ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আজ থেকে ডরিনের আইপিও আবেদন শুরু

লোকসানি সাবসিডিয়ারির জন্য টাকা উত্তোলন

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

লোকসানি সাবসিডিয়ারির জন্য টাকা উত্তোলন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ আজ সোমবার থেকে চাঁদা উত্তোলন করতে যাচ্ছে ডরিন পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড। এই চাঁদা গ্রহণ চলবে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। কোম্পানিটি ২ কোটি শেয়ার ছেড়ে বাজার থেকে ৫৮ কোটি টাকা উত্তোলন করবে। আর এই টাকা ব্যবহার করা হবে লোকসানি দুই সাবসিডিয়ারি ঢাকা সাউদার্ন পাওয়ার জেনারেশন ও ঢাকা নর্দার্ন পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির ব্যবসায়িক কাজে। যে কোম্পানি দুইটি পুঞ্জীভূত লোকসানের কবলে রয়েছে। কোম্পানি দুইটি এখনও উৎপাদনে নেই। কোম্পানিটির প্রসপেক্ট্রাস বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত ২০১২-১৩ অর্থবছর থেকে ব্যবসা শুরু করা ঢাকা সাউদার্ন পাওয়ার জেনারেশন ও ঢাকা নর্দার্ন পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি দুটি এখনো উৎপাদন শুরু করতে পারেনি। তবে এরই মধ্যে ২০১২-১৩, ২০১৩-১৪ ও ২০১৪-১৫ এই তিন অর্থবছরে লোকসান করেছে। এই তিন বছরে ঢাকা সাউদার্ন পাওয়ার জেনারেশন ৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ও ঢাকা নর্দার্ন পাওয়ার জেনারেশন ৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা লোকসান করেছে। সাবসিডিয়ারি কোম্পানি দুটিতে ডরিন পাওয়ারের মালিকানা রয়েছে ৭৫.৫০ শতাংশ করে। যে কারণে সাবসিডিয়ারি কোম্পানি দুটির লোকসান কিছুটা পড়েছে ডরিন পাওয়ারের ওপর। বাংলাদেশ এ্যাকাউন্টিং স্টান্ডার্ড (বিএএস)-১৬ অনুযায়ী, ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অবচয়যোগ্য সম্পদ। তবে ডরিন পাওয়ার কর্তৃপক্ষ ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সম্পদের উপরে অবচয় চার্জ না করে মুনাফা ও সম্পদ বেশি দেখিয়েছে। ডরিন পাওয়ার কোম্পানি ২০০৮-৯ অর্থবছরে উৎপাদন শুরু করে। ১ কোটি ১০ লাখ টাকার মূলধন দিয়ে কোম্পানিটি ২০০৮-৯, ২০০৯-১০ ও ২০১০-১১ এই ৩ অর্থবছরে মুনাফা করে ৫৮ কোটি ৮২ লাখ টাকা। এরপরে কোম্পানিটির উদ্যোক্তারা ২০১১-১২ অর্থবছরে এই মুনাফার প্রায় সবটুকু বোনাস শেয়ার হিসেবে গ্রহণ করে। তবে এরপরে বোনাস শেয়ার প্রদান না করায় ২০১৪-১৫ অর্থবছর শেষে ৭৩ কোটি ৭৭ লাখ টাকার সংরক্ষিত আয় (কনসোলিডেট) রয়েছে। দেখা গেছে, ১ কোটি ১০ লাখ টাকা মূলধনের কোম্পানিটি ২০১১-১২ অর্থবছরে ৬০ কোটি টাকা হয়ে যায়। পুরোটাই এসেছে ৫৩৫৪.৫৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার থেকে। তবে এই মূলধন বৃদ্ধি ও পরবর্তী সময়ে সংরক্ষিত আয় বাড়লেও মুনাফার পরিমাণও কমতে থাকে। যা সর্বশেষ ২০১৪-১৫ অর্থবছরে এসেও সেই ধারাবাহিকতা রয়েছে। ডরিন পাওয়ার কোম্পানিটি ২০১০-১১ অর্থবছরে মুনাফা করে ২৭ কোটি ১৪ লাখ টাকা। তবে এরপরে ২০১১-১২ অর্থবছরে ২৪ কোটি ৫২ লাখ, ২০১২-১৩ অর্থবছরে (কনসোলিডেট) ১৩ কোটি ২৯ লাখ, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে (কনসোলিডেট) ১৪ কোটি ৯৮ লাখ ও ২০১৪-১৫ অর্থবছরে (কনসোলিডেট) ১২ কোটি ৫১ লাখ টাকা মুনাফা করে। ৩০ জুন ২০১৫ তারিখে ডরিন পাওয়ারের শেয়ারপ্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৩৬.৯৯ টাকা। যা আইপিও পরবর্তী সময়ে কমে দাঁড়াবে ৩৪.১৬ টাকায়। এক্ষেত্রে আইপিওধারীরা শেয়ারপ্রতি ২৯ টাকা করে বিনিয়োগ করলেও ৩৪.১৬ টাকার মালিকানা পাবে। যাতে আইপিওধারীরা শেয়ারপ্রতি ৫.১৬ টাকা করে লাভবান হবেন। আর উদ্যোক্তারা ২.৮৩ টাকা করে লোকসান করবে। কোম্পানিটির ইস্যু ম্যানেজার এ্যালায়েন্স ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, এ্যাকাউন্টিং স্টান্ডার্ড ল্যান্ড ডেভেলপমেন্টের ওপরে অবচয় চার্জ করতে হয় কিন্তু আমাদের দেশে এ প্র্যাকটিস নেই বললেই চলে। এই বিষয়ে ডরিন পাওয়ারে প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) আফরোজ আলম বলেন, উৎপাদনে শুরু না হওয়ার কারণে সাবসিডিয়ারি কোম্পানি দুটি লোকসানে রয়েছে। তবে আগামী ২ মাস পরে উৎপাদনে গেলে মুনাফায় ফিরে আসবে। আর এই সাবসিডিয়ারি কোম্পানির লোকসানের কারণে মুনাফা কমছে।
×