ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৯ ক্রিকেট দলের কোচ মিজানুর রহমান বাবুল

ছেলেদের নৈপুণ্যে আমি তৃপ্ত, সন্তুষ্ট

প্রকাশিত: ০৭:২৬, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

ছেলেদের নৈপুণ্যে আমি তৃপ্ত, সন্তুষ্ট

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সেমিফাইনালের হারটি এখনও যেন কারও মন থেকে মুছে ফেলা যাচ্ছে না। বাংলাদেশ যুব দলের ক্রিকেটাররাও কোনভাবেই ভুলতে পারছেন না। শনিবার শ্রীলঙ্কাকে ৩ উইকেটে হারিয়ে টুর্নামেন্টে তৃতীয় দল হয়েছে বাংলাদেশ। এরপরও ফাইনালে উঠতে না পারার আক্ষেপ, হতাশা সবার ভেতর থাকছেই। তবে টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ যেরকমভাবে খেলেছে তাতে বাংলাদেশ যুব দলের কোচ মিজানুর রহমান বাবুল তৃপ্ত, সন্তুষ্ট। কোচ বলেছেন, ‘আমি তৃপ্ত, আমি সন্তুষ্ট।’ শ্রীলঙ্কাকে হারানোর পর বাবুল জানান, ‘আমি তৃপ্ত। দেড় বছর আগে শুরু করেছিলাম। যে একটা গোল ছিল আজ (শনিবার) সেই খেলার সমাপ্তি ঘটল। আমরা তৃতীয় হয়েছি। আমি সন্তুষ্ট।’ প্রশ্ন উঠল, সেমিফাইনালে না পারার কষ্ট বেশি করে মনে উঠেছে? বাবুল জানালেন, ‘সবারই একটা আশা ছিল। এটা তৈরি করেছে ছেলেরা যে আমরা ফাইনাল খেলব। এমনও আশা ছিল যে ইনশাল্লাহ আমরা কাপ জিতবো। ছেলেরা দেড় বছরে বিভিন্ন জায়গায় খেলে এই আশাটা তৈরি করেছে। হয়তো আমরা খেলতে পারিনি ফাইনাল। এজন্য ছেলেরা কাল (শুক্রবার) মুষড়ে পড়েছিল। কান্নাকাটি করেছে। তাদের ওই জায়গা থেকে ফিরিয়ে আনতে অনেক সময় লেগেছে। যেহেতু ওরা বাচ্চা ছেলে। তাদের সাথে অনেক সময় ব্যয় করতে হয়েছে, অনেক মজা করতে হয়েছে, গল্প বলতে হয়েছে। তাদের হাসি মুখটা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছি। শেষ পর্যন্ত ম্যাসেজ ছিল যে ওইটার প্রতিশোধ আমরা এটা (শ্রীলঙ্কাকে হারানো) নিতে পারি কি না। একটা চ্যালেঞ্জ ছেলেদের দেয়া হয়েছিল যেন আমরা হাসিমুখে ঘরে ফিরে যেতে পারি। সেমিফাইনালে আমরা যে কষ্টটা সবাইকে দিয়েছি যদি আমরা এটা (তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচ) জিততে পারি, সবাই আনন্দ পাবে। তাদের আমি ভাল একটা ম্যাসেজ দিয়েছিলাম যেটা আপনাদের কাছ থেকে আমরা পেয়েছিলাম যে সবাই খুশি, আপনারা খুশি, দেশবাসী খুশি। তো এটা আমি ছেলেদের বলেছি যে তোমরা মুষড়ে পড়ো না। তোমাদের সাথে সবাই আছে, তোমাদের অ্যাপ্রিশিয়েট করেছে সবাই যে তোমরা হেরেছো তো কি, অনেক ভাল ক্রিকেট খেলেছ। ওইভাবে ছেলেরা অনেক মটিভেটেড হয়েছে এবং আজ (শনিবার) চেষ্টা করেছে।’ কারা সবচেয়ে বেশি মুষড়ে পড়েছিল? সেই প্রশ্নও উঠল। বাবুলও জানিয়ে দিলেন, ‘যেমন জাকের আলী অনিকই বিশ্বকাপে একটা ম্যাচও খেলেনি। কিন্তু ড্রেসিং রুমে সে অনেক কেঁদেছে। আজ (শনিবার) সে খেলেছে এবং সে প্রমাণ করেছে সে কেঁদেছে, সে ব্যাটিং করে অন্যকে কাঁদিয়ে দেবে।’ এদের মধ্যে অনেকেই ট্যালেন্টেড। তাদের নিয়ে কেমন স্বপ্ন দেখেন? কোচ বলেন, ‘সবাই ট্যালেন্টেড। তার মধ্যে কম বেশি তো থাকেই সব জায়গায়। ট্যালেন্টেডের মধ্যে আমি এগিয়ে রাখতে চাই মিরাজ, শান্ত, জাকির, সাইফুদ্দিন, রানা। আমি মনেকরি এরা আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের খেলোয়াড়। এরা এক সময় খেলবে এবং আমাদের সিনিয়র টিমের হয়ে দেশের প্রতিনিধিত্ব করবে। তাদের সেই ট্যালেন্ট আছে। বাকিরাও ট্যালেন্টেড, হয়তো একটু বেশি সময় লাগতে পারে। পিনাক, সাইফ এরাও অনেক ট্যালেন্টেড খেলোয়াড়। তারা দেড় বছর ধরে অনেক পারফর্ম করেছে। হয়তো এই টুর্নামেন্টে এসে সাইফ, পিনাক ক্লিক করেনি। সব খেলোয়াড়েরই উত্থান-পতন থাকে।’ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে জেতার ক্ষেত্রে চাপ ছিল। রান আউট দেখে মনে হয়েছে স্থায়ুচাপ। বাবুল এ নিয়ে বললেন, ‘গত ম্যাচে হারার পর অনেকের প্রশ্ন ছিল টস জিতে কেন ব্যাটিং করলাম। এটা একটা উদাহরণ যে কেন ব্যাটিং করলাম। শ্রীলঙ্কা একই কারণে ব্যাটিং করেছে। এজ লেভেলে চেস করা আর ওয়ানডে ম্যাচে এটা হচ্ছে আইন যে উইকেট যদি ভাল থাকে আগে ব্যাটিং করতে হবে। এটা সিনিয়র টিম বা জুনিয়র টিম হোক। অপ্রয়োজনীয় চাপ আমি নিব কেন। পরে ব্যাটিং করতে গেলে একটা রানের চাপ থাকে। আগে ব্যাটিং করলে যেটা থাকে না। আমি তো অনেক দিন ধরে কাজ করছি গত বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার সাথে একই কারণে হেরেছি। ওই ম্যাচে উইকেট খারাপ ছিল আমি তা বলব না। বাজে দিন ছিল তাই। তারপরও ২২৭ হয়েছে। তবে আজ (শনিবার) আমরা টসে জিতলে ফিল্ডিংই করতাম। কারণ আমরা তিন পেসার খেলিয়েছি। তবে ব্যাটিং করার উইকেট ছিল। গত ম্যাচে হয়তো অনেক দর্শক ছিল, সরাসরি সম্প্রচার হয়েছে। জীবনে এমন অবস্থায় কেউ কোনদিন ক্রিকেটই খেলেনি।’
×