ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

স্যান্ডারসকে হারিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস হিলারির

দৃষ্টি নিউ হ্যাম্পশায়ারের দিকে

প্রকাশিত: ০৭:৩৬, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

দৃষ্টি নিউ হ্যাম্পশায়ারের দিকে

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির মানোনয়নের লড়াইয়ে আইওয়া অঙ্গরাজ্যের ইতিহাসে এটিই ছিল কোন প্রার্থীর জন্য সঙ্কীর্ণতম ব্যবধানে অর্জিত বিজয়। কিন্তু সোমবার দলীয় ককাস ভোটে বার্নি স্যান্ডারসের ওপর হিলারি ক্লিনটনের বিজয় প্রত্যাশার চেয়েও কঠিনতর হলেও হিলারিকে দলীয় মনোনয়ন লাভের পথেই রেখেছে। এদিকে স্যান্ডারস তার নগণ্য ব্যবধানে হেরে যাওয়ার ঘটনাকে মঙ্গলবার ‘রাজনৈতিক বিপ্লবের লড়াইয়ের পথে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ‘ বলে বর্ণনা করেন। সেদিন ভারমন্টের সিনেটর স্যান্ডারস নিউ হ্যাম্পশায়ার অঙ্গরাজ্যে ৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় পাইমারি ভোটাভুটির প্রাক্কালে ক্লেয়ারমন্টে উত্তেজিত শ্রোতাদের উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছিলেন। খবর এএফপি ও গার্ডিয়ান অনলাইনের। আইওয়াতে স্যান্ডারসের প্রাপ্ত ৪৯ দশমিক ৬ ভোটের তুলনায় ৪৯ দশমিক ৮ ভোট পেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলীয় ঐ অঙ্গরাজ্য নিয়ে হিলারি বড় রকমের স্বস্তির নিঃশ্বাসই ছাড়েন। এ অঙ্গরাজ্য আট বছর আগে হিলারিকে ছেড়ে বারাক ওবামার পক্ষেই ভোট দিয়েছিল। নিউ হ্যামশায়ারে ভোটারদের উদ্দেশে হিলারি বলেন, ভুল করবেন না, আমরা শেষ অবধি লড়াই করে যাব। এদিকে, প্রেসিডেন্ট পদে রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়নের লড়াই ইভানজেলিকাল টেড ক্রুজ, ধনাঢ্য ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং সুদর্শন মার্কো রুবিওর মধ্যে ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতার রূপ নিয়েছে। স্যান্ডারস আইওয়া ভোটকে তার প্রগতিশীল রাজনীতির এক নৈতিক জয় বলে অভিহিত করেন। জরিপে নিউ হ্যাম্পশায়ারে অনুষ্ঠেয় আগামী সপ্তাহের পাইমারিতে হিলারির তুলনায় স্যান্ডারসের ডাবল ডিজিটে এগিয়ে থাকার আভাস তাকে আস্থাবান করে তুলেছে। নিউ হ্যাম্পষায়ার ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের এ্যাসোসিয়েট প্রফেসর দান্ত স্কালা বলেন, হিলারির জন্য এটি স্পষ্টতই টিকে থাকা ও এগিয়ে যাওয়ার ঘটনাই ছিল। এ বিশ্ববিদ্যালয় ডেমোক্রেটিক পার্টির আগামী বিতর্কের আয়োজন করবে। স্কালা বলেন, সামান্য ব্যবধানের এক বিজয় এক স্বস্তির নিঃশ্বাসই ছিল বলে আমি নিশ্চিত। কারণ, আমার মনে হয় হিলারি হেরে গেলে স্যান্ডারসের দলীয় মনোনয়ন লাভের সামর্থ্য নিয়ে প্রচলিত ধারণা বদলে দিতে বড় ভূমিকা রাখত। ৭৪ বছরের সিনেটর সান্ডারস তার ওয়ালস্ট্রিট বিরোধী, দারিদ্র্য বিমোচন, গণতান্ত্রিক-সমাজতান্ত্রিক কর্মসূচী নিয়ে তরুণ ভোটারদের মধ্যে আবেগময় প্রভাব বিস্তার করেছেন।কিন্তু স্যান্ডারসের বামঘেঁষা রাজনীতি দলীয় উচ্চশ্রেণীর সদস্যদের মনে ভয়ের সঞ্চার করেছে। তারা রিপাবলিকানদের হোয়াইট হাউসের বাইরে রাখতে হিলারিকেই সর্বোত্তম প্রার্থী হিসেবে দেখেছেন। স্কালা এএফপিকে বলেন, তারা স্যান্ডারসকে মনোনীত প্রার্থী হিসেবে চান না। সেজন্য তারা হিলারিকেই সুযোগ দিতে চান। এদিকে, ক্লেয়ারমন্টের অপেরা হাউসে স্যান্ডারস তার শ্রোতাদের উদ্দেশে বলেন, গতরাতে আইওয়াতে আমরা দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী রাজনৈতিক সংগঠনের মোকাবিলা করেছি। হর্সোৎফুল্ল জনতার উদ্দেশে তিনি বলেন, মানুষ আমেরিকার রাজনীতি ও অর্থনীতির ধারায় মৌলিক পরিবর্তন সমর্থন করতে প্রস্তুত রয়েছে বলে ফলাফলে দেখা যায়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিউ হ্যাম্পশয়ারের হ্যাম্পটনে এক সমাবেশে উপস্থিত হওয়ার আগে হিলারি এমএসএনবিসির সঙ্গে এক সাক্ষাতকার দেন। স্যান্ডারসের বিপ্লবের আহ্বানের প্রতি আমেরিকানরা শেষ পর্যন্ত সাড়া দেবেন কি না এ প্রশ্নের জবাবে হিলারি বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠাতারা জানতেন যে, যদি আমাদের এক বিরাট গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে টিকে থাকতে হয়, তা হলে আমাদের আবেগকে দূরে রাখার ব্যবস্থা থাকতে হবে। আমাদের মধ্যে এমন সব তাত্ত্বিক থাকতে পারেন না যারা জায়গায় জায়গায় লম্বা লম্বা কথা বলেন। যারা ফল দেখাতে পারেন এমন ব্যক্তিদেরই আমরা চাই। তিনি বলেন, যে ভাবনা কাগজে দেখতেই ভাল লাগে, কিন্তু জনগণের জন্য কোন ফল বয়ে আনতে পারে না, তা কাগুজে ভাবনাই মাত্র। ফল দেখানোর ক্ষেত্রে আমার কৃতিত্ব, সাফল্য ও ব্যর্থতা সবই রয়েছে।
×