ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বই হোক নিত্যসঙ্গী

প্রকাশিত: ০৩:৪৮, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

বই হোক নিত্যসঙ্গী

ইব্রাহীম রাসেল এটা খুব আনন্দের সংবাদ যে, বছরের একটি মাস হলেও কিছু মানুষের দিনযাপন বইকেন্দ্রিক হয়ে পড়ে। তবে বই হওয়া উচিত নিত্য সঙ্গী। ফেব্রুয়ারি মাসটি আমাদের নতুন বইয়ের মাস। বইয়ের সঙ্গে সবচেয়ে বড় সম্পর্ক লেখক আর পাঠকের। লেখক থেকে পাঠকের কাছে পৌঁছানোর মধ্যবর্তী স্থানে কিছু সৃজনশীল লোক কাজ করেন। যাদের মেধা-মনন-রুচিশীলতা লেখক ও পাঠকের মধ্যকার সম্পর্কটাকে সহজতর ও সুদৃঢ় করে। বই পড়া, না পড়া নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে। আমার কাছে মনে হয় আগের চেয়ে মানুষ এখন বেশি পড়ছে। যতটা পড়া উচিত, হয়ত ততটা নয়। পড়ার এখন অনেক মাধ্যম রয়েছে। প্রযুক্তির যুগে ইন্টারনেট সব আমাদের হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে। সার্চ করলেই সহজে পেয়ে যাচ্ছি পছন্দের পাঠ। পাঠকের সংখ্যা কমেছে বলে মনে হয় না। কারণ আমাদের জনসংখ্যা বেড়েছে, শিক্ষার হার বেড়েছে। আর শিক্ষার সঙ্গে বই ওতপ্রোতভাবে জড়িত। একথা স্বীকার্য যে, পাঠ্যবইয়ের বাইরে কাগজে মুদ্রিত অন্য বইগুলোর ক্রেতা কমেছে। তাই বলে পাঠক কমেনি। কারণ পাঠক এখন কবিতা, উপন্যাস, গল্প, নাটক, সাধারণ জ্ঞান, বিশ্ব পরিচিতি ইত্যাদি হাতের মুঠোয় পাচ্ছে। শুধু একটা ক্লিকের অপেক্ষা। বর্তমানে লেখালেখিও বেশি হচ্ছে। কারণ লেখা প্রকাশের এখন নানান মাধ্যম রয়েছে। অনলাইনজুড়ে একটি বড় লেখক ও পাঠক গোষ্ঠী গড়ে উঠেছে। একটা সময় ছিল লেখালেখির প্রতি আকর্ষণ থাকলেও লেখা প্রকাশের ক্ষেত্রটা ছিল কম। দু’ চারটা পত্রিকা আর মুষ্টিমেয় কিছু প্রকাশনী ছাড়া মানুষের কাছে পৌঁছানোর আর কোন মাধ্যম ছিল না। বর্তমানে সময়টা পাল্টে গেছে। বিভিন্ন ব্লগ, ফেসবুকসহ অনলাইনভিত্তিক অনেক পত্রিকা রয়েছে। জাতীয় দৈনিকের সংখ্যাও বহু গুণ বেড়েছে। বিভিন্ন ছোট কাগজ, সাহিত্যপত্র তো রয়েছেই। আর প্রকাশনীর জগতেও বিরাট বিপ্লব ঘটেছে। অমর একুশে গ্রন্থমেলায় এখন শত শত প্রকাশনী অংশগ্রহণ করছে। সব প্রকাশনীই প্রতিবছর নতুন নতুন বই ও লেখক নিয়ে হাজির হচ্ছে। সুতরাং পাঠক না থাকলে লেখক, প্রকাশনী ও প্রকাশের মাধ্যম, কোন কিছুরই বিস্তার ঘটত না। তবে এ কথা অনস্বীকার্য যে, পুস্তক মুদ্রণ শিল্পের সঙ্গে যারা জড়িয়ে আছেন তারা ততটা ভাল নেই। কারণ পাঠক এখন কিনে বই পড়ার চেয়ে ফ্রি বেশি পড়ছেন। পাঠকের দোষ দিয়েও লাভ নেই। কারণ তারা ফ্রিতে পাচ্ছেন। এখন পরিত্রাণের উপায়টা খুঁজতে হবে। পুস্তক শিল্পের সঙ্গে যারা জড়িত তাদেরকে যেমন সচেতন হতে হবে, পাশাপাশি পাঠককে বই কিনে পড়তে উৎসাহিত করতে হবে। উপহার হিসেবে বইকে সবার আগে গুরুত্ব দিতে হবে। পুরস্কার বিতরণের ক্ষেত্রে বইকে প্রাধান্য দিতে হবে। পরিশেষে এটাই বলতে চাই- অন্য যাবতীয় বিষয়ের সঙ্গে সঙ্গে বইও হোক আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। কারণ ভাল বই পরম বন্ধু। ভাল বই অন্ধত্ব দূর করে চোখ খুলে দেয়, আলোকিত করে। আর সমাজের জন্য আলোকিত মানুষের বড় প্রয়োজন। বরিশাল থেকে
×