ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে শেখ রাসেলের ফুটবলারদের দল বদল

লক্ষ্য আবার ট্রেবল জয়ের পুনরাবৃত্তি

প্রকাশিত: ০৪:৩৭, ২০ মার্চ ২০১৬

লক্ষ্য আবার ট্রেবল জয়ের পুনরাবৃত্তি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ২০১২-১৩ মৌসুমে ঘরোয়া ফুটবল ট্রেবল শিরোপা জিতেছিল শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র লিমিটেড। পরের মৌসুমে দলটির বেশিরভাগ ফুটবলার অন্য ক্লাবে পাড়ি জমালে আগের সাফল্যের ধারে কাছেও যেতে পারেনি ক্লাবটি। পরের মৌসুমেও একই অবস্থা অব্যাহত থাকে। তবে এবার নতুন মৌসুমে প্রেক্ষাপট ভিন্ন। শেখ জামাল, মোহামেডান, আবাহনী ও ব্রাদার্স থেকে ১৭ ফুটবলার সংগ্রহ করেছে রাসেল। শুধু তাই নয়, ভারতের আইএসএল মাতানো ইথিওপিয়ান ফরোয়ার্ড ফিকরু তাহেরাকেও ভিড়িয়েছে তারা। ফলে দল হয়েছে আশানুরূপ শক্তিশালী। কাজেই এই দল নিয়ে আবারও ট্রেবল জয়ের সুনীল স্বপ্ন দেখতেই পারে ক্লাবটি। তিন দফা সময় বাড়ানোর পর রবিবার শেষ হচ্ছে ২০১৫-১৬ মৌসুমের ঘরোয়া ফুটবলের দল বদল। একদিন আগেই শেখ রাসেল দল বদল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে (বাফুফে) এসে। সবার আগেই দল বদলের কাজটি করেছে তারা। আর সেটা বেশ সারম্বরেই ও উৎসবমুখর পরিবেশে। খেলোয়াড়, কোচ, কর্মকর্তারা আসেন সুসজ্জিত ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে। এছাড়াও ছিল ব্যান্ড পার্টির সুরের মূর্ছনা। তারকাখচিত দলই গড়েছে রাসেল। শেখ জামালের মোনায়েম খান রাজু, জামাল ভূঁইয়া, আলমগীর কবির রানা ও সাখাওয়াত রনি; ঢাকা আবাহনীর নাসিরুল, কোমল, জিয়াউর ও শাহেদুল, ঢাকা মোহামেডানের মিন্টু শেখ ও অরূপ বৈদ্য এবং ব্রাদার্সের বিপ্লব ভট্টাচার্যকে নিয়েছে তারা। আইএসএলে আলোচিত ইথিওপিয়ান ফিকরু, কলম্বিয়ান আন্দ্রেস মসকুয়েরা মুরিলো, ফিনল্যান্ডের ননগতামবা শুতসা লদি ও নাইজিরিয়ান জিয়ান জুলস ইকাঙ্গাকেও নেয়া হয়েছে। পুরনোদের মধ্যে আছেন এমিলি, মিশু, মিঠুন, লিটন। শেখ জামালে ফিরে গিয়ে নাজুক পরিস্থিতিতে দিদারুল ও লিঙ্কন। তাদের ফেরাতে শেখ জামালের দেয়া ২৭ লাখ টাকার চেক ব্যাংকে ডিজঅনার হলে বাফুফেকে চিঠি দিয়েছে শেখ রাসেল। শেখ রাসেলে হানা দিয়ে ঢাকা আবাহনী নিয়েছে তপু বর্মণ, ওয়ালী ফয়সাল, হেমন্ত ভিনসেন্টকে, মোহামেডানের জুয়েল রানা, বিজেএমসির জীবন, মুক্তিযোদ্ধার ফয়সাল মাহমুদকে। আছেন মামুন মিয়া, ওয়াহেদ, ফাহাদ, ছোট শাহেদ, জাতীয় দলে নিষিদ্ধ হওয়া ইয়াসিন ও শহীদুল আলম সোহেলকে দলভুক্ত নিশ্চিত করলেও সমঝোতায় শেখ জামালকে ফিরিয়ে দিয়েছে তারা। রাসেলের ভারপ্রাপ্ত ডিরেক্টর ইনচার্জ সালেহ জামান বলেন, ‘২০১২-১৩ মৌসুমে আমরা ট্রেবল জিতেছিলাম। আসন্ন মৌসুমে এমন একটা ফল করতে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়েছি।’ পেশাদার লীগ কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মুর্শেদীর বলেন, ‘এবার দেশী-বিদেশী মিলে শেখ রাসেলের খেলোয়াড়ের সংগ্রহ খুব ভাল হয়েছে। ভারতের আইএসএল-এ খেলা ফিকরু এবার খেলছে ক্লাবটিতে। এবার পেশাদার লীগসহ সব টুর্নামেন্টে ক্লাবটি ভাল করবে বলে আমার বিশ্বাস।’ দলের কোচ মারুফুল হকের হাত ধরেই সেবার ট্রেবল জিতেছিল শেখ রাসেল। এবারও কোচের দায়িত্বে তিনিই। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বেশ ক’বছর ধরেই শেখ রাসেল চ্যাম্পিয়ন দল গঠন করে। আমরা ছয় সপ্তাহ ধরে ট্রেনিং করছি। ট্রেনিংয়ে তাদের মনোযোগ ভাল ছিল। সব পজিশনে ভাল খেলোয়াড় নেয়া হলেও সেন্ট্রাল ডিফেন্স নিয়ে একটু সমস্যা আছে। এই পজিশনে আমাদের প্রতিষ্ঠিত ফুটবলার নেই। তবে সেটিও কাটিয়ে উঠা সম্ভব। সবাই দোয়া চাইবেনÑ যে দর্শন নিয়ে শেখ রাসেল দলগঠন করেছে সেটি যেন মাঠেও মিলে।’ মারুফুল আরও জানান সব পজিশনে সেরা ফুটবলারদেরই নিয়েছে ক্লাবটি। খেলোয়াড়দের শারীরিক ট্রেনিংয়ের পাশাপাশি মানসিক ট্রেনিংও করিয়েছেন তিনি। দলের অন্যতম আকর্ষণ ভারতে আইএসএলে খেলা ইথিওপিয়ান ফুটবলার ফিকরুকে নিয়ে। রাসেলের নতুন সংযোজন এই ফরোয়ার্ড জানন, ‘একটি দলের সাফল্য আসে টিম ওয়ার্ক থেকে। কোচ হার্ড ট্রেনিং করিয়েছেন। দলে তরুণ ও অভিজ্ঞ ভালমানের ফুটবলার রয়েছে। তাই আমাদের ক্লাব এবার ভাল করবে বলেই আমার বিশ্বাস।’ ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মীর সামির দেশে ভাল ফুটবলের জন্য বাফুফেকে ক্লাবগুলোর দিকে নজর দিতে এবং সব রকম সহায়তা করার অনুরোধ জানান। এক নজরে শেখ রাসেল : লিটন, বিপ্লব, জিয়া, মিশু, এমিলি, মিঠুন, জামাল ভূঁইয়া, রাজু, রনি, নাসিরুল, শাহেদুল,রুম্মন, রাব্বি, মোস্তাফিজ, মিন্টু, সবুজ, রানা, মনি, অরুপ, নাহিদুল, উত্তম, রাজন, বাবলু, কোমল, ফিকরু, ইকাঙ্গা, অনিক ও সাইফুল। একইদিনে দল বদলের আনুষ্ঠানিকতা সেরেছে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি। তারা রেজিস্ট্রেশন করিয়েছে মোট ২৫ ফুটবলার। স্থানীয় ফুটবলারদের দল বদলের সময় শেষ হচ্ছে আজ। বাকি দশটি দল আজই দল বদলের আনুষ্ঠানিকতা সারবে বলে আশা করছে বাফুফে।
×