ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রতিপক্ষ নেপাল

আজ জিতলেই সেমিফাইনালে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৭:২৪, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

আজ জিতলেই সেমিফাইনালে বাংলাদেশ

মিথুন আশরাফ ॥ অনুর্ধ-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে এর আগে ১০ আসর হয়েছে। একটি আসরেও সুপার লীগের সেমিফাইনালে খেলতে পারেনি বাংলাদেশ যুব দল। এবার সেই সুযোগ ধরা দিয়েছে। আজ সুপার লীগের কোয়ার্টার ফাইনালে নেপাল যুব দলের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। সকাল ৯টায় মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে। ম্যাচটিতে জিতলেই প্রথমবারের মতো যুব বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ যুবদল ১৯৯৮ সালে প্রথমবার প্লেট চ্যাম্পিয়ন হয়। এছাড়া ২০০৪ সালের ঘরের মাঠে এবং ২০১০ ও ২০১৪ সালেও প্লেট চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। এখন পর্যন্ত মাত্র তিনবার গ্রুপ পর্ব পেরিয়ে সুপার লীগে খেলতে পেরেছে বাংলাদেশের যুবারা। সেরা সাফল্য ২০০৬ সালে, শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত যুব বিশ্বকাপে পঞ্চম স্থান অর্জন। এবার যেহেতু সেমিফাইনালে খেলার সুযোগ ধরা দিয়েছে, সেই সুযোগটি কাজে লাগাতে চায় বাংলাদেশ যুবদল। বাংলাদেশ অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজই সেই আশা ব্যক্ত করেছেন। বলেছেন, ‘আসলে নেপাল সম্পর্কে জানি। ওদেরকে সহজভাবে নেয়ার কিছু নেই। ওরা যেহেতু কোয়ার্টার ফাইনালে কোয়ালিফাই করেছে, অবশ্যই তারা ভাল দল। ওদের হালকাভাবে নিলে আমাদের সমস্যা হবে। যেভাবে দিনে দিনে উন্নতি করছি, যেভাবে চলছে, ওই প্রসেসে থাকব। ইনশাআল্লাহ ভাল কিছু হবে।’ প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালে খেলার হাতছানি নিয়ে মিরাজ বলেন, ‘বাংলাদেশ এর আগে কখনও সেমিফাইনাল খেলেনি, যদি নেপালের সঙ্গে জিততে পারি, সেটি অনেক বড় অর্জন হবে। এখন যে পর্যায়ে আছি, এখানে হারলে আর সুযোগ নেই। বাদ পড়ে যেতে হবে। আগের চেয়ে মনোযোগ বেশি থাকবে। যেহেতু নকআউট খেলা। জিতলে ওপরে যাব, হারলে নিচে নেমে যেতে হবে। এখানে কাউকে ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই।’ মুশফিকের মতো বড় বড় ক্রিকেটার এই দলটার অধিনায়ক ছিলেন। ঘরের মাঠে প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনাল খেলতে যাচ্ছে আপনার নেতৃত্বে? এ প্রশ্নের জবাবে মিরাজ জানান, ‘যেহেতু কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছি, এটা আমাকে অনুপ্রাণিত করছে। ভাল লাগছে। এর আগে মুশফিক ভাইয়েরা ভাল পজিশনে ছিল। আমাদের সামনেও ভাল যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। চেষ্টা করব সুযোগটা কাজে লাগানোর। বিন্দু মাত্র ছাড় দেব না। ব্যাটসম্যান-বোলাররা যা করছে সেটাই করবে, নতুন করে কিছু করব না। নতুন কিছু করতে গেলে সমস্যা হবে। আগের তিনটা ম্যাচ যেভাবে খেলেছি, কোয়ার্টার ফাইনালও সেভাবে খেলব।’ নেতৃত্ব কতটা উপভোগ্য? মিরাজ উপভোগ করছেন বলেই জানান, ‘নেতৃত্ব খুবই উপভোগ করি। খেলোয়াড়েরা সবাই দারুণ সহায়তা করে। সিনিয়র শান্ত-ইমন-জাকির এবং জুনিয়ররাও সহায়তা করে। দলের সবাই পারফর্ম করছে। অধিনায়ক হিসেবে এটাই চাই, সবাই পারফর্ম করবে, দল ভাল করবে। অধিনায়ক হিসেবে আমি ভাল খেললে এবং দলের সবাই পারফর্ম করলে ভাল ফল পাব।’ পারফর্মেন্স দুই একজনের কাছ থেকে ভাল মিলছে। তবে ওপেনিং নিয়ে সমস্যা লেগেই আছে। সবাই পারফর্ম করছে না, বিশেষ করে ওপেনিংয়ে। মিরাজ এ নিয়ে বলেন, ‘আমরা খেলি দলীয় পরিকল্পনা অনুযায়ী। কক্সবাজারে উইকেটমন্থর দেখে দলের পরিকল্পনা ছিল, ওপেনারদের ধীর-লয়ে খেলতে হবে। সাইফ-ইমন ওভাবেই খেলেছে। এখানে উইকেটটা ভিন্ন হতে পারে। এখানে আমরা অভ্যস্থ। উইকেট ভাল থাকলে শুরুর দিকে ব্যাটসম্যানরা হয় তো শট খেলবে। রান তোলার চেষ্টা করবে।’ বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকাকে অনায়াসে হারানোর পর স্কটল্যান্ড ও নামিবিয়া পাত্তাই পায়নি। এমন মুহূর্তে সমস্যাগুলো নজরে না থাকাটাই স্বাভাবিক। মিরাজও যেন সেদিকেই ইঙ্গিত করলেন। বললেন, ‘যখন দল ভাল খেলে, তখন সমস্যার কথা আলোচনা করা হয় না। তবে আমাদের ভিডিও এ্যানালিস্ট আছে, কোচ আছেন, স্টুয়ার্ট ল আছেন। কেউ যদি ভুল শট খেলে আউট হয়, অনুশীলনে সবাই ওই ভুলটা নিয়ে কাজ করে। তখন খেলোয়াড় ধরে ধরে কাজ করা হয়। যাতে একই ভুল আবার না করা হয়। খেলোয়াড়েরাও চেষ্টা করে ওই ভুলটা আবার না করতে।’ বাংলাদেশ যে এতদূর এসেছে, এর পেছনে পরামর্শক স্টুয়ার্ট ল’রও অবদান আছে। দলটাকে চাপ মুক্ত রাখছেন তিনি। সেটিই জানালেন বাংলাদেশ যুব দলের অধিনায়ক, ‘শুরুতে আমাদের যে মনোযোগ থাকে, শেষ পর্যন্ত মনোযোগটা একইভাবে থাকে। তিনি মাঠে খেলাটা চাপ হিসেবে না নিয়ে উপভোগ করতে বলেন। দলীয় পরিকল্পনা অনুযায়ী খেললে আমাদের ভাল হবে।’ মিরাজ, শান্ত, শাওন, সাইফুদ্দিনদের দৃষ্টিতে দেশের প্রতিনিধিত্ব করাই মূল। দেশকে সম্মান এনে দেয়াই মূল লক্ষ্য। মিরাজ যেমন সবার হয়েই জানালেন, ‘যেহেতু দেশের প্রতিনিধিত্ব করছি, সবাই প্রত্যাশা করছে সে অনুযায়ী খেলতে হবে। তবে এতে চাপ ঠিক নয়, চেষ্টা থাকবে নিজেদের সেরাটা দেয়ার। যদি নাও হয়, তাহলে তো কিছু করার নেই। তবে আমরা আমাদের শতভাগ দেয়ার চেষ্টা করব।’ নেপালের শক্তি-দুর্বলতা নিয়েও ভাবনা আছে মিরাজের, ‘ওদের ব্যাটসম্যানরা শুরুতে শট খেলতে চায়। ওদের একটা-দুইটা ভাল বোলার থাকতে পারে। তবে আমাদের ভাল খেলার মানসিকতা থাকতে হবে।’ এ মানসিকতাতেই নেপালকে হারিয়ে দিয়ে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো যুব বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলার আশা করছে।
×