ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সাংস্কৃতিক চেতনায় উন্নয়ন ঘটাতে হবে : অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২২:২২, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সাংস্কৃতিক চেতনায় উন্নয়ন ঘটাতে হবে : অর্থমন্ত্রী

অনলাইন রিপোর্টার ॥ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থান একটি মজবুত ভিতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি আমাদের মানসিক অবস্থানের অর্থাৎ সাংস্কৃতিক চেতনায় উন্নয়ন ঘটাতে হবে। তিনি বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার সরকার সুচারুভাবে তা করে চলেছে। এর যেন কোন ব্যত্যয় না হয়, সে লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী তা প্রতিনিয়ত আমাদের স্মরণ করিয়ে দেন’। আজ শুক্রবার শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা প্লাজায় ‘ঢাকা আর্ট সামিট-২০১৬’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় সামদানি আর্ট ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে চার দিনব্যাপি এ সামিটে বিশেষ অতিথি ছিলেন বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এবং সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর । অর্থমন্ত্রী বলেন, শিল্পচর্চায় বাংলাদেশ অনেক পুরোনো, সেই মুঘল আমল থেকে। মুঘল সা¤্রাজ্যের অব্যাহতি পর থেকেই এ অঞ্চলে আধুনিক শিল্পচর্চারও শুরু হয়। তিনি বলেন, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর রাজত্বকালে এখানে শিল্পচর্চার একটি ধারা চালু হয়। শিল্পের ওই ধারাটিই আমাদের আধুনিক ধারার দিকে নিয়ে গেছে। মুহিত বলেন, ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর বাংলাদেশ জয়নুল আবেদিন, কামরুল হাসান ও শফিউদ্দিনের মত শিল্পীদের পেয়েছিল। যারা আমাদের শিল্পকলাকে একটি সমৃদ্ধ স্থানে নিয়ে গেছেন। তিনি বলেন, তাদের হাত ধরেই বাংলাদেশে আধুনিক শিল্পচর্চা শুরু হয়। এতে কাইয়ুম চৌধুরীরও অবদান কম নয়। ঢাকা সামিটেও বৃহৎ এশীয় শিল্পচর্চার পরিচয় পাওয়া যাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। রাশেদ খান মেনন বলেন, ৫২’র ভাষা আন্দোলন যে শুধু ভাষাকে রক্ষা করেছে তা নয়, সেই সাথে আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতি বিকাশে ভূমিকা রেখেছে। তিনি বলেন, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন থেকে শুরু করে প্রথিতযশা শিল্পবোদ্ধারা তাদের প্রতিভা দিয়ে আমাদের সংস্কৃতিকে যেমন সমৃদ্ধ করেছেন, তেমনি তা তুলে ধরেছেন বিশ্বে। ২০১৮ সালের মধ্যে বাংলাদেশে পর্যটকের সংখ্যা দ্বিগুণ হবে আশা প্রকাশ করে পর্যটন মন্ত্রী বলেন, সরকার ২০১৬ সালকে পর্যটন বছর ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের অপার সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি এ দেশ সম্পর্কে জানতে এবং এ দেশের ধর্মীয় ও জাতীয় উৎসবসহ সমৃদ্ধ সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হতে তিনি বিদেশীদের বাংলাদেশ ভ্রমণের আহবান জানান। শেখ হাসিনার সরকার সংস্কৃতিবান্ধব-এ কথা উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, একটি অপশক্তি শিল্পী-সাহিত্যিক, ধর্মযাজক ও বিদেশী নাগরিকদের উপর আঘাত হানছে। তাদের প্রতিহত করতে আমাদের সাংস্কৃতিক চেতনায় হৃদ্ধ হতে হবে। ঢাকা সামিটের মত আয়োজনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মাধ্যমে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে ওই অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। চার দিনব্যাপি এ সামিটে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিল্পীদের শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে ৫ শতাধিক বিদেশী শিল্পী, কিউরেটর ও শিল্প সমালোচক এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন। প্রদর্শনীতে জলরং, তেলরং, এ্যাক্রেলিকের চিত্রকর্ম ছাড়াও আলোকচিত্র, স্থাপত্যকলা, মূর্ত ও বিমূর্ত শিল্পকলা, সলো প্রজেক্ট, ফিল্ম প্রোজেকশন ইত্যাদি প্রদর্শিত হচ্ছে। প্রদর্শনী চলবে ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তৃতা করেন সামিট আয়োজন কমিটির সভাপতি ফারুক সোবহান ও সামদানি আর্ট ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট নাদিয়া সামদানি। অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া ব্লুম বার্নিকাট উপস্থিত ছিলেন।
×