ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কর্ণফুলী টানেল সংযোগ সড়কের নক্সায় পরিবর্তন আসতে পারে

প্রকাশিত: ০৪:৫৭, ২ মার্চ ২০১৬

কর্ণফুলী টানেল   সংযোগ  সড়কের নক্সায়  পরিবর্তন  আসতে পারে

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ কর্ণফুলী টানেল সংযোগ সড়কের নক্সায় কিছুটা পরিবর্তন আনার চিন্তা-ভাবনা করছে সরকার। নদীর দক্ষিণ পাড়ে শতাধিক বসতঘর, কবরস্থান, শ্মশানসহ গুরুত্বপূর্ণ কিছু স্থাপনা রক্ষায় এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে এ পরিবর্তনের বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। তবে সবই নির্ভর করছে টানেল বাস্তবায়নকারী চীনা সংস্থার সম্মতির উপর। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সংযোগ সড়ক কিছুটা ঘুরিয়ে দিয়ে জনবসতিসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রক্ষার দাবি উঠেছে। প্রশাসনও বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। ফলে সরকারের পক্ষ থেকে চীনা সংস্থাকে বোঝানোর চেষ্টা করা হবে। সড়কটি টানেলের সংযোগ পয়েন্ট থেকে সোজাসুজি গেলে উচ্ছেদ করতে হবে শতাধিক ঘরবাড়ি। অপরদিকে, কিঞ্চিৎ টার্ন করে সিইউএফএল সড়কের পাশ দিয়ে নিয়ে গেলে খুব বেশি উচ্ছেদের প্রয়োজন পড়বে না। এতে এলাকাবাসীর আবাসস্থল ও সম্পদ রক্ষা হবে। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন জানান, কর্ণফুলী টানেলের দু’পাশের সংযোগ সড়কের মধ্যে শহরপ্রান্তে কোন সমস্যা নেই। কিন্তু দক্ষিণ পাড়ে আনোয়ারা সিইউএফএল প্রান্তে সংযোগ সড়ক নিয়ে এলাকাবাসীর আপত্তি রয়েছে। যেহেতু এতে অন্তত শতাধিক ঘরবাড়ি ও স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হবে তাই আমরাও দাবিটি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছি। তবে বাস্তবায়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত চীনা প্রতিষ্ঠানটি চায় সংযোগ সড়ক সোজা হোক। সুতরাং বিষয়টি তাদের উপলব্ধি করানোর ব্যাপার রয়েছে। তারা সম্মতি দিলেই দক্ষিণ প্রান্তের সংযোগ সড়ক সোজা না হয়ে খানিকটা বাঁকা হবে। এদিকে, জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, টানেল বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এ পর্যন্ত ৮৫ একর ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে রয়েছে। মোট ৩টি ধাপে ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে। প্রথম ধাপের অধিগ্রহণ কাজ শেষ হওয়ার পর আরও দুই ধাপে অধিগ্রহণ চলবে। বর্তমানে আনোয়ারার বৈরাগ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় সয়েল টেস্টের কাজ চলছে। টানেল নির্মাণের এ উদ্যোগে এলাকাবাসীর মধ্যে সন্তুষ্টি থাকলেও পাশাপাশি রয়েছে উচ্ছেদ আতঙ্কও। আবার ভূমি ও বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদ হলেও হারানো জমির ন্যায্যমূল্য এবং পুনর্বাসন নিয়ে অনিশ্চয়তাও রয়েছে বসবাসকারীদের মধ্যে। প্রসঙ্গত, প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে কর্ণফুলীর তলদেশে নির্মিত হবে দেশের প্রথম টানেল। মোট ব্যয়ের প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা দেবে চায়না এক্সিম ব্যাংক। পানি প্রবাহের ১৫০ ফুট নিচ দিয়ে যাবে প্রস্তাবিত এ টানেল, যার দৈর্ঘ্য হবে ৩ দশমিক ৪ কিলোমিটার। টানেলের দু’প্রান্তে থাকবে ৬ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক। ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে গেছে ব্যাংকটির একটি প্রতিনিধি দল। চীনের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সিসিসিসি’র প্রধান প্রকৌশলী লিয়াং জিংগুর নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দলটি চউক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম ও চউকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকও করেন। অতি দ্রুতই কর্ণফুলী টানেলের নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে তা ২০২০ সালের জুনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। স্বপ্নের এই টানেল বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম হবে চীনের সাংহাইয়ের মতো ‘ওয়ান সিটি টু টাউন।’
×