ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রথম তিন মাসে লক্ষ্যমাত্রার পাঁচ ভাগেরও কম রাজস্ব আয় হয়েছে ॥ মুহিত

প্রকাশিত: ০৮:৩১, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

প্রথম তিন মাসে লক্ষ্যমাত্রার পাঁচ ভাগেরও কম রাজস্ব আয় হয়েছে ॥ মুহিত

সংসদ রিপোর্টার ॥ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত রাজস্ব আহরণের লক্ষ্য অর্জনে সরকারের তৎপরতা আরও বাড়ানো প্রয়োজন উল্লেখ করে বলেছেন, চলতি অর্থবছরের বাজেট বাস্তবায়নের প্রথম তিন মাসে লক্ষ্যমাত্রার পাঁচ ভাগেরও কম রাজস্ব আহরিত হয়েছে। তবে সরকারের প্রাজ্ঞ ব্যবস্থাপনায় স্থিতিশীল রয়েছে সামষ্টিক অর্থনীতির সকল খাত, আছে রাজনৈতিক সুস্থিতি। চলতি অর্থবছরের (২০১৫-১৬) প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) সামষ্টিক অর্থনীতির বেশিরভাগ সূচকই উর্ধমুখী। আর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার প্রক্ষেপণেও প্রবৃদ্ধির আশাব্যঞ্জক চিত্র পাওয়া যাচ্ছে। সামগ্রিকভাবে অর্থনীতির পালে সুবাতাস বইছে। রবিবার রাতে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে সরকারী অর্থ ও বাজেট ব্যবস্থাপনা আইন অনুযায়ী ‘বাজেট ২০১৫-২০১৬ ঃ প্রথম প্রান্তিক (জুলাই-সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ সংক্রান্ত প্রতিবেদন উত্থাপনকালে এ তথ্য জানান। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর অনুমতি নিয়ে কখনও দাঁড়িয়ে আবার কখনও নিজ আসনে গত ৬ মাসের বাজেট বাস্তবায়ন তুলে ধরেন। অর্থমন্ত্রী জানান, চলতি অর্থবছরে দুই লাখ আট হাজার ৪৪৩ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা হলেও এ সময়ে রাজস্ব আহরণের পরিমাণ মাত্র ৩৮ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা। তবে গত বছরের তুলনায় মূল্যস্ফীতি অনেকাংশ কমেছে। দেশে মূল্যস্ফীতি হ্রাসের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, গত বছরের সেপ্টেম্বর শেষে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ২৪ শতাংশ, যা বিগত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ। এই সময়ে ১২ মাসের গড় ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ২৪ শতাংশে, বিগত অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ৭ দশমিক ২২ শতাংশ। তিনি বলেন, কৃষি খাতের সন্তোষজনক উৎপাদন, আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যপণ্য ও জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাস, সরকারের দক্ষ সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সতর্কতামূলক মুদ্রানীতি মূল্যস্ফীতি হ্রাসে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে। অর্থমন্ত্রীর উত্থাপিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি প্রাক্কলন করা হয়েছে ৮৬ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫ শতাংশ। ঘাটতি অর্থায়নে বৈদেশিক সূত্র থেকে জিডিপির এক দশমিক সাত শতাংশ এবং অভ্যন্তরীণ সূত্র থেকে তিন দশমিক তিন শতাংশ সংস্থানের পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার বিষয়টি লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে সীমিত রাখতে প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি। চলতি অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রয়েছে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, জিডিপির শতাংশ হিসেবে সরকারী ঋণের স্থিতি ৩৫ শতাংশ। এটা অত্যন্ত সহনীয়। সার্বিকভাবে সরকারী ঋণ ব্যবস্থাপনায় সরকারের অবস্থানও বেশ ভাল। আমদানি ও রফতানি প্রসঙ্গে আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে রফতানি খাতের অর্জিত প্রবৃদ্ধি শূন্য দশমিক আট শতাংশ। ইঞ্জিনিয়ারিং ও ইলেকট্রিক দ্রব্যাদি, কাঁচা পাট, ওভেন গার্মেন্টস এবং রাসায়নিক দ্রব্য রফতানির ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি হলেও পাটজাত দ্রব্য (কার্পেট ব্যতীত), চা, হিমায়িত খাদ্য, চামড়া নিটওয়্যার এবং কৃষিজাত পণ্যের রফতানির প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হয়নি।
×