ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মেহেন্দিগঞ্জ প্রাথমিক শিক্ষা অফিস

ঘুষ না দিলে মিলছে না নতুন পে স্কেল

প্রকাশিত: ০৭:২০, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

ঘুষ না দিলে মিলছে না নতুন পে স্কেল

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে শিক্ষকদের নতুন পে স্কেলের বেতন নির্ধারণী ফরম পূরণের নামে চলছে অর্থ বাণিজ্যের মহোৎসব। উপজেলায় কর্মরত প্রায় এক হাজারেরও অধিক শিক্ষকের কাছ থেকে অফিসের একটি সিন্ডিকেট চক্র ইতোমধ্যে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, সরকারের প্রজ্ঞাপনের ঘোষণা অনুযায়ী জানুয়ারি মাসের বেতনের সঙ্গে শিক্ষকদের নতুন পে স্কেলে বেতন দিতে বলা হয়। সে মোতাবেক বেতন নির্ধারণী ফরম পূরণের জন্য অফিস খরচ বাবদ প্রতি শিক্ষকের কাছ থেকে তিন শ’ টাকা করে উত্তোলন করেন কথিত শিক্ষক নেতা মোর্শারফ হোসেন, আবদুল লতিফ ও প্রধান করণিক মোসলে উদ্দিন। সূত্রমতে, ৪৭শ’ থেকে ৪৯শ’ টাকার উন্নিত বেতন স্কেল পেতে যেসব শিক্ষকেরা তিন শ’ টাকা করে দিয়েছেন স্কেল পরিবর্তন করা হলেও বাকি শিক্ষকরা টাকা না দেয়ায় তাদের উন্নিত স্কেল প্রদান করা হয়নি। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে অফিস কক্ষে বসে প্রধান করণিক মোসলে উদ্দিনের সঙ্গে শিক্ষক রেজাউল ইসলামসহ অন্য শিক্ষকদের তুমুল বাগ্বিত-া হয়। ভুক্তভোগী শিক্ষকরা জানান, টাকা উত্তোলনের হোতা অফিসের কর্মরত কর্মচারী জিয়াউর রহমান, আব্দুল লতিফ ও মোসলে উদ্দিন। শিক্ষকরা আরও জানান, বেতনের ফরম পূরণের জন্য তিন শতাধিক শিক্ষক ঘুষ প্রদান করেছেন। শুধু তাদেরই নতুন স্কেলে বেতন দেয়া হচ্ছে। বাকি শিক্ষকরা ঘুষের টাকা না দেয়ায় তাদের পূর্বের নিয়মে বেতন দেয়া হচ্ছে। এ নিয়ে শিক্ষকদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষকরা আরও অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন থেকে একই অফিসে চলছে টাইম স্কেল, পেনশন ও বদলি বাণিজ্য। টাইম স্কেলের জন্য প্রতি শিক্ষকের কাছ থেকে ১ হাজার পাঁচ শ’ টাকা করে হাতিয়ে নেয়া হয়। প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার কাজের জন্য নাদের আলী স্মৃতি বিদ্যালয় থেকে সহকারী শিক্ষক জিয়াউর রহমানকে শিক্ষা অফিসে প্রেষণে দায়িত্ব পালনের জন্য আনা হয়। সেই থেকে গত দেড় বছর পর্যন্ত তিনি নিজ কর্মস্থলে যোগদান না করে অফিসে বসে ঘুষ বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। সহকারী শিক্ষক মরিয়ম বেগম জানান, জিয়াউর রহমান জিপি হিসাব খোলার কথা বলে তার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। এ ছাড়াও অফিসে মোস্তফা নামের এক সহকারী শিক্ষককে দিয়ে অফিস আদেশ ছাড়াই দীর্ঘদিন থেকে অবৈধভাবে সহকারীর কাজ করাচ্ছেন মোসলে উদ্দিন। ফলে মোস্তফা তার কর্মস্থলে শিক্ষকতা না করে অফিসে বসে সহকারীর কাজ করছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার বজলুর রহমান জানান, আমি নতুন এসেছি, কোন অনিয়ম হয়ে থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মাহাবুব এলাহীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
×