ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মোস্তাফা জব্বার

একুশ শতক ॥ ডিজিটাল অপরাধ ও তার প্রতিকার

প্রকাশিত: ০৪:১৩, ২০ মার্চ ২০১৬

একুশ শতক ॥ ডিজিটাল অপরাধ ও তার প্রতিকার

॥ এক ॥ হঠাৎ করেই আমরা ডিজিটাল সিকিউরিটি নিয়ে চরম উদ্বেগের মাঝে পড়ে গেলাম। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ১০.১ কোটি ডলার লোপাট হলো। যদিও এটি ১০০ কোটি লোপাটের শতকরা মাত্র দশ ভাগ, তবুও আমাদের ইতিহাসে এমন বড় ও ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটেনি। ঘটনার সময় ৪ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে বারোটা, যাকে ৫ ফেব্রুয়ারি ১৬ বলা যেতে পারে। যদিও আমরা বিদেশী পত্রিকার খবরে এই লোপাটের ঘটনাটির বিবরণ পাই মার্চের শুরুতে- ঘটনা ঘটার এক মাস পরে, তবুও এখন এটি নিশ্চিত যে, ৪ ফেব্রুয়ারি ১৬; আমাদের জানার অনেক আগেই বাংলাদেশ ব্যাংকের যেসব কম্পিউটারের সহায়তায় আমেরিকার রিজার্ভ ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন হয় বা আরও স্পষ্ট করে বললে যে সুইফট কোড এজন্য ব্যবহৃত হয় তা পাচারকারীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায় ঘটনা ঘটার অন্তত ১০ দিন বা তারও আগে। ঘটনার যে বিবরণ এখন অবধি প্রকাশিত হয়েছে তাতে জানা যায় যে, বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট এ্যাডভাইস নিউইয়র্কের ব্যাংকে পৌঁছার পর ৫টি এ্যাডভাইস ক্লিয়ার করার পরই তাদের সন্দেহ হয় এবং তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে। প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে ৮ ফেব্রুয়ারি ১৬ অবধি বাংলাদেশ ব্যাংকের কারও সঙ্গে নিউইয়র্কের রিজার্ভ ব্যাংক কোন যোগাযোগ করতে পারেনি। তারপরও যেহেতু ব্যাংক থেকে ব্যক্তি খাতে টাকা ছাড় করার ইতিহাস নেই সেহেতু নিউইয়র্কের রিজার্ভ ব্যাংক ৩০টি পেমেন্ট এ্যাডভাইস আটকে দেয়। ফলে আমাদের টাকা লোপাটের পরিমাণ ১০০ কোটি ডলারের বদলে ১০.১ কোটি ডলার থেকে যায়। নিউইয়র্ক রিজার্ভ ব্যাংক পুরো টাকা ছাড়া করলেও করতে পারত। তাতে আমাদের ১০০ কোটি ডলারই হাতছাড়া হতো। খবরে আরও জানা যায় যে, সেই সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের কম্পিউটার রুমে সিসি ক্যামেরা বিকল ছিল। এমনকি সার্ভারের ফায়ারওয়াল নামক নিরাপত্তা ব্যবস্থাও নিষ্ক্রিয় ছিল। ব্যাংকের দায়িত্বশীল লোকজন এমন বিপর্যয়ের বিষয়টি কেবল গোপন রাখেননি, এই বিষয়ে কোন মামলা করেন বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর, আইসিটি ডিভিশনের, সাইবার রেসপন্স টিমের বা বেসরকারী কোন ডিজিটাল নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হননি। বাংলাদেশ ব্যাংক এই জালিয়াতির ঘটনাটি ঘটার ৪৫ দিন পর মামলা করে। এই ঘটনার ধাক্কা সামাল দিতে সৎ ও দক্ষ গবর্নর নামে খ্যাত ড. আতিউর রহমান, তার দুই ডেপুটি গবর্নর ও ব্যাংকিং বিভাগের সচিব চাকরি হারান। নতুন গবর্নর আসেন এবং প্রশাসনিক রদবদলের মাঝে অবশেষে অর্থ মন্ত্রণায়ের তদন্ত কমিটির সঙ্গে র‌্যাবও তদন্ত করছে। অন্যদিকে ২ কোটি ডলার শ্রীলঙ্কায় গিয়ে আটকে পড়ে এবং সেই টাকা নিউইয়র্কে ফেরত