ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

হেসেখেলে ফাইনালে ভারত

প্রকাশিত: ০৫:২২, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

হেসেখেলে ফাইনালে ভারত

মিথুন আশরাফ ॥ ভারত যুব দলের কোচ হয়ে বাংলাদেশে এসেছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক রাহুল দ্রাবিড়। শ্রীলঙ্কা যুব দলের বিপক্ষে মঙ্গলবার ভারত যুব দল সেমিফাইনালে খেলতে নামার আগেরদিনই সোমবার দ্রাবিড় বলেছিলেন, ‘ম্যাচটিকে আমরা পার্টিতে পরিণত করতে পারব বলে প্রত্যাশা করি।’ সেই পার্টি হয়েই গেল। লঙ্কানদের ৯৭ রানে সহজেই হারিয়ে অনুর্ধ-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠে গেল ভারত। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে আনমলপ্রিত সিংয়ের ৭২, সরফরাজ খানের ৫৯ ও ওয়াশিংটন সুন্দারের ৪৩ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে ৫০ ওভারে ২৬৭ রান করে ভারত। জবাবে ৪২.৪ ওভারে ১৭০ রান করতেই অলআউট হয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। লঙ্কানদের পক্ষে কামিন্ডু মেন্ডিস সর্বোচ্চ ৩৯ রান করেন। শুরুতে ভারতকে চাপে রাখতে পারলেও তা আর বজায় থাকেনি। ২৭ রানেই ২ উইকেট হারানো ভারত তৃতীয় উইকেটে আনমলপ্রিত-সরফরাজ খানের ৯৬ ও চতুর্থ উইকেটে আনমলপ্রিত-সুন্দারের ৭০ রানের জুটিতেই এগিয়ে যায়। এরপর প্রতি জুটিতেই কিছু না কিছু রান যুক্ত হয়ে আড়াশ রানের বেশি হয়ে যায়। সেখানেই মূলত শ্রীলঙ্কা পিছিয়ে পড়ে। ব্যাট হাতে ৪২ রানেই যখন ৩ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা, খাদের কিনারায় পড়ে যায়। এরপর কিছুক্ষণ পরপর উইকেট পড়তে থাকে। কামিন্ডু মেন্ডিসের সঙ্গে শাম্মু আশান (৩৮) শুধু চতুর্থ উইকেটে ৪৯ রানের জুটি গড়তে পারেন। যেটি শ্রীলঙ্কার ইনিংসের সবচেয়ে বড় জুটি হয়ে থাকে। এত বড় স্কোর গড়তে গিয়ে যখন ৫০ রানেরও একটি জুটি হয় না, সেখানে কী আর জেতা সম্ভব! শ্রীলঙ্কা জিততেও পারেনি। ফাইনালে ওঠার আশাও তাই জলাঞ্জলী দিতেই হলো লঙ্কানদের। ২০০০ সালে নিজ মাটিতে হওয়া যুব বিশ্বকাপে ফাইনালে খেলেছিল শ্রীলঙ্কা। সেবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আশাও ছিল। কিন্তু ভারতের কাছেই ৬ উইকেটে হেরে সেই স্বপ্ন ভঙ্গ হয়। এবারও ফাইনালে ওঠার আশায় বাঁধা হয়ে রইল ভারতই। ২০০০, ২০০৮ ও ২০১২ সালের চ্যাম্পিয়ন ভারত আবারও ফাইনালে খেলা নিশ্চিত করে নেয়। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার অনুষ্ঠেয় সেমিফাইনালে যে দল জিতবে, তারাই ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে মুখোমুখি হবে। প্রতিপক্ষ হিসেবে শ্রীলঙ্কা কেমন? এমন প্রশ্নের জবাবে রাহুল দ্রাবিড় বলেছিলেন, ‘ডিসেম্বরে তাদের সঙ্গে আমরা একটি সিরিজ খেলেছি। তারা কী করতে পারে, তা আমরা জানি।’ দ্রাবিড়ের মাথায় বোধহয় ছিল, শ্রীলঙ্কা কখনই ভারতের বিপক্ষে দাপট দেখিয়ে খেলতে পারে না। ১৯৮৮ সাল থেকে মঙ্গলবারের সেমিফাইনালের আগ পর্যন্ত ৩৬টি যুব ওয়ানডে ম্যাচে ভারত ও শ্রীলঙ্কা মুখোমুখি হয়। ৪টি ম্যাচ ছাড়া ৩২টি ম্যাচেই ভারত জিতে। ২০০৪ সাল থেকে তো শ্রীলঙ্কার কাছে আর হারেইনি ভারত। টানা ২২ ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারায় ভারত। সেমিফাইনাল জেতায় টানা ২৩টি ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারাল ভারত। এ ম্যাচটি জেতায় যুব বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলাও নিশ্চিত করল ভারত। দ্রাবিড় বলেছিলেন, ‘আমার মনে হয় শ্রীলঙ্কার সঙ্গে খেলাটা দারুণ প্রতিযোগিতামূলক হবে। তারা যেমন ভাল দল, আমরাও তেমনি খুব ভাল ক্রিকেট খেলছি।’ কোথায় হলো সেই প্রতিযোগিতা। শ্রীলঙ্কাকে হতাশই হতে হলো। ৪৪ বল বাকি থাকতে সহজেই ম্যাচ জিতে নিল ভারত। পঞ্চমবারের মতো ফাইনালেও উঠে গেল।
×