ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস ঘোষণা দাবি

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ২৩ মার্চ ২০১৬

২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস ঘোষণা দাবি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পঁচিশে মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস ঘোষণার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি দাবি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার আন্দোলন। এ ব্যাপারে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা নিতে সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা। মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের আহ্বায়ক ও নৌমন্ত্রী শাজাহান খান সংগঠনের পক্ষে এ দাবি তুলে ধরেন। এ সময় মুক্তিযোদ্ধা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন সেক্টরের বিশিষ্টজনরা উপস্থিত ছিলেন। আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার আন্দোলন এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে নৌমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, ‘গত শতাব্দীতে অনেক দেশেই গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু তার অনেক ক্ষেত্রেই বিচার হয়নি। এখনও ক্ষতিগ্রস্তরা বিচারের অপেক্ষায় রয়েছেন। শুধু পঁচিশে মার্চ রাতে বাংলাদেশে প্রায় এক লাখ লোককে হত্যা করা হয়েছিল। যা গণহত্যার ইতিহাসে এক ভয়াবহতম ঘটনা। মন্ত্রী বলেন, ‘পঁচিশে মার্চ আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস ঘোষণার দাবি আমরা দেশবাসীর কাছে উত্থাপন করছি। শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, আজকের সুসভ্য বিশ্ব সমাজ ও বিশ্ব মানবতার অগ্রযাত্রার স্বার্থেও অন্তত একটি দিন গণহত্যার মতো পৈশাচিকতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের জন্য নির্ধারিত থাকা দরকার।’ জাতিসংঘের বিধান অনুযায়ী প্রস্তাবটি কোন দেশের সরকারের পক্ষ থেকে আসতে হবে বিধায় জনগণের এই যৌক্তিক দাবির আলোকে গণহত্যার নির্মম শিকার বাঙালী ও বিশ্বের সকল হতভাগ্য মানুষের পক্ষ থেকে আমরা আমাদের সরকারের কাছে এই প্রস্তাব তুলে ধরছি। একই সঙ্গে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের গণহত্যাকেও জাতিসংঘ কর্তৃক স্বীকৃতি দেয়ার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ারও প্রস্তাব করেন তিনি। শাজাহান খান বলেন, ‘আমরা আমাদের ঘোষণাপত্রের ২১ দফায় উল্লেখসহ পূর্বের সকল সভা সমাবেশে এই দাবি বারবার তুলে ধরেছি। আগামী ২৫ মার্চ জাতীয় জীবনের ভয়াল এই দিনটিতে দাবিটি বিশেষভাবে উত্থাপনের জন্য দিনব্যাপী কর্মসূচী নেয়ার কথাও জানান তিনি। ওই দিন মানিক মিয়া এ্যাভিনিউয়ের সামনে ফুটপাথে জাতীয় সংসদের সামনে সকাল ১০টা থেকে ‘৭১-এর ভয়াবহ গণহত্যার আলোকচিত্র প্রদর্শন করা হবে। বিকেল ৪টা থেকে হবে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এ ছাড়াও চারুশিল্পীদের অংশগ্রহণে চলবে গণহত্যা নিয়ে ক্যানভাসে চিত্রাঙ্কন। সন্ধ্যায় সহস্র মোমবাতি প্রজ্বলনের মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধসহ বিশ্বের গণহত্যার শিকার সকল শহীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। একই সঙ্গে হাজার কণ্ঠে দাবি জানানো হবে ‘পঁচিশে মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি চাই।’ এরপর চলবে গণহত্যার ওপর প্রামাণ্য ও চলচ্চিত্র। তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবি আমরা শুধু এ দেশের মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখব না। প্রবাসী বাঙালী যারা আছেন, তাদের কাছেও এ দাবি পৌঁছে দিয়ে আমাদের আন্দোলনে শামিল হওয়ার আহ্বান জানাব।’ এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক আবেদ খান, মুক্তিযোদ্ধা ইসমত কাদির গামা, মুক্তিযোদ্ধা ওসমান আলী, মাহবুব উদ্দিন বীর বিক্রম, কামাল পাশা চৌধুরী, কামরুল আলম সবুজ, মোঃ কামাল উদ্দিন, এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, হাসান খসরু, রুহুল আমিন মজুমদার প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে। তাই ২৫ মার্চের হত্যাকা-কে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃত আদায় করা হবে। তিনি বলেন, ২৫ মার্চের গণহত্যা শুধুমাত্র এক রাতের হত্যাকা-ই ছিল না। এটা ছিল বিশ্ব সভ্যতার জঘন্যতম হত্যাকা-ের সূচনা। এর পর নয় মাসে পাকিস্তানী হানাদাররা ৩০ লক্ষ নিরপরাধ নারী-পুরুষ-শিশুকে জঘন্যভাবে হত্যা করে।
×