যায়। ফিলিপিন্সের অতি সামান্য টাকা ফেরত আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে কতদিনে কি পরিমাণ টাকা ফেরত পাওয়া যাবে সেটি নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না। তবে একটি বিষয় লক্ষণীয় যে, ফিলিপিন্সের সরকার ও সিনেট বিষয়টি চরম গুরুত্বসহকারে দেখছে এবং ১৮ মার্চ ১৬ তারিখে তারা ফিলিপিন্সের অপরাধীদের শনাক্ত করার শেষ পর্যায়ে আছে বলে জানিয়েছে। অনেক বিশেষজ্ঞই মনে করেন যথাসময়ে ত্বরিত ব্যবস্থা নেয়া হলে টাকাগুলো ফিলিপিন্সে আটকানো যেত। বাংলাদেশ ব্যাংকের এই ভয়াবহ চুরির পাশাপাশি ঐ সময়কালেই এটিএম থেকে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে এবং অনেক ব্যাংক গ্রাহকের টাকা ফেরতও দিয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন অনেক ব্যাংক তাদের টাকা হারানোর কথা প্রকাশ্যে স্বীকার না করে গোপনে গ্রাহকের সঙ্গে সেটি মীমাংসা করেছে। আমরা পরে আলোচনা করে দেখব যে, এই ধরনের আর্থিক জালিয়াতি এদেশে প্রথম নয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের মতো এত বড় জালিয়াতি হয়ত এই প্রথম। তবে ছোটখাটো ঘটনা এর আগেও বহুবার ঘটেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন একটি আর্থিক জালিয়াতি যদি আমাদের পুরো রাষ্ট্রকে কাঁপিয়ে দিতে পারে তবে আমাদের ডিজিটাল জীবনধারায় প্রতিনিয়ত যেসব অপরাধ ঘটছে তার কি হবে। বস্তুত বাংলাদেশ ডিজিটাল নিরাপত্তার দিক থেকে এক চরমতম অসহায় অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘটনা হয়ত আমাদের সামনের দিনে আরও বড় ঘটনা থেকে বাঁচার উপায় বাতলে দেবে। তবে আমার এখনও ভয় আছে যে, আমরা কি সামগ্রিকভাবে ডিজিটাল যুগে ডিজিটাল নিরাপত্তার বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে দেখব? কেউ মানুন বা না মানুন আমি মনে করি ডিজিটাল রূপান্তরের একটি বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে এর নিরাপত্তা। আমরা যখন ব্যক্তি জীবনকে ডিজিটাল করছি, আর্থিক জীবনকে ডিজিটাল করছি, আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-কলকারখানা, অফিস-আদালতকে যখন ডিজিটাল করছি তখন সেইসব স্থানে যথাযথ নিরাপত্তা আছে কিনা সেটি কি আমরা ভাবছি? আমাদেরকে সম্ভবত সামগ্রিকভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তার পুরো বিষয়টি আলোচনা করে দেখতে হবে। কেবল আর্থিক খাত বা কেবল মোবাইলে অপরাধ কিংবা মেইল-ফেসবুক-ওয়েবসাইট হ্যাক করার মাঝে সীমিত না থেকে আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে ডিজিটাল অপরাধের গোড়ায় তাকানো এবং এর প্রতিকার বের করা। আসুন দেখা যাক দেশের ডিজটাল নিরাপত্তার অবস্থাটি কেমন আছে সেটির দিকে তাকাই। একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় নারীদের সঙ্গে ডিজিটাল অপরাধ কতটা হচ্ছে তার বিষয়ে গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করেছিল। সেই সভার সূত্র অনুসারে এসব অপরাধের শতকরা ৭৫টি হয়ে থাকে নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে। সেখানে আরও জানানো হয় যে, ডিজিটাল অপরাধের প্রধান ক্ষেত্র ফেসবুক হলেও