ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রথম দফায় ৭২১ ইউপিতে নির্বাচন

তৃণমূলে ভোট উৎসব শুরু হচ্ছে কাল

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ২১ মার্চ ২০১৬

তৃণমূলে ভোট উৎসব শুরু হচ্ছে কাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ তৃণমূলের ভোটের উৎসব শুরু হচ্ছে আগামীকাল সকাল থেকেই। প্রথম দফায় দেশের ৭২১ ইউপিতে ভোট গ্রহণ করা হবে মঙ্গলবার। প্রথম দফায় আরও ১১ ইউপিতে ভোট গ্রহণ করা হবে পরদিন বুধবার। এছাড়া আরও ৫ ধাপে সারাদেশে ৪ হাজারের বেশি ইউপিতে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন করা হবে পর্যায়ক্রমে। রবিবার মধ্যরাত থেকেই নির্বাচনী এলাকায় সব ধরনের প্রচার বন্ধ হয়ে গেছে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচনী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল শুরু করেছেন। এছাড়া বিচারিক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরাও মাঠে রয়েছে। নির্বাচনী এলাকায় সব ধরনের যান চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়েছে। কমিশন জানিয়েছে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠানের জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচনী এলাকায় মোতায়ের করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ব্যালট পেপার, ব্যালট বাক্স, ভোটার সীলমোহরসহ সব নির্বাচনী সরঞ্জাম আজ রাতের মধ্যেই সংশ্লিষ্ট সব ভোট কেন্দ্রে পৌঁছে যাচ্ছে। রবিবার মধ্যরাত থেকেই নিষেধাজ্ঞা রয়েছে সব ধরনের প্রচার, মিছিল মিটিং, পথসভায়। এছাড়া ইসির অনুমোদিত যানবাহন ছাড়া সব ধরনের যান চলাচলের ওপর রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। নির্বাচনের দিনসহ এর পূর্ববর্তী এবং পরের দিন পৌর এলাকায় বৈধ অস্ত্র প্রদর্শন হতে বিরত থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ নির্বাচনী এলাকায় নেয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণসহ নির্বাচনী অনিয়ম রোধ এবং তাৎক্ষণিক বিচার ব্যবস্থার জন্য নির্বাহী ও বিচারিক হাকিম নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নির্বাচনে দায়িত্বে নিয়োজিত কোন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠলে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনার মোঃ শাহনেওয়াজ হুঁশিয়ার করে বলেছেন, ইউপি নির্বাচনে ভোটের অনিয়মরোধে দায়িত্বে অবহেলা করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। নির্বাচনকে ঘিরে এ পর্যন্ত কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা হলেও ভোটের সময় তার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না বলেও আশা প্রকাশ করেন। রবিবার দুপুরে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি উল্লেখ করেন নির্বাচনে সংঘাত-সংঘর্ষ হলেই ব্যবস্থা নেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কোন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকা-কে ছাড় দেয়া হবে না। কারও বিরুদ্ধে ছাড় দেয়ার বা পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’ এদিকে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন সম্পন্ন করতে ১ লাখ ৮০ হাজারের বেশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মোতায়েন করা হয়েছে। ইউপি নির্বাচন উপলক্ষে নিরাপত্তা নিশ্চিতে সব কেন্দ্রকে সমান গুরুত্ব দিয়ে নিরাপত্তা দেয়ার কথা জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক শহীদুল হক। রবিবার তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন ঝুঁকিপূর্ণ বলে আলাদা কোন কেন্দ্র নেই। সব কেন্দ্রেই সমান গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পুলিশ-বিজিবি-র‌্যাব-আনসারের এক লাখ ৮০ হাজার সদস্য নিরাপত্তার জন্য নিয়োজিত রয়েছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোন গোলযোগ হলে ছাড় দেয়া হবে না বলে সতর্ক করে দেন তিনি। এদিকে বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আব্দুল আজিজ আহমেদও রবিবার এক অনুষ্ঠানে বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ (বিজিবি) নিরপেক্ষতা বজায় রেখে কাজ করবে। কোন প্রার্থীর হয়ে বিজিবি সদস্য কাজ করেছেন এমন অভিযোগ এলে তার বিরুদ্ধে দ্রুততার সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়া হবে। নির্বাচনে কারও দ্বারা প্রভাবিত হবে সেটা বিজিবির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। সামান্যতম কোথাও দ কোন অভিযোগ পাওয়া যায় কোন টিম লিডার কারও পক্ষে কাজ করছেন, তার বিরুদ্ধে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি জানান, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে বিভিন্ন কেন্দ্রের জন্য দুই শতাধিক প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন থেকে যেভাবে চাওয়া হয়েছে সেভাবে কাজ করছি। রবিবার ভোর থেকে যে দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় তারা নেমে পড়েছেন। প্রত্যেকটি ভোটকেন্দ্র ও এলাকায় তারা টহল দিয়ে পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। বিজিবির প্রত্যেকটি টিমের সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। তার নির্দেশনা অনুযায়ী পরিচালিত হবে। কোন ম্যাজিস্ট্রেট যদি কোন প্রার্থীর হয়ে কাজ করার নির্দেশনা দেন, তাহলে বিজিবি সমর্থন দেবে না। সেক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা বজায় রেখে কাজ করবে সে ধরনের নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে উল্লেখ করেন।
×