ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

তুর্কি সীমান্তে হাজার হাজার শীতার্ত শরণার্থী

আলেপ্পো থেকে বিদ্রোহীরা পালাচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:০৩, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

আলেপ্পো থেকে বিদ্রোহীরা পালাচ্ছে

রুশ বিমান ও সিরীয় সরকারী বাহিনী সিরীয় শহর আলেপ্লোর বিদ্রোহী অধিকৃত এলাকাগুলোর ওপর হামলা তীব্রতর করেছে। এ হামলার হাত থেকে রেহাই পেতে আশ্রয়ের আশায় হাজার হাজার শরণার্থী প্রচ- শীত উপেক্ষা করে তুর্কি সীমান্তে পালিয়ে যায়। এতে নতুন এক মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এদিকে সিরিয়ায় সৈন্য পাঠানোর বিরুদ্ধে দামেস্ক রিয়াদ ও আঙ্কারাকে সতর্ক করে দিয়েছে। আর সিরীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়ালিদ আল-মুয়ালেম অস্ত্রবিরতির যে কোন আশাও বিলীন করে দিয়েছে। তিনি বলেন, যতদিন বিদ্রোহীরা তুরস্ক ও জর্দান সংলগ্ন সীমান্ত অবাধে পারাপার করতে পারবে, ততদিন যুদ্ধ বন্ধ করা অসম্ভব। শীঘ্রই সরকারী বাহিনীর হাতে আলেপ্পোর পতন হতে পারে বলে ত্রাণকর্মীরা সতর্ক করে দিয়েছেন। খবর এএফপি ও ইয়াহুনিউজের। সিরীয় সরকার বলেছে, সিরিয়ায় প্রবেশ করবে এমন যে কোন অনাহুত বিদেশী সৈন্যকেই ‘কাঠের কফিনে’ করে তার দেশে ফিরে যেতে হবে। এর আগে বিদ্রোহী বাহিনীর সমর্থক সৌদি আরব ও তুরস্ক সৈন্য মোতায়েন করতে পারে বলে খবর বেরোয়। চলতি সপ্তাহে রুশ বিমান হামলার সমর্থনপুষ্ট সরকারী বাহিনী উত্তরাঞ্চলীয় আলেপ্পো অভিমুখী বিরোধী পক্ষের প্রধান সরবরাহ পথ বিচ্ছিন্ন করে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে এগিয়ে যায়। তখন হাজার হাজার লোক তীব্র লড়াইয়ের হাতে থেকে বাঁচতে তুরস্ক সীমান্তের দিকে ছুটে চলে। সিরিয়ার অভ্যন্তরে বাব আল সালামার বিপরীত দিকে তুর্কি অনকুপিনার সীমান্ত ক্রসিং শনিবার বন্ধ থাকে। এএফপির সংবাদদাতা এ কথা জানান। জাতিসংঘ বলেছে, প্রায় ২০ হাজার লোক বাব আল সালামাতে সমবেত হয় কিন্তু তুরস্কের কিনিস সীমান্ত প্রদেশের গবর্নর সুলেমান তাপসিজ বলেন, অন্তত ৭০ হাজার লোক সীমান্তের দিকে পালিয়ে আসতে পারে। তাপসিজ বলেন, বাস্তুহারা ব্যক্তিদের সিরীয় অংশে আটটি শিবিরে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। তুরস্ক সিরিয়ার ভেতর ৩০-৩৫ হাজার শরণার্থীর যতœ নিতে প্রস্তুত। তুরস্কে ইতোমধ্যেই ২০-২৫ লাখ সিরীয় অবস্থান করছে। তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুভ কাভুসোগল বলেন, তার দেশ সিরীয় শরণার্থীদের জন্য ‘উন্মুক্ত সীমান্ত নীতি’ বজায় রাখবে। আলেপ্পোভিত্তিক বিদ্রোহীপন্থী বার্তা সংস্থা শাহবা প্রেসের ডিরেক্টর মামুন আল-খতিব বলেন, সীমান্তে এবং পার্শ্ববর্তী সিরীয় শহর আজাজে হাজার হাজার লোক খোলা জায়গায়, মাঠে ও রাস্তায় নিদ্রাযাপন করছে। ব্রিটেনভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইট জানায়, সোমবার সরকারী বাহিনীর অভিযান শুরু হওয়ার পর ৭১ বেসামরিক ব্যক্তিসহ ৪৩৫ ব্যক্তি নিহত হয়। বেসামরিক লোকজনের বেশির ভাগই রুশ বিমান হামলায় নিহত হয়। ১২৪ সরকারী সৈন্য, আল কায়েদার সিরিয়া শাখা আল নুসরা ফ্রন্টের ৯০ জিহাদী ও ১৫০ জন অন্য বিদ্রোহীও নিহত হয়। রিয়াদ বলেছে, যদি সিরিয়ায় আইএস বিরোধী মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট স্থল অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে সৌদি আরব ইতিবাচক সহায়তা করবে। দামেস্কের বড় মিত্র রাশিয়া সিরিয়ায় সশস্ত্র আক্রমণের প্রস্তুতি নেয়ার দায়ে তুরস্ককে অভিযুক্ত করে। তুরস্ক অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করে। মুয়ালেম তার হুঁশিয়ারিতে বলেন, কারও জন্য সিরিয়া আক্রমণ বা এর সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করার কথা না ভাবাই ভাল। কারণ যে কোন আক্রমণকারীকেই কাঠের এক কফিনে করে নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে, সে সৌদিই হোক আর তুর্কিই হোক।
×