অন্যান্য অপরাধের মাত্রাও একেবারে কম নয়। বিষয়টির গুরুত্ব অনুভব করে সরকার ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন নামক একটি আইনের খসড়া তৈরি করেছে। অতি সম্প্রতি কোন কোন ঘটনায় ডিজিটাল অপরাধ ঠেকাতে সরকার ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসমূহ বন্ধ করে দিয়েছিল। জনগণের ব্যাপক সমালোচনার মুখে সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়েছে। আমরা স্মরণ করতে পারি যে, সরকারের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে তখনও ফেসবুক ব্যবহৃত হয়েছে। এর মানে সরকার চাইলেও ফেসবুক বা ইন্টারনেট বন্ধ করা বলবত করতে পারেনি। ডিজিটাল ব্যবস্থায় বস্তুত সরকার এক ধরনের অসহায়ত্বে ভোগে। বিষয়টি কেবল আমাদের দুশ্চিন্তার বিষয় ছিল না। উন্নত দেশ ফ্রান্স জরুরী অবস্থা জারি করে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করার ক্ষমতা সরকারের হাতে তুলে দিয়েছে। যদিও তারা সেই অধিকার এখনও প্রয়োগ করেনি, তথাপি আমরা এটি খুব সহজেই অনুভব করতে পারি যে, ডিজিটাল প্লাটফরম তাদের জন্যও উদ্বেগের বিষয়ে পরিণত হয়েছে। ২০১৫ সালের জুলাইতে ডিজিটাল ইন্ডিয়ার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও একই কথা বললেন। তার মতে ‘রক্তপাতহীন’ এই যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে হবে। ডিজিটাল ইন্ডিয়ার উদ্বোধন করতে গিয়ে মোদি যে ছোট বাক্যটি উচ্চারণ করেছেন সেটি আমাদের উপলব্ধি করা দরকার। আমাদেরও বোঝা দরকার যে, বাংলাদেশের ডিজিটাল সত্তার সঙ্গে ডিজিটাল নিরাপত্তা, অপরাধ তদন্ত এবং রাষ্ট্রের প্রস্তুতি দরকার। আমাদের বিষয়টি নিয়ে একুট বেশি আলোচনা করতে হবে এজন্য যে, আমরা এই অপরাধের অজুহাতে সারা দুনিয়া থেকেই অহেতুক আলাদা হয়ে যাই। আমরা ঠিক জানি না মাথা ব্যথার জন্য আমাদের মাথা কাটতে হবে নাকি অন্য কোন উপায় আছে যাতে আমরা ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করব, জীবনধারাকে ডিজিটাল করব এবং নিরাপদ থাকব। সম্ভবত দুনিয়ার কেউ ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ডিজিটাল অপরাধের রূপান্তরকে অস্বীকার করতে পারবে না। কিন্তু সেজন্য ডিজিটাল প্রযুক্তি বন্ধও করতে পারবে না। আমরা জানলাম যে, বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা সুইফট কোড জালিয়াতি করে লোপাট করা হয়েছে। অথচ এজন্য আমরা ব্যাংকগুলোতে সুইফট কোড ব্যবহারে নিষেধ করতে পারব না বা সুইফট কোডের ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে পারব না। বরং সুইফট কোড ব্যবহার করতে গিয়ে আমরা যেসব অসতর্কতার শিকার হয়েছি সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের সামনে যেতে হবে। একটি কথা আমি অত্যন্ত স্পষ্ট করে বলতে চাই যে, গত সাত বছরে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার যেমন বেড়েছে তেমনি এর নিরাপত্তার বিষয়টিও নজরে এসেছে। আমি স্মরণ করতে পারি, দু’চার বছর আগে প্রায় প্রতিদিনই কোন না কোন ছেলে বা মেয়ে তার ইন্টারনেটের ফেক আইডি হ্যাক বা এবিউস করা নিয়ে অভিযোগ করত। এখন সেই অভিযোগের মাত্রা অনেকটাই কমে এসেছে। তবে সাম্প্রতিককালে