ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

৭ মাসে রফতানি আয় ১ হাজার ৯২৬ কোটি ৯৫ লাখ ডলার

রফতানিতে প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশের বেশি

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

রফতানিতে প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশের বেশি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথম মাসেই (জুলাই) রফতানি আয়ে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। সে মাসে আয় কমে যায় ১১ দশমিক ৯৬ শতাংশ। তবে আগস্টে অবস্থার উন্নতি হতে শুরু করে। ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির ধারায় ফেরে রফতানি খাত। এরই ধারাবাহিকতায় গত নবেম্বর শেষে রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি দাঁড়ায় ৬ দশমিক ৭১ শতাংশ। এ ধারা অব্যাহত ছিল ডিসেম্বরেও। সর্বশেষ জানুয়ারি মাসে রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০ দশমিক ৪১ শতাংশ। অর্থবছরের ৭ মাসে বাংলাদেশের রফতানি আয় হয়েছে ১ হাজার ৯২৬ কোটি ৯৫ লাখ ডলার, যা আগের একই সময়ে ছিল ১ হাজার ৭৭৯ কোটি ৯৩ লাখ ডলার। এই সময়ে রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৮ দশমিক ২৬ শতাংশ। সোমবার রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশিত দেশের রফতানি আয়ের হালনাগাদ পরিসংখ্যানে এই চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, এই সাত মাসে সর্বোচ্চ রফতানি আয় হয়েছে তৈরি পোশাক খাত থেকে, নিট ও ওভেন মিলিয়ে একহাজার ৫৭৬ কোটি ডলার। গত বছরের এই সময়ের তুলনায় এই আয় ৯ শতাংশ বেশি। একক মাস হিসেবে জানুয়ারিতে মোট রফতানি আয় হয়েছে ৩১৮ কোটি ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ১০ দশমিক ৪ শতাংশ রফতানি আয় বেশি হয়েছে। প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি মেয়াদে রফতানি রফতানিতে আয় হয়েছে ১ হাজার ৯২৬ কোটি ৯৫ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ বেশি। গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরের একই সময়ে পণ্য রফতানিতে বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছিল ১ হাজার ৭৭৯ কোটি ৯৩ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। অর্থাৎ গত অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে পণ্য রফতানিতে বৈদেশিক মুদ্রা আয় ৮ দশমিক ২৬ শতাংশ বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের শুধু জানুয়ারিতে বিভিন্ন খাতের রফতানিতে আয় হয়েছে ৩১৮ কোটি ৫৬ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার। এই মাসে রফতানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩০২ কোটি ৯০ লাখ মার্কিন ডলার। অর্থাৎ এই মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৫ কোটি ৬৬ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার বা ৫ দশমিক ১৭ শতাংশ বেশি বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেলেও এর আগের মাস ডিসেম্বরের তুলনায় প্রায় ২ কোটি মার্কিন ডলার কম আয় হয়েছে জানুয়ারিতে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি মেয়াদে রফতানিতে আয় হয়েছে ১ হাজার ৯২৬ কোটি ৯৫ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ বেশি। গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরের একই সময়ে পণ্য রফতানিতে বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছিল ১ হাজার ৭৭৯ কোটি ৯৩ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। ইপিবি’র প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে তৈরি পোশাকের নিটওয়্যার খাতে আয় হয়েছে ৭৬০ কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ দশমিক ৬০ শতাংশ বেশি। ওভেন খাতের পণ্য রফতানিতে আয় হয়েছে ৮১৫ কোটি ৯৫ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ দশমিক ৫৭ শতাংশ বেশি। গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারির তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে হিমায়িত খাদ্য রফতানি আয় ১৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ কমেছে। এ বিষয়ে হিমায়িত খাদ্যসংশ্লিষ্ট রফতানিকারকদের সংগঠন বিএফএফইএর সভাপতি এসএম আমজাদ হোসেন বলেন, চিংড়ি ও হিমায়িত মাছ রফতানি আয়ে আগামীতে আরও বড় ধস নামার আশঙ্কা রয়েছে, যার প্রধান কারণ ইউরোপে মুদ্রার অবমূল্যায়ন। এ খাতে প্রায় ৮৫ শতাংশ রফতানি আয় আসে ইউরোপ থেকে। আর এ অঞ্চল থেকে প্রায় ৪০ শতাংশ দাম কম পেয়েছি আমরা, যার প্রভাব দেখা যাচ্ছে রফতানি আয়ে। ইপিবি’র প্রতিবেদনে দেখা যায়, প্লাস্টিক পণ্য রফতানি ১৪ দশমিক ০৭ শতাংশ, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানি ১ দশমিক ২২ শতাংশ, পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি ১ দশমিক ০৪ শতাংশ এবং হোম টেক্সটাইল পণ্য রফতানি ৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ কমেছে। ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান শুভাশীষ বসু বলেন, রফতানি আয়ের সর্বশেষ পরিসংখ্যান খুবই সন্তোষজনক চিত্র প্রকাশ করছে। পোশাক খাতসহ গুরুত্বপূর্ণ বেশকিছু খাতে রফতানি প্রবৃদ্ধি ভাল। তবে কৃষিপণ্যের চিত্র ভাল নয়। পণ্যটির মান নিয়ন্ত্রণ, মোড়কীকরণ ও তালিকাভুক্ত রফতানিকারকদের উন্নয়নের মাধ্যমে এ পরিস্থিতি পর্যায়ক্রমে ভাল করা সম্ভব হবে। গত অর্থবছরের প্রথম ৭ তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে পেট্রোলিয়াম বায়ো প্রোডাক্ট রফতানি আয় ৫৭৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া রবার ও রবারজাত পণ্য রফতানিতে ৩৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ, ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য রফতানি ২৪ শতাংশ, কাঠ ও কাঠজাত পণ্য রফতানিতে ৫৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ, কেমিক্যাল পণ্য রফতানিতে ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং হোম ওভেন গার্মেন্টস রফতানি আয় ১২ দশমিক ২৯ শতাংশ বেড়েছে।
×