ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

অর্থাভাবে ধুঁকে ধুঁকে মরছেন শেখ রিয়াজ

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

অর্থাভাবে ধুঁকে ধুঁকে মরছেন শেখ রিয়াজ

বিপ্লবী ভাষাসৈনিক অধ্যাপক শেখ রিয়াজ উদ্দিন আহমদ। অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় বাসায় ধুঁকে ধুঁকে মরতে বসেছেন এই ভাষাসৈনিক মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। আগে ফেব্রুয়ারি এলে হাঁক ডাক পড়েছে। এখন আর কেউ তাঁর খোঁজ নেয় না। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত ময়মনসিংহের এই উজ্জ্বল নক্ষত্র রাজপথ ও যুদ্ধের ময়দানে বীরত্বের ছাপ রেখেছেন। অথচ তাঁর ভাগ্যে মেলেনি রাষ্ট্রীয় কোন সহায়তা, স্বীকৃতি কিংবা মর্যাদা। অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় গত দুই বছর ধরে বিছানায় পড়ে আছেন গফরগাঁওয়ের বিপ্লবী ভাষাসৈনিক মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক শেখ রিয়াজ উদ্দিন আহমদ। ময়মনসিংহ শহরের বলাশপুর পালপাড়ার বাসায় জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে শেখ রিয়াজকে নাকে নল দিয়ে দেয়া হচ্ছে তরল খাবার। স্বাভাবিক পথে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে পারেন না বলে ক্যাথেটার পরানো হয়েছে। চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্য চেয়ে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ২০১৫ সালের ৮ মার্চ প্রধানমন্ত্রী বরাবর আবেদন করেছিলেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত মেলেনি কোন সহায়তা। শেখ রিয়াজের বিশ্বাস, প্রধানমন্ত্রীর কানে তাঁর মানবিক আবেদনটি পৌঁছালে চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়ে যাবে। কিডনি, হার্ট ও ডায়াবেটিসসহ নানাসব জটিল রোগে আক্রান্ত অধ্যাপক শেখ রিয়াজ গত দুই বছর ধরে শয্যাশায়ী। এ সময় বাথরুমে পড়ে তাঁর পা ভেঙ্গে যায়। অর্থাভাবে পায়ের কোন চিকিৎসাই করাতে পারেননি। স্ত্রী ফাতেমা জানান, বর্তমানে বিছানাতেই চলছে প্রস্রাব-পায়খানা। মুখে কোন খাবার খেতে পারছেন না বলে নাকে নল দিয়ে খাওয়ানো হচ্ছে তরল খাবার। এ নিয়ে পরিবারের সদস্যরা হতাশ হয়ে ভেঙ্গে পড়েছে। সাহায্যের জন্য এখন আর কাউকে কিছু জানাতেও চায় না। এ অবস্থায় ধুঁকে ধুঁকে মরতে বসেছেন অধ্যাপক শেখ রিয়াজ। একুশ ফেব্রুযারি ঢাকার রাজপথে পুলিশের গুলিতে শহীদ হয়েছেন গফরগাঁওয়ের আবদুল জব্বার- এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ২২ ফেব্রুয়ারি খোদাদাদ খানের নেতৃত্বে দোগাছিয়ার আবদুল বাতেন, মাইজবাড়ির মকবুল হোসেন খান ও গফরগাঁওয়ের আবুল হোসেনসহ শেখ রিয়াজ প্রতিবাদ মিছিল, থানা ঘেরাওসহ নানা আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। মিছিল থেকে পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেফতার করলেও ব্রহ্মপুত্রে ঝাঁপিয়ে আত্মরক্ষা করেন শেখ রিয়াজ। পুলিশের গ্রেফতার এড়াতে টানা দুই বছর ছিলেন আত্মগোপনে। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে আগরতলার সোনার বাংলা ইয়থ ক্যাম্পের ইনচার্জের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। Ñবাবুল হোসেন, ময়মনসিংহ থেকে
×