ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

একাত্তরের গণহত্যা আন্তর্জাতিক দলিলে স্বীকৃত না হওয়া দুঃখজনক ॥ সংস্কৃতিমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৬:২৯, ২৫ মার্চ ২০১৬

একাত্তরের গণহত্যা আন্তর্জাতিক দলিলে স্বীকৃত না হওয়া দুঃখজনক ॥ সংস্কৃতিমন্ত্রী

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ সাম্প্রতিক সময়ে গণহত্যাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ হলেও একাত্তর সালে পাকিস্তানী বাহিনীর গণহত্যা অন্তর্জাতিক দলিলে স্বীকৃত না হওয়াকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণহত্যা গবেষণা কেন্দ্র আয়োজিত এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। ঢাবি কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক কামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন, গণহত্যা গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন বক্তব্য রাখেন। এ সময় আসাদুজ্জামান নূর বলেন, দুঃখজনক হচ্ছে আমাদের গণহত্যার বিষয়টি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দলিলে স্বীকৃত নয়। এমনকি সিপিপিসিজির (কনভেনশন অন দ্য প্রিভেনশন এ্যান্ড পানিশমেন্ট অফ দ্য ক্রাইম অব জেনোসাইড) প্রারম্ভিকায় বলা হয়েছে, গণহত্যা আন্তর্জাতিক আইনের বিরোধী এবং জাতিসংঘের মূল মর্ম ও লক্ষ্যের বিরোধী তবুও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আমাদের গণহত্যাকে তাদের তালিকায় আনেনি। এক্ষেত্রে দেশের ভেতরে বিএনপি কর্তৃক যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসন ও মন্ত্রিত্ব দেয়ার বিষয়ও উল্লেখ করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের একটি রাজনৈতিকি দলও যারা দীর্ঘদিন ক্ষমতায় ছিল তারা ইতিহাস থেকে মুছে দেয়ার চেষ্টা করেছে। গণহত্যার সহযোগীদের অনেককে মন্ত্রী বানিয়েছে। এখনও রক্ষা করার চেষ্টা করছে। সেই দলের প্রধান মুক্তিযুদ্ধে নিহতদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, যেটা পাকিস্তানীরা দীর্ঘদিন ধরে করে আসছে। তিনি আরও বলেন, এটা জাতি হিসেবে আমাদের কৃতিত্ব, আমরা পাকিস্তানের দোসর কয়েকজন যুদ্ধাপরাধীর বিচার শেষ করতে পেরেছি। আরও কয়েকজন বিচারের আওতায় আছে। এটা স্বচ্ছ বিচারিক প্রক্রিয়ায় হওয়ায় বিশ্বের নানা প্রান্তের মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছে। সংস্কৃতিমন্ত্রী তরুণ প্রজন্ম এবং বিশ্ববাসীর কাছে এ গণহত্যার ঘটনাবলী তুলে ধরতে গবেষণার ওপর গুরুত্বারোপের আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমাদের এটাকে ছেড়ে দিলে চলবে না। একাত্তরের গণহত্যা কত ভয়াবহ ছিল সেটা আমাদের মোকাবেলা করতে হবে, গবেষণা করতে হবে। যাতে বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্ম ’৭১-এর গণহত্যার সঠিক ইতিহাস জানতে পারে। আমাদের সময়ের সবচেয়ে বড় গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী দখলদার বাহিনী দ্বারা। এটা এত ভয়াবহ ছিল যে, আমরা এর ট্রমা এখনও বয়ে বেড়াচ্ছি। ভবিষ্যতে দীর্ঘ সময় ধরে এটা বয়ে বেড়াতে হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে তিন দিনব্যাপী সম্মেলনের প্রথম সেশনে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক এ্যাডভোকেট সুলতানা কামালের সভাপতিত্বে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো ড. বিনা ডি কস্তা, ঢাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সায়মা আহমেদ এবং গবেষণা কেন্দ্রের গবেষণা সহযোগী সালমা সোনিয়া। আজ শুক্রবারের দ্বিতীয় সেশন শেষে শনিবার ঢাবি ক্যাম্পাস, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী সমাধিসৌধ ও রায়েরবাজার বধ্যভূমি এলাকা পরিদর্শনে যাবেন বিদেশী অতিথি এবং আমন্ত্রিতরা।
×