ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিপুলসংখ্যক জঙ্গী হতাহত ॥ মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্ট

আইএস যোদ্ধার সংখ্যা ২০ শতাংশ কমেছে

প্রকাশিত: ০৫:০৩, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

আইএস যোদ্ধার সংখ্যা  ২০ শতাংশ কমেছে

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুযায়ী ইরাক ও সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের (আইএস) যোদ্ধার সংখ্যা ৩১ হাজার থেকে কমে ২৫ হাজারে এসে দাঁড়িয়েছে। গোয়েন্দা প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। খবর এনডিটিভি ও বিবিসির। আইএস’র যোদ্ধার সংখ্যা প্রায় ২০ শতাংশ কমে যাবার ব্যাখ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা লড়াইয়ে হতাহত হওয়া ও বাহিনী ছেড়ে চলে যাওয়ার মতো বিষয়গুলোর কথা উল্লেখ করেছেন। প্রতিবেদনে আইএস নির্মূলে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন অভিযানে অগ্রগতি হচ্ছে দেখানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তারা। হোয়াই হাউসের মুখপাত্র জোশ আর্নেস্ট বলেন, নতুন প্রতিবেদন অনুযায়ী আইএস’র হুমকি যথেষ্ট বজায় আছে। তবে তাদের সামর্থ্য হ্রাস পেয়েছে। উল্লেখযোগ্য হতাহত সত্ত্বে¡ও আইএস অস্তিত্ব বজায় রেখেছে। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বধীন জোটের স্থলযুদ্ধের প্রচেষ্টাও আইএস বিরোধী লড়াইয়ে প্রভাব রেখেছে। ইরাকী নিরাপত্তা বাহিনী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলোর বেসামরিক বাহিনী এবং সিরিয়ার মধ্যপন্থী সরকারবিরোধী গোষ্ঠীগুলোকে দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন এ ক্ষেত্রে অবদান রেখেছে বলে দাবি করেন তিনি। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বিমান অভিযানও অবদান রেখেছে। এছাড়া আইএসে যোগ দিতে ইচ্ছুক বিদেশীদের ঠেকানোর জন্য আন্তর্জাতিক উদ্যোগ ফল পেতে শুরু করেছে। আর্নেস্ট বলেন, শূন্যস্থানগুলো পূরণ করা আইএসের জন্য দিন দিন কঠিন হয়ে পড়ছে। আগের মতো আর শূন্যস্থান পূরণ করতে পারছে না তারা। আর ওই অঞ্চলে বিদেশী যোদ্ধাদের আগমন ঠেকানোর জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা যে প্রয়োজন সে বিষয়েও আমরা অনেক সতর্ক ছিলাম। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন এই গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরাক ও সিরিয়ায় আইএস’র যোদ্ধার সংখ্যা ১৯ হাজার থেকে ২৫ হাজারের মধ্যে। ২০১৪ সালে তাদের সংখ্যা ২০ হাজার থেকে ৩১ হাজারের মধ্যে ছিল। শীর্ষ নেতারা আশ্রয় নিয়েছে লিবিয়ায় ॥ ইরাক ও সিরিয়ার জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বেশ কয়েকজন শীর্ষনেতা সাম্প্রতিক মাসগুলোতে লিবিয়ায় আশ্রয় নিয়েছে। লিবিয়ার মিসরাতা শহরের গোয়েন্দা প্রধান ইসমাইল শুকরি বিবিসির নিউজ টাউন অনুষ্ঠানে একথা বলেছেন। শুকরি জানান, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে লিবিয়ার সির্তে শহরে বিদেশী যোদ্ধাদের আগমনের হার ক্রমশ বাড়ছে। গত বছর সির্তে শহরের নিয়ন্ত্রণ নেয় আইএস। এটি লিবিয়ার প্রয়াত নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির জন্মস্থান। সাবেক এই স্বৈরশাসকের অনুগত কিছু ব্যক্তির কাছ থেকে আইএস সমর্থন পাচ্ছে। শুকরি বলেন, সির্তের আইএস যোদ্ধাদের অধিকাংশই বিদেশী। এই সংখ্যা প্রায় ৭০ শতাংশ। তাদের অধিকাংশই তিউনিসীয়। এছাড়া মিসর, সুদান, আলজিরিয়া, ইরাক ও সিরিয়ার যোদ্ধাও রয়েছেন। ইরাকীদের মধ্যে বেশিরভাগই দেশটির প্রয়াত শাসক সাদ্দাম হোসেনের সেনাবাহিনীর সদস্য। ইরাক ও সিরিয়ায় আন্তর্জাতিক জোট বাহিনীর ব্যাপক বিমান হামলার প্রেক্ষিতে আইএসের জ্যেষ্ঠ নেতারা লিবিয়াকে নিরাপদ ঘাঁটি মনে করছে। এদিকে মিসরাতার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা সির্তে শহরে আইএসের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। লিবিয়ায় আইএসের হুমকি বেড়ে যাওয়ায় গত মঙ্গলবার ২৩টি দেশের প্রতিনিধিরা রোমে এক বৈঠক করেন। বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। লিবিয়ার বিবদমান প্রশাসনের মধ্যে মতবিরোধের কারণে সেখানে আইএস বিরোধী তৎপরতা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
×