ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

নির্যাতন প্রতিরোধে আদীবাসী নারীদের সোচ্চার হতে হবে

প্রকাশিত: ০০:৪৮, ১৯ মার্চ ২০১৬

নির্যাতন প্রতিরোধে আদীবাসী নারীদের সোচ্চার হতে হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আদিবাসী নারীরা শুধু পরিবারেই নয়; সমাজ ও রাষ্ট্রীভাবেও বৈষম্যের শিকার। হীন মানসিকতায় আদিবাসী নারী ও কণ্যা শিশুর প্রতি প্রতিনিয়ত সহিংসতা বাড়ছে। পার্বত্য অঞ্চলে সেনা নিয়ন্ত্রিত এলাকায় প্রতিদিন প্রতিমুহূর্তে আদীবাসী নারীদের ভয়-ভীতি নিয়ে চলতে হয়। আমরা হারিয়ে যাচ্ছি, আমাদের বিলুপ্ত করা হচ্ছে। তাই নির্যাতন প্রতিরোধে নিজেদের মধ্যে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। বিষয়ভিত্তিক ও যুক্তিসঙ্গত আন্দোলন করতে হবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মৌলিক অধিকার আদায়ে আরো বেশি সোচ্চার থাকতে হবে। পুরুষতান্ত্রিক আচরণের হীন মানসিকতা থেকে বের হয়ে না আসলে নারী-পুরুষের বৈষম্য বিলোপ অসম্ভব। শনিবার রাজধানীর আসাদ এভিনিউয়ের সিবিসিবি সেন্টারে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী ‘তৃতীয় জাতীয় আদিবাসী নারী সম্মেলন’-এর উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক ও কাপেং ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ সম্মেলনের সহায়তায় রয়েছে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন। রবিবার বিকেলে সমাপনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এ সম্মেলন শেষ হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা বলেন, শ্রেণীবিভক্ত এ সমাজব্যবস্থায় ধর্ম ও লিঙ্গগত বৈষম্য এখনও প্রকট। ফলে কেউ অধিকার ভোগ করছে, আবার কেউ অধিকার বঞ্চিত। বৈষম্যের প্রভাবে জীবনধারা ও চিন্তাধারাও প্রভাবিত হচ্ছে। এদেশের শাষকগোষ্ঠী প্রগতিশীল নয়, শাষকগোষ্ঠী অনেকক্ষেত্রেই উগ্র জাতীয়তাবাদে নিমজ্জিত। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়েশা খানম বলেন, আমাদের একে অপরের সঙ্গে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে মেলবন্ধন তৈরি করতে হবে। শুধু পোষাকী মেলবন্ধনে আবদ্ধ থাকলে চলবে না, আজ যে প্রদীপ জ্বালিয়েছিÑসেই আলোতে রাষ্ট্রের অন্ধকার দূর করতে হবে। নারীর অধিকার আদায়ে সোচ্চার হতে হবে। আদিবাসী নারীদের নির্যাতন প্রতিরোধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সম্মেলন উপলক্ষে আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের তৈরি করা এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে আদিবাসী নারী ও কন্যাশিশুদের প্রতি সহিংসতা উদ্বেগজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০০৭ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে ৪৩৪ জন আদিবাসী নারী ও কন্যাশিশু শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এবং যেসব ঘটনার কোন একটি দৃষ্টান্ত নেই যেখানে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হয়েছে। কেবল ২০১৫ সালেই ১৪ টি ধর্ষণ, ১২ টি গণধর্ষণ, ১১ টি শারীরিক লাঞ্ছনা, ৬ টি শারীরিক ও যৌন হয়রানি, ১৬ টি ধর্ষণের চেষ্টাসহ ৬৯ টি ঘটনা সংগঠিত হয়। উদ্বোধনী অধিবেশনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কাপেং ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারপার্সন চৈতালী ত্রিপুরা। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের আহ্বায়ক মিনু মারিয়া ম্রং। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাকমা সার্কেলের রানী য়েন য়েন, ইউএন ওমেন’র পোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর তপতী সাহা, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’র পোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর ওয়াসিউর রহমান তন্ময় ও বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের যুগ্ম আহ্বায়ক বাসন্তী মুর্মু।
×