ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বরিশালে অভিযোগ মুক্তিযোদ্ধাদের

স্বাক্ষর স্ক্যান করে সনদ প্রদান ॥ কয়েক লাখ টাকা আত্মসাত

প্রকাশিত: ০৪:০৬, ২২ মার্চ ২০১৬

স্বাক্ষর স্ক্যান করে সনদ প্রদান ॥ কয়েক লাখ টাকা আত্মসাত

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হয়েও দীর্ঘদিন পর্যন্ত তালিকাভুক্ত হতে না পারায় অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধার কাছ থেকে তালিকাভুক্তির নামে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মসাত করা হয়েছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষর স্ক্যান করে গেজেটভুক্ত হওয়ার আগেই উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সনদ ও সাময়িক সনদপত্র প্রদান করার অভিযোগ রয়েছে। ঘটনাটি গৌরনদী উপজেলার। পূর্ব বেজহার গ্রামের মৃত করম আলী সরদারের ছেলে মুক্তিযোদ্ধা (গেজেটভুক্ত নন) এস.এম শাহজাহান অভিযোগ করেন, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হয়েও তিনি দীর্ঘদিনে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় গেজেটভুক্ত হতে পারেননি। সম্প্রতি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি কমান্ডার আনোয়ার হোসেন তাকে গেজেটভুক্ত করে শুরু থেকে আজ পর্যন্ত সকল ভাতা পাইয়ে দেয়ার প্রলোভন দিয়ে বিভিন্ন সময় সর্বমোট এক লাখ ৯২ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। পরবর্তীতে তাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বাক্ষরিত বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের একটি সনদ ও সাময়িক সনদপত্রের ফটোকপি দেয়া হয়। শাহজাহান আরও জানান, খোঁজ নিয়ে তিনি জানতে পারেন তাকে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষরিত সনদ ও সাময়িক সনদপত্র কম্পিউটারে বানানো। প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষর স্ক্যান করে তাকে সনদপত্রের ফটোকপি দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে তিনি আনোয়ার হোসেনের কাছে উভয় কপির মূল সনদপত্র চাওয়ায় সে নানা তালবাহানা শুরু করে। সম্প্রতি তার পুরো টাকা ফেরত চাওয়ায় আনোয়ার তাকে ভয়ভীতিসহ হুমকি প্রদর্শন করেন। উপজেলার চরসরিকল গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা (তালিকাভুক্ত নন) সুলতান সিকদার, আব্দুর রহিম সরদার, সালাউদ্দিন কবিরাজ, হোসনাবাদ বারঘর গ্রামের রতন মোল্লা অভিযোগ করেন, তাদের তালিকাভুক্ত করার জন্য তিন বছর পূর্বে আনোয়ার হোসেন মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে নানা তালবাহানা শুরু করে। সম্প্রতি সমুদয় টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য একাধিকবার ধর্ণা দিয়েও কোন সুফল মেলেনি। সম্প্রতি তালিকাভুক্ত করার জন্য তাদের প্রত্যেকের কাছে আরও এক লাখ টাকা করে দাবি করেন আনোয়ার হোসেন। এ ব্যাপারে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মনিরুল ইসলাম বুলেট ছিন্টু বলেন, এখনও উপজেলার অসংখ্য প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্ত হতে পারেননি। সরকারী নিয়ম অনুযায়ী গেজেটভুক্ত হওয়ার তিন বছর পর মুক্তিযোদ্ধা সাময়িক সনদ পেয়ে থাকেন। সেখানে আনোয়ার হোসেন কিভাবে গেজেটভুক্ত হওয়ার আগেই সাময়িক সনদ পেয়েছেন তা আমার বোধগম্য নয়। তিনি আরও বলেন, তালিকাভুক্ত হতে পারেননি এমন অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধার কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার ব্যাপারে প্রায় প্রতিদিনই আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে কমান্ডে একাধিক অভিযোগ আসছে। মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে নেয়া অর্থ ফেরত দেয়ার জন্য আনোয়ারকে নির্দেশ দেয়ায় সে পুরো কমান্ডের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে এখন কমান্ডে আসা বন্ধ করে দিয়েছে।
×