫শ’ ৫১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ৮টি উন্নয়ন প্রকল্প ও ৪টি উন্নয়ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন কাজ হাতে নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৫টি উন্নয়ন প্রকল্প এবং ৪টি উন্নয়ন কর্মসূচী সমাপ্ত হয়েছে এবং ৩টি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন আছে। সূত্র জানায়, প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় রিকোয়েস্ট ফর কোয়লিফিকেশন (আরএফকিউ) আহ্বান করলে তিনটি প্রতিষ্ঠান এতে সাড়া দেয়। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে ইউনাইটেড এন্টারপ্রাইজ এ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড (ইউইসিএল) কনসোর্টিয়াম অব সামিট এ্যালায়েন্স পোর্ট লিমিটেড এ্যান্ড সামিট পাওয়ার লিমিটেড (এসএপিএল-এপিএল) এবং জিএমএপিএস-পাওয়ার পিসি কনসোর্টিয়াম। এরমধ্যে কারিগরি যাচাই কমিটি (টিইসি) জিএমএপিএস-পাওয়ার পিসি কনসোর্টিয়ামের কনসেশন এ্যাগ্রিমেন্ট চূড়ান্ত করে। এই এ্যাগ্রিমেন্টে নীতিগত অনুমোদনের জন্য আগামী বুধবার অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে উপস্থাপন করা হতে পারে। সূত্র জানায়, প্রকল্পের কনসেশন সময় ধরা হয়েছে ৩০ বছর। এরমধ্যে ২ বছর নির্মাণ কাজে ব্যয় হবে। প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বন্দরের জাহাজের আগমন প্রায় ৫০ ভাগ বাড়বে। এর ফলে প্রথম পাঁচবছর প্রকল্পের জেটি পাবে ৩৯ দশমিক ২ শতাংশ আর বন্দরের জেটি পাবে ৬০ দশমিক ৮ শতাংশ। দ্বিতীয় পাঁচ বছর প্রকল্পের জেটি পাবে ২৯ দশমিক ৪ শতাংশ এবং বন্দরের জেটি পাবে ৭০ দশমিক ৬ শতাংশ। পরের ১৮ বছর প্রকল্পের জেটি পাবে ২৪ দশমিক ৫ শতাংশ এবং বন্দরের জেটি পাবে ৭৫ দশমিক ৫ শতাংশ। এ ছাড়া ফিক্সড রয়ালিটি হিসেবে মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রথম বছর পাবে দুই লাখ ডলার যা পরবর্তী বছরগুলোতে পূর্ববর্তী বছরগুলো থেকে দুই শতাংশ হারে বাড়তে থাকবে। ভ্যারিয়েবল রয়ালিটি হিসেবে কন্টেনার হ্যান্ডলিংয়ের জন্য মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ কন্টেনার প্রতি দুই ডলার এবং প্রতিটন কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের জন্য ২০ সেন্ট পাবে।
×