ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ইউপি নির্বাচনে কাঙ্খিত সহযোগিতা পাচ্ছেনা নির্বাচন কমিশন

প্রকাশিত: ০১:০২, ২১ মার্চ ২০১৬

ইউপি নির্বাচনে কাঙ্খিত সহযোগিতা পাচ্ছেনা নির্বাচন কমিশন

অনলাইন রিপোর্টার ॥ দেশে প্রথম বারের মতো দলীয় প্রতিকে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন। ছয় ধাপে অনুষ্ঠিত হবে এই নির্বাচন যার প্রথম ধাপ অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল মঙ্গলবার। ৭৩২ ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে ভোট অনুষ্ঠিত হবে এমন জায়গাগুলোতে ইতোমধ্যেই ব্যালটসহ যাবতীয় মালামাল পৌঁছানো হয়েছে। তবে নির্বাচনে সহযোগিতা না পাওয়ার কথা জানালেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ। সোমবার বিকেলে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নির্বাচন নিয়ে সহযোগিতা ‍না পাওয়ার এমন কথা জানান। তিনি বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) অনেক বড় পরিসরের নির্বাচন। আমাদের এতো কর্মকর্তা নেই। এজন্য অন্য ডিপার্টমেন্টের লোকদের কাজে লাগাতে হচ্ছে। নিয়োগ করতে হচ্ছে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে। তাদের ওপর আমাদের অতটা কর্তৃত্বও নেই। তাদের কাজ থেকে যে মাত্রায় সহযোগিতা চাই, কাঙ্ক্ষিত সে মাত্রার সহযোগিতা পাচ্ছি না।’ তবে ইউপি নির্বাচনে ভোট কারচুপি হলে সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) ও অন্য পুলিশ কর্মকর্তারা দায়ী হবেন বলে সাফ জানিয়ে দিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। এসময় সিইসি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ দায়িত্ব পালনে অনিয়ম করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বরতদের দায়ী করা হবে। কেন্দ্রে রাতে নিবিড় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোনো কেন্দ্রে ভোটের আগেরদিন রাতে সিল মারার খবর পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট থানার ওসি ও দায়িত্বরত কর্মকর্তা দায়ী হবেন। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে কয়েকজন ওসি ও ইউএনওকে বদলি ও সতর্ক করা হয়েছে। তাই আপনাদের প্রতি অনুরোধ, সতর্ক থেকে এ ধরণের বে-আইনী কার্যক্রম প্রতিহত করবেন। স্বতঃস্ফূর্তভাবে ও নির্ভয়ে ভোট দেওয়ার সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভোটের সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্য অনিয়ম ও পক্ষপাতমূলক আচরণ বা দায়িত্বে অবহেলা করলে তাৎক্ষণিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেব।’ এসময় অনিয়ম রোধে নির্বাচন কর্মকর্তা, পুলিশ এবং আনসার সদস্যদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন তিনি। ভোটের আগের রাতে কেন্দ্রে যাতে কোনো কারচুপি ও জালভোটের ঘটনা না ঘটে সে বিষয়ে সজাগ থেকে প্রয়োজনে ‘সর্বশক্তি প্রয়োগের’ নির্দেশও দেন সিইসি। ইউপির নির্বাচন নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরো বলেন, ব্যালটসহ যাবতীয় মালামাল পৌঁছানো হয়েছে। প্রতিটি ভোটার যাতে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন, সেজন্য পর্যাপ্ত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, আনাসরের বিপুল সংখ্যক সদস্য নিয়োজিত থাকবে।একজন ভোটারের নিরাপত্তার জন্য প্রতি কেন্দ্রে ২০ জন ফোর্স থাকবে। র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবেও থাকবে। তাৎক্ষণিক বিচারের জন্য একজন করে বিচারিক ও চারজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত রয়েছেন বলেও যোগ করেন তিনি। সিইসি বলেন, ইতিমধ্যে নির্বাচনী অনিয়মের কারণে ৭ জনকে ১ মাস করে কারাদণ্ড, ৬০ জনকে ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একজন এমপির বিরুদ্ধে মামলা ও একজনকে শোকজ করা হয়েছে। আরো কয়েকজন মন্ত্রী ও এমপি নির্বাচনী এলাকায় আমাদের অনুরোধে জাননি। সিইসি বলেন, ইউপি নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোটার ১ কোটি ১৯ লাখ ৪০ হাজার ৭৪১ জন। মোট কেন্দ্র ৬ হাজার ৯৮৭টি। চেয়ারম্যান পদে ৩ হাজার ৪৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া সংরক্ষিত ৭৫৭৫ জন ও সাধারণ ২৫ হাজার ৮৪৭ জন প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। তিনি বলেন, নির্বাচনে সব মিলিয়ে ১ লাখ ৮০ হাজারের মতো ফোর্স নিয়োজিত থাকবে। তবে এ সংখ্যা আরো বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এসময় সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দল, প্রার্থী ও তাদের সমর্থকসহ সবার সহযোগিতা কামনা করেন সিইসি। এ সময় অন্যদের মধ্যে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জাবেদ আলী, মোঃ শাহ নেওয়াজ, ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম, জনসংযোগ পরিচালক এসএম আসাদুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
×