ডিজিটাল অপরাধ বিষয়ে সরকার ও জনগণের সচেতনতা বাড়লেও আমরা যখন ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলেছি তখন থেকেই বিষয়টি অনেক গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা উচিত ছিল। দুর্ভাগ্যক্রমে সেই কাজটি আমরা করিনি। ২০০৬ সালের পর থেকে ডিজিটাল নিরাপত্তা নিয়ে সরকারের মোট তিনটি কাজের কথা আমি উল্লেখ করতে পারব। প্রথমত সরকার আইসিটি আইন নামক একটি আইন ২০০৬ সালে প্রণয়ন করে। সেটি ২০০৯ ও ২০১৩ সালে দু’বার সংশোধন হয়। সম্ভবত আরও একটি সংশোধনীর মুখে আছে সেটি। সেই আইনে ডিজিটাল অপরাধ নিয়ে কিছু বিষয় আলোচিত হয়েছে। তবে আইনটি ছিল ডিজিটাল সিগনেচার চালু করা বিষয়ক। ফলে ডিজিটাল অপরাধ দমনে এটি তেমন কার্যকর কোন ভূমিকা পালন করতে পারছে না। দ্বিতীয় কাজটি হচ্ছে ডিজিটাল অপরাধ বিষয়ক সচেতনতা নামে একটি কর্মসূচী গ্রহণ করে সরকার দেশব্যাপী কিছু সেমিনারের আয়োজন করেছে। এটির কাজ চলছিল। সম্প্রতি এর কাজ নাকি থেমে আছে। কোন একটি এনজিওকে লাভবান করাই সম্ভবত এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য ছিল। দেশজুড়ে কোন সচেতনতা তৈরি হয়েছে বলে আমার অন্তত মনে হয়নি। তবে তারা যথারীতি সরকারী টাকা সহজেই হজম করতে পেরেছে। তৃতীয় কাজটি এখন চলমান। সরকার ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন নামে একটি আইনের খসড়া তৈরি করেছে, যেটি এখন প্রধানমন্ত্রীর আলোচনার টেবিলে। এটিই বস্তুত ডিজিটাল নিরাপত্তার বিষয়টির প্রতি আমাদের প্রবলভাবে দৃষ্টি দেবার ক্ষেত্র। আমরা বেসরকারী খাতকেও ডিজিটাল অপরাধ বিষয়ে সচেতন হতে দেখেছি। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ডিজিটাল সন্ত্রাসের ওপর একটি সেমিনার করেছে ১৫ সালের জুলাইতে। বাংলাদেশ অনল্ইান মিডিয়া সমিতিও এই বিষয়ে সেমিনার করেছে। আইসিটি ডিভিশনের ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড ১৫ বা আইসিটি এক্সপো ২০১৬-এ কয়েকটি আন্তর্জাতিকমানের সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। সেসব সেমিনারে যেমন ভাল উপস্থিতি ছিল তেমনি ছিল দেশী-বিদেশী বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণ। আমাদের দায়িত্ব হবে ডিজিটাল অপরাধের আদ্যোপান্ত নিয়ে আলোচনা করা ও সুপারিশ করা। আমরা ডিজিটাল অপরাধের স্বরূপ, উৎস, ধরন যেমন আলোচনায় আনব তেমনি এর থেকে পরিত্রাণের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা করব। প্রধানত বিশেষজ্ঞ মতামত নয়, সাধারণের নিরাপদ থাকার পাশাপাশি দেশের অতি সাধারণ মানুষ যাতে ডিজিটাল প্রযুক্তি নিরাপত্তার সঙ্গে ব্যবহার করতে পারে তার দিকেও নজর দেব। আমি মনে করি এখন সময় হয়েছে প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়েও আলোচনা করার। সম্ভবত আইনটি পাস হওয়ার আগে আরও একটু আপডেট হতে পারে। ঢাকা, ১৮ মার্চ ১৬ ॥ লেখক: তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, কলামিস্ট, দেশের প্রথম ডিজিটাল নিউজ সার্ভিস আবাস-এর চেয়ারম্যান-সাংবাদিক, বিজয় কীবোর্ড ও সফটওয়্যারের জনক ॥ ই-মেইল : [email protected], ওয়েবপেজ: www.bijoyekushe.net,ww w.bijoydigital.com
×