ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

শিল্প রসিকদের পদচারণায় জমজমাট ঢাকা আর্ট সামিট

প্রকাশিত: ০৫:২১, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

শিল্প রসিকদের পদচারণায় জমজমাট ঢাকা  আর্ট সামিট

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালায় চলছে ঢাকা আর্ট সামিট। দক্ষিণ এশিয়ার শিল্প ও শিল্প-ভাবনা উপস্থাপিত হচ্ছে এই সম্মেলনে। এক ছাদের নিচে বহুমাত্রিক শিল্পসম্ভারে সেজেছে বৃহৎ এই প্রদর্শনালয়টি। শিল্পের সকল শাখার উপস্থাপনে অনন্য রূপ পেয়েছে আন্তর্জাতিক এই আয়োজনটি। একজন শিল্পরসিককে যতটা শিল্পসম্ভারে মুগ্ধ করা যায় তার সবটুকুই যেন ধারণ করেছে এই শিল্পযজ্ঞ। প্রথম তলা থেকে চতুর্থ তলা পর্যন্ত প্রদর্শনালয়ে উপস্থাপন করা হয়েছে চিত্রকর্ম, ভাস্কর্য, স্থাপনাশিল্প, আলোকচিত্র, পারফর্মিং আর্ট, এদেশের স্থাপত্য নক্সার নমুনাসহ বহুমাত্রিক শিল্পের সমাহার। আর এমন অনবদ্য প্রয়াসটি সহজেই নজর কেড়েছে রাজধানীর শিল্পরসিকদের। আপন মননের খোরাক মেটাতে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত অবধি হাজার শিল্পরসিক হাজির হচ্ছেন এখানে। দক্ষিণ এশীয় শিল্পধারার রস আস্বাদনে তাঁদের সরব উপস্থিতিতে জমজমাট রূপ নিয়েছে এই সামিট। আজ সোমবার চার দিনব্যাপী সেই মহাযজ্ঞের সমাপ্তি হচ্ছে। সামদানি আর্ট ফাউন্ডেশন ও শিল্পকলা একাডেমির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত শিল্প সম্মেলনের তৃতীয় দিন ছিল রবিবার। এদিনও শিল্পী ও শিল্পানুরাগীদের উপস্থিতিতে উৎসবমুখরতায় রূপ নিয়েছে সম্মেলন। সকালে শিল্পকর্ম অবলোকনের টানে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা হাজির হয়েছিল চিত্রশালায়। এছাড়া দিনভর নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ জমায়েত হয়েছেন এই শিল্পযজ্ঞে। দুপুরের পর ভিআইপি লাউঞ্জে ছিল প্রদর্শনীর ব্যবস্থাপনা ও শিল্পকলার বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক আলোচনা। নিরীক্ষামূলক চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী ছিল চিত্রশালার মিলনায়তনে। বিকেলে কথা হয় ধানম-ির বাসিন্দা ফারজানা নাহিদের সঙ্গে। চোখে-মুখে মুগ্ধতার প্রকাশ ঘটিয়ে এই শিল্পপিপাসু বলেন, এই আয়োজনটি আমাদের দক্ষিণ এশিয়ার সকল দেশের শিল্পধারা অবলোকনের দুর্লভ সুযোগ এনে দিয়েছে। সব কিছু দেখে আমি অভিভূত। এদেশের শিল্পীদের পাশাপাশি প্রতিবেশী ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, নেপাল ও ভুটালের শিল্পীদের কাজ দেখার উপলক্ষ্য হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে এই সম্মেলন। রবিবার এই শিল্প সম্মেলন দেখা হয় প্রখ্যাত ভাস্কর হামিদুজ্জামান খানের সঙ্গে। তিনি বলেন, এই সম্মেলনটি এদেশের শিল্পকলার ইতিহাসে একটি বড় ঘটনা। এর মাধ্যমে এশিয়ার অন্য দেশগুলোর শিল্পধারায় আমাদের দোরগোড়ায় এসে পৌঁছেছে। অন্য দেশের শিল্পীদের কাজটি আমরা সরাসরি স্বচক্ষে দেখার সুযোগ পাচ্ছি। আর এই দেখার ফলে আমাদের শিল্পচর্চাটিও আরও বেশি বেগবান হবে। খুবই সুশৃঙ্খলভাবে এমন আন্তর্জাতিক শিল্প আয়োজনটি বিশেষ প্রশংসার দাবি রাখে। এ সম্মেলনে ১৭টি একক শিল্পকর্মের কিউরেটরের দায়িত্ব পালন করেছেন সামদানি আর্ট ফাউন্ডেশনের আর্টিস্টিক ডিরেক্টর ডায়ানা ক্যাম্পবেল। বাংলাদেশের শিল্পকর্মের প্রদর্শনীর কিউরেটরের দায়িত্ব পালন করছেন গ্যালারি চিত্রকের নির্বাহী পরিচালক শিল্পী মনিরুজ্জামান। সামিটে দক্ষিণ এশিয়ার বিশিষ্ট শিল্পী ও বিশ্বের খ্যাতিমান আর্ট মিউজিয়ামগুলোর প্রতিনিধি এবং দেশ-বিদেশের ৩৩টি গ্যালারি তাদের সংগ্রহ নিয়ে অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের ১১টি স্বনামধন্য গ্যালারি অংশ নিচ্ছে। তৃতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত উন্মুক্ত এই শিল্প সম্মেলন শেষ হবে আজ ৮ সোমবার। সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। সাংস্কৃতিক জোটের একুশের অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন আজ ॥ রাষ্ট্র চলবে বাংলায় না চলা অন্যায়- এ সেøাগানকে ধারণ করে আজ সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত ১৪ দিনব্যাপী একুশের অনুষ্ঠানমালা। আজ বিকেল ৪টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জোটের একুশের অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন হবে। সম্মিলিতভাবে একুশের অনুষ্ঠানমালা উদ্বোধন করবেন ভাষাসৈনিক বিচারপতি কাজী এবাদুল হক, ভাষাসৈনিক অধ্যাপক ড. শরীফা খাতুন, ভাষাসৈনিক অধ্যাপক ফুলে হোসেন, ভাষাসৈনিক রওশন আরা বাচ্চু ও ভাষাসৈনিক সাবির আহমেদ চৌধুরী। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আলোচনায় অংশ নেবেন জোট নেতৃবৃন্দসহ জোটভুক্ত বিভিন্ন ফোরামের নেতৃবৃন্দ। স্বাগত বক্তব্য রাখবেন জোটের সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ। শেষ হলো জাতীয় পথনাট্যোৎসব ॥ শেষ হলো বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন আয়োজিত আট দিনে জাতীয় পথনাট্যোৎসব । রবিবার ছয়টি নাটকের প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে শেষ হয় এবারের আয়োজন। সমাপনী দিনে লোক নাট্যদল (সিদ্ধেশ্বরী) পরিবেশন করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ও লিয়াকত আলী লাকী নিদের্শিত ‘রথযাত্রা’। দৃষ্টিপাত নাট্যদল পরিবেশন করে আবদুল হালিম আজিজ ও বৈদ্যনাথ অধিকারীর নিদের্শিত ‘আলোর মশাল জ্বালো’।
×