ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ড. সাবরিনা আনাম

শ্যামদেশের পথে পথে

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

শ্যামদেশের পথে পথে

(পূর্ব প্রকাশের পর) একই বোটে সঙ্গী হলেন ভারতীয় বেশ কয়েক জন নাগরিক। লাইফ জ্যাকেট পরে নিলাম প্রত্যেকেই। সাগরের ঢেউয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বোটের ইঞ্জিন চালু হয়ে গেল। নীল জলরাশি কেটে সফেদ ফেনা সৃষ্টি করে করে এগিয়ে চলল বোট। ওপরে নির্মল নীলাকাশ আর নিচে অবারিত নীল ঢেউ। অনেকে উত্তেজনায় ক্যামেরায় ক্লিক করছেন। গুম গুম আওয়াজ তুলে ছুটে চলল বোট। নিজের বুকের ভেতরও ঢিপ ঢিপ আওয়াজের শব্দ পেলাম। ১০ মিনিট পর সাগরের মাঝখানে এক জেটিতে ভিড়ল বোট। এখানে প্যারাসুটে উড়ে সমুদ্র দেখেন পর্যটকরা। আমরা ঘুরে ঘুরে ছবি তুললাম। আবার ডাক পড়ল বোটে চড়বার। এবার বোট এসে থামল এক দোতলা লঞ্চের পাশে। এখানে চলছে স্কুবা ডাইভিং। সাগরতলের জগৎ দেখতে নেমে পড়ছেন অনেকে। সেখানে কিছুক্ষণ থামার পর মূল গন্তব্যে চলল বোট। বেশ কিছুক্ষণ চলার পর সাদা বালুচরে এসে থামল বোট। স্বচ্ছ নীল পানিতে পা ডুবিয়ে নেমে এলাম বোট থেকে। সারি সারি পেতে রাখা হয়েছে চেয়ার আর রৌদ্র থেকে বাঁচবার জন্য ছাতা। ছোট্ট বীচ, পরিচ্ছন্ন। সমুদ্রে দাপাদাপি করবার জায়গাটুকু নিরাপত্তা বেষ্টনী দিয়ে চিহ্নিত করা। এখানে এসে মনে হলো শুধু এশিয়া নয়, পৃথিবীর সব মহাদেশের মানুষের এক মিলন মেলা এটি। আমার টিমের সব সদস্যের মোবাইল, ব্যাগ ইত্যাদি পাহারা দেয়ার বাহানায় আমি রয়ে গেলাম ছাতার নিচে। উদ্দেশ্য নিজের মতো করে প্রকৃতিকে অনুভব করার চেষ্টা। দৃষ্টি মেলে দিলাম দূর থেকে দূরে। কিন্তু দৃষ্টি বেশিদূর এগোলো না। ঘুরে ফিরে মনে এলো রঙ্গিন ঝিনুক ছড়িয়ে থাকা কেয়া গাছের সারির ফাঁকে সেন্টমার্টিনের দীর্ঘ তট। আমরা কেন পারিনি সারা পৃথিবীর মানুষদের সেখানে নিয়ে যেতে! অথচ কত সামান্য সম্পদ নিয়ে পাতায়া সেটা পেরেছে। ফেরার পথে একটি বৌদ্ধ মন্দির আর লুকডড সুপার মার্কেটে কিছু কেনাকাটা করে আমরা সেদিনের মতো ফিরে এসেছিলাম। পরবর্তী দু’দিন ব্যাঙ্ককের মার্কেটগুলো ঘুরতে গিয়ে লক্ষ্য করেছি এখানে বেশ রিজনেবল হোলসেল মার্কেট যেমন আছে তেমনি আছে অত্যন্ত বিলাসবহুল সপিং মল। কমিউটার ট্রেন, বাস, ট্যাক্সি, অটোরিক্সা সব কিছুর সমন্বয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা মানুষের একদম নাগালের মধ্যে। সুবর্ণভূমি ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের প্রবেশ পথে রাজা ভূমিবলের প্রমাণ সাইজের ম্যূরাল। সেখানে লেখা রয়েছে- খড়হম ষরাব ঃযব শরহম ঐরং গধলবংঃু শরহম ইযঁসরনড়ষ অঁষুধফবল. মনে মনে বললাম প্রিয় রাজা আপনারা যা পেরেছেন, আমরা তা পারিনি। আপনি আমাদের শ্রদ্ধা গ্রহণ করুন।
×