ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পৌর সচিবের বিরুদ্ধে ভূমি দখলের অভিযোগ

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ১৯ মার্চ ২০১৬

পৌর সচিবের বিরুদ্ধে ভূমি দখলের অভিযোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, শরীয়তপুর, ১৮ মার্চ ॥ গোসাইরহাট পৌরসভা সচিব আবদুল আলীম অন্যের জমি দখলে মেতে উঠেছেন। শুধু জমি দখল করেই ক্ষান্ত হননি তিনি। দরপত্র বিজ্ঞপ্তি ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ছাড়াই নিজে দখল করা জমিতে মার্কেট নির্মাণ করে তাতে দোকান বরাদ্দ দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এছাড়াও কাজের বুয়ার সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলে তার স্বামীর সংসার ভাঙ্গার অভিযোগ উঠেছে পৌর সচিব আবদুল আলীমের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে ঐ মহিলার স্বামী গোসাইরহাট উপজেলার চরপাঁচকাঠি গ্রামের হানিফ হাওলাদার পৌরসভার সচিব আবদুল আলীমের বিরুদ্ধে গোসাইরহাট থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। ১ মার্চ বিকেলে জরুরী কাজের কথা বলে তার স্ত্রীকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বাসায় ডেকে নেন আবদুল আলীম। নিজ স্ত্রীকে এভাবে তড়িঘড়ি করে ডেকে নেয়ায় সন্দেহ হয় হানিফ হাওলাদারের। কৌশলে বাসার পাশে লোকজন নিয়ে দাঁড়িয়ে থেকে নিজ স্ত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের দৃশ্য দেখে ফেলেন তিনি। পরে বিষয়টি থানা পুলিশ গড়িয়ে ঘটে বিবাহ বিচ্ছেদ। এদিকে পৌরসভার সচিব আবদুল আলীম গোসাইরহাট উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান দেওয়ান মোঃ শাহজাহানের স্বত্বাধিকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স দেওয়ান শাহজাহান ফার্মের নামে ১৩ লাখ ৬ হাজার ৭৯৭ টাকার অনিয়মিত/অবৈধ চেক প্রদান করে পৌরসভার টাকা আত্মাসাত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। ভাইস চেয়ারম্যান দেওয়ান মোঃ শাহজাহান গোসাইরহাট পৌরসভা থেকে ১৩ লাখ ৬ হাজার ৭৯৭ টাকার অনিয়মিত/অবৈধ চেক (চেক নং-১৪৩২০৮৬, হিসাব নং পৌর-৪০২, তাং ৯-০৩-১৬ ইং) পেয়ে চেক জালিয়াতির বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। গোসাইরহাট উপজেলার মিত্রসেনপট্টি গ্রামের কালাম বেপারী, কাওসার আহমেদ, আবদুল কাদের ঢালী ও হোসনে আরা বেগম জানান, মিত্রসেনপট্রি মৌজার ১৮৪ ও ১৮৯ নং দাগের সাব কবলা করা পৈত্রিক জমিতে ঘরবাড়ি নির্মাণ করার সময় গোসাইরহাট পৌরসভার সচিব আবদুল আলীম অফিসের লোকজন নিয়ে এসে নির্মাণ কাজে বাধা দেন এবং পৌরসভা থেকে নকশা করে দেয়ার পর সে অনুযায়ী ঘরবাড়ি নির্মাণ করতে হবে বলে জানায়। পরের দিন পৌরসভার সচিব আবদুল আলী জোর করে তাদের জায়গা দখল করে তাতে মার্কেট নির্মাণ শুরু করেন। এতে বাধা দিলে তিনি জমির মালিকদের মামলা দেয়াসহ বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদান করেন। এ ব্যাপারে পৌর সচিব আবদুল আলী জানান, আমরা সরকারের খাস জমি দখলমুক্ত করেছি। তবে এলাকাবাসীর প্রশ্ন- সরকারের খাস জমি দখলমুক্ত করে তা সরকারের কাছ থেকে বরাদ্দ নেয়ার আগেই কিভাবে এবং কার স্বার্থে বিনা টেন্ডারে এবং ঠিকাদার ছাড়া পৌরসভা কর্তৃপক্ষ লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে রাতারাতি মার্কেট নির্মাণ করছে? গোসাইরহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌরসভা প্রশাসক মোঃ সগীর হোসেন বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। এদিকে আবদুল আলীম গোসাইরহাট পৌরসভার সচিব পদে যোগদান করার পর থেকেই বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের জাতীয় পত্রিকায় দরপত্র বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই তার মনোনীত কয়েক ঠিকাদারকে ভাগবাটোয়ারা করে দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন। পৌরসভা থেকে শতাধিক গভীর নলকূপ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে স্থানীয়দের। পৌরসভার সচিব আবদুল আলীম প্রতিটি গভীর নলকূপের বিপরীতে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছেন গ্রাহকদের কাছ থেকে। এসব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করেন আবদুল আলীম।
×