ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সুন্দরবনে কয়লাবাহী জাহাজ ডুবি ঘটনায় ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি

প্রকাশিত: ২২:১৭, ২০ মার্চ ২০১৬

সুন্দরবনে কয়লাবাহী জাহাজ ডুবি ঘটনায় ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি

নিজস্ব সংবাদদাতা, মংলা ॥ বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনে ফের কয়লা বোঝাই জাহাজ ডুবির ঘটনায় বনের ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ ও কারণ অনুসন্ধানে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বন বিভাগ। রোববার সকালে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের পক্ষ থেকে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। চার সদস্যের এ কমিটিকে আগামী তিনদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। শনিবার বিকেলে সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের শ্যালা নদীর ‘হরিণটানা’ বন টহল ফাঁড়ির কাছে এক হাজার ২৩৫ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে ‘এমভি সী হর্স-১’ নামের উপকূলীয় জাহাজটি (কোস্টার) ডুবে যায়। সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) সাইদুল ইসলাম জানান, দুর্ঘটনার কারণ ও সুন্দরবনের জীব বৈচিত্র্যের ওপর এর ক্ষতি পরিমাণ নিরুপণ করতে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) কামাল উদ্দিন আহমেদকে প্রধান করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অপর সদস্যরা হলেন-সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের চাঁদপাই স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) গাজী মতিয়ার রহমান, ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) সুলতান মাহামুদ ও সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের জীব বৈচিত্র কর্মকর্তা মেহেদি হাসান। কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে মাঠ পর্যায়ে তদন্ত ও অনুসন্ধান শেষে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের ডিএফও বরাবর প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এদিকে, রোববার বেলা ১১টার দিকে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগ, মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ, কোস্টগার্ড, জেলা প্রশাসন ও বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ সুন্দরবনের দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেছেন। ডুবে যাওয়া কোস্টারের মাস্টার মোঃ সিরাজুল ইসলাম মোল্ল্যা বলেন, ১৬ মার্চ চট্টগ্রাম বন্দর থেকে এক হাজার ২৩৫ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে যশোরের নওয়াপাড়ার উদ্দেশে যাত্রা করে ‘এমভি সী হর্স-১’ কোস্টারটি। সুন্দরবনের হরিণটানা এলাকায় তলা ফেটে গেলে কোস্টারটিতে পানি উঠতে শুরু করে। এসময় পেছনে থাকা ওটি নুর জাহান-এক নামে অপর একটি ট্যাঙ্কার কোস্টার আমাদের ১২ জন নাবিক ও ক্র’কে উদ্ধার করে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই কোস্টারটি সম্পূর্ণ পানিতে ডুবে (নিমজ্জিত হয়ে) যায়। এ কোস্টারে থাকা কয়লা ইটভাটায় ব্যব‎হৃত হয়। দুর্ঘটনাস্থলটি সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জ কার্যালয় থেকে প্রায় ২৫ নটিক্যাল মাইল দূরে হওয়ায় রাতে সেখানে যাওয়া সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন ডিএফও সাইদুল ইসলাম। এর আগে ২০১৪ সালের ৯ ডিসেম্বর সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে ফার্নেস তেল নিয়ে ওটি সাউদার্ন স্টার-সাত নামে একটি ওয়েল ট্যাংকর ডুবে যায়। সেই ঘটনার পর সুন্দরবনের অভ্যন্তরের এ নৌপথটি বন্ধে জোর দাবি ওঠে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক, সাংষ্কৃতিক ও পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে। জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক দলও সুপারিশ করে বিশ্বের বিপন্ন প্রায় প্রজাতির ডলফিন ‘ইরাবতী’র অভয়ারণ্য শ্যালা নদীসহ সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে বাণিজ্যিক নৌ চলাচল বন্ধের। এ ঘটনার ১০ মাসের মাথায় ২০১৫ সালের ২৭ অক্টোবর শ্যালা ও পশুর নদীর মোহনায় এমভি জিয়া রাজ নামে কয়লাবাহী একটি কার্গো জাহাজ ডুবে যায়। ডুবে যাওয়া কয়লাবাহী কার্গো জাহাজটি এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
×