ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শ্রীনগরে সক্রিয় মোবাইল ফোন প্রতারক চক্র

প্রকাশিত: ২২:৪২, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

শ্রীনগরে সক্রিয় মোবাইল ফোন প্রতারক চক্র

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ॥ শ্রীনগরে সক্রিয় হয়ে উঠেছে মোবাইল ফোন প্রতারক চক্র। চক্রটি মোবাইল ফোনে ফাঁদে ফেলে বিকাশের মাধ্যমে বিপুল পরিমান টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। গত ২৩ জানুয়ারি ওই চক্রের শিপন নামের এক হোতাকে উপজেলার এম রহমান শপিং কমপ্লে¬ক্সের নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ( ডিবি)। এ সময় তার কাছ থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত মোবাইল ফোন সেট ও ডেইলী ট্রানজেকশন রেজিস্টার জব্দ করে পুলিশ। ওই সময় ডিবি পুলিশের কাছ থেকে শিপনকে ছাড়িয়ে নিতে উপজেলা প্রজন্ম লীগের এক নেতা নানা চেষ্টা তদবির চালিয়ে ব্যার্থ হয়। পুলিশ সূত্রে জানাগেছে, মনোয়ারা ভূইয়া নামে এক নারীর কাছ থেকে মোবাইল ফোন প্রতারণার মাধ্যমে শিপন বিভিন্ন সময় ছয় লাখ নয় হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। এঘটনায় ঢাকার ওয়ারী থানায় একটি মামলা হয়। মামলার সূত্র ধরে ডিবি পুলিশ শিপনকে গ্রেফতার করে। শিপনের গ্রেফতারের পর তার পরিবারের কাছ থেকে বেরিয়ে আসছে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য। ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকার হতদরিদ্র শিপন ছয় বছর আগে শ্রীনগর উপজেলার দক্ষিণ পাইকসা গ্রামের মেয়ে সুলতানাকে বিয়ে করে এ এলাকায় আসে। দুই বছর আগে শিপন এম রহমান শপিং কমপ্লে¬ক্সে বিকাশ এজেন্টের দোকান দিয়ে গড়ে তুলে মোবাইল ফোন প্রতারক চক্র। চক্রটি গভীর রাত পর্যন্ত শ্রীনগর সদরে অবস্থান করে মোবাইল ফোনে জ্বীনের বাদশা, রোগ মুক্তির কবিরাজ, বড় আদম বেপারীসহ নানা রকম ধোঁকাবাজির গল্প এটে প্রতারণার ফাঁদ তৈরি করে। তাদের পাতানো ফাঁদে পা দিয়ে অনেকেই সর্বস্ব খুইয়েছেন। কয়েকদিন পূর্বে প্রতারণার শিকার গাজীপুরের কালিয়াকৈরের এক নারীকে থানা চত্বরে কান্নকাটি করতে দেখা গেছে। প্রতারক শিপন প্রতারণার অর্থ দিয়ে কয়েক বছরে শ্রীনগর সদরে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা দিয়ে বাড়ি কিনে ফেলে। রাতারাতি এত টাকা কোথায় পেলো তা নিয়ে স্থানীয়দের মনে প্রশ্ন জাগলেও কেউ ক্ষতিয়ে দেখার চেষ্টা করেনি। পুলিশের অপর একটি সূত্র জানায়, সুচতুর শিপন লোক চক্ষুকে ফাঁকি দেওয়ার জন্য এম রহমান শপিং কমপ্লেক্সে দোকান নেয়। শপিং কমপ্লেক্সটিতে পাঁচটি বাণিজ্যিক ব্যাংক থাকার কারনে দিন ভর বহু টাকা পয়সা লেনদেন হয়। একারণে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা ট্রানজেকশন করলেও শিপনের নেতৃত্বে গড়ে উঠা চক্রটি আইন শৃংখলা বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিয়ে দেদারছে প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নিতে থাকে। স্থানীয়রা জানায়, শিপন অনেক দিন ধরে এ পেশায় জড়িত । শিপনের স্ত্রী সুলতানা জানায়, প্রতারণার এ চক্রের সদস্য শিপন একা নয় । তার পার্শ্ববর্তী দুজন ব্যবসায়ীর নাম উল্লেখ করে বলেন, এরা ছাড়াও এ চক্রে আরো অনেকেই রয়েছে । এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে মার্কেট কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও শিপনের পাশ্ববর্তী দোকানদার প্রজন্মলীগ নেতা ফয়সাল আহমেদ মিশু প্রতারক শিপনকে নির্দোষ দাবী করে সাংবাদিকদেরকে সংবাদ প্রকাশ করতে নিষেধ করেন। মিশুর চাচাতো ভাই সেনাবহিনীর একজন মেজর উল্লে¬খ করে সংবাদ প্রকাশ হলে সাংবাদিকদের মজা বুঝিয়ে দেওয়া হবে বলেও হুমকি দেন।
×