ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

সাগর-রুণী হত্যাকান্ড;###;এ পর্যন্ত আদালতে ৪০ তদন্ত রিপোর্ট দাখিল ;###;২৮ ফেব্রুয়ারি আবারও দাখিলের দিন ধার্য

চার বছরে তদন্তের অগ্রগতি সেই তিমিরেই

প্রকাশিত: ০৮:০৮, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

চার বছরে তদন্তের অগ্রগতি সেই তিমিরেই

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আজ ১১ ফেব্রুয়ারি, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনীর হত্যাকা-ের চার বছর পূর্তি। এ চার বছরে হত্যাকা-ের তদন্তের অগ্রগতি সেই তিমিরেই রয়ে গেছে। এ হত্যাকা-টি দেয়া হয়েছিল সর্বোচ্চ গুরুত্ব। এমনকি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকা-ের রহস্য উদ্ঘাটন করে হত্যাকারী গ্রেফতারের প্রতিশ্রুতিও দেয়া হয়েছিল। এ প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন তো ঘটেইনি, বরং গত চার বছরে আদালতে দাখিল করা হয়েছে ৪০ প্রতিবেদন। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি আবারও আদালতে তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করার দিন ধার্য আছে। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা এ হত্যা মামলার প্রকৃত খুনীরা গত ৪ বছরে এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখনও তদন্তের বিষয়ে অন্ধকারেই হাতিয়ে বেড়াচ্ছে। তদন্তকারী সংস্থার র‌্যাব সূত্রে এ খবর জানা গেছে। পুলিশের আইজি একেএম শহীদুল হক গত সোমবার রংপুরে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, সাংবাদিক সাগর-রুনী দম্পতি খুনের মামলার তদন্তে খুশি হওয়ার মতো অগ্রগতি নেই। খুব শীঘ্রই খুনীদের চিহ্নিত করে ভাল খবর জানাতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি পশ্চিম রাজাবাজার ফ্ল্যাটে খুন হওয়া সাংবাদিক দম্পতির লাশ দেখতে এসে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হত্যা রহস্য উদ্ঘাটন করে খুনীদের গ্রেফতারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন। তদন্তে প্রণিধানযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে বলে ঘটনার পর পুলিশ সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন পুলিশের সাবেক আইজি হাসান মাহমুদ খন্দকার। হত্যাকা-ের কয়েক দিনের মাথায় গ্রিল কাটা চোরদের ইঙ্গিত করে হত্যাকা-ের মোটিভ নিশ্চিত হওয়া গেছে বলেছিলেন ডিএমপির মুখপাত্র পুলিশের বর্তমান যুগ্মকমিশনার মনিরুল ইসলাম। সাংবাদিক দম্পতি হত্যাকা-ের বিষয়ে ২০১২ সালের ৯ অক্টোবর ৭ জনকে গ্রেফতারের ঘোষণা দিয়েছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর। তদন্তকারী সূত্রে জানা গেছে, বিগত ৪ বছরে তদন্তকারী সংস্থা ও তদন্তকারী অফিসার বদল হয়েছে প্রায় ডজনখানেক বার। বর্তমানে নতুন তদন্তকারী সংস্থা হচ্ছে র‌্যাব এবং র‌্যাবের এএসপি মহিউদ্দিন আহমেদ হচ্ছেন নতুন তদন্তকারী অফিসার। দীর্ঘ তদন্তের পরিক্রমায় তদন্তকারীর হাতে কারাবন্দী ৫ জন ও গরমিল থাকা ডিএনএ নমুনা ছাড়া এখন আর কিছুই আশা-ভরসার অবশিষ্ট নেই। গত ১৭ সেপ্টেম্বর মামলার নতুন তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত হওয়ার পর গত ১৬ জানুয়ারি আদালতে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৪০টি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে আদালতে। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি আবারও আদালতে তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। এ হত্যা মামলাটিই একমাত্র ব্যতিক্রমধর্মী যে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তদন্তের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে নিয়েছে আদালতে। গত ১৮ জানুয়ারি চার্জশীট দাখিলের দিন ধার্য থাকলেও তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে তদন্তকারী সংস্থা র‌্যাব। ৩৯ বারের মতো ফের সময় চাওয়া হয় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এমএম ইউনুস খানের আদালতে। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী তারিখ ধার্য করা আছে। এ হত্যাকা-ের ঘটনায় ১৪৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ৮ জনকে। এর মধ্যে ৩ জন জামিনে আছেন। এরা হচ্ছেন- স্কলাসটিকা স্কুলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা তানভীর রহমান, দারোয়ান পলাশ রুদ্র পাল ও ডাঃ নিতাই হত্যা মামলার আসামি মিন্টু। গ্রেফতারকৃত ৫ জন হচ্ছেন- কামরুল হাসান অরুণ, রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী হুমায়ুন কবির ও আবু সাঈদ।
×