ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

২ শ’ পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীর তালিকা প্রকাশ

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

২ শ’ পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীর তালিকা প্রকাশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী সৈন্যদের মধ্যে যারা যুদ্ধাপরাধ ঘটিয়েছে তাদের তালিকা প্রকাশ করেছে ‘আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার আন্দোলন।’ একাত্তরে বাংলাদেশী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও দ- কার্যকরের মধ্যে গড়ে ওঠা সংগঠনটির আহ্বায়ক নৌমন্ত্রী শাজাহান খান মঙ্গলবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে ২০০ জনের এই তালিকা প্রকাশ করেন। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় স্বাধীনতা হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন সেক্টরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে পাকিস্তানের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া প্রকাশের পর পাকিস্তানী সৈন্যদের বিচারের দাবিও জোরালো হয়ে উঠেছে। যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ বিচারের দাবিতে গড়ে ওঠা গণজাগরণ মঞ্চের পক্ষ থেকেও পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি জানানো হয়েছে। এরমধ্যেই দেশের বিশিষ্টজনদের উদ্যোগে পাকিস্তানী সৈন্যদের গণবিচারের দাবি তোলে ‘আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার আন্দোলন’। একাত্তরে ১৯৫ জন পাকিস্তানী সৈন্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এলেও তালিকায় তার চেয়ে পাঁচজন বেশি থাকার ব্যাখ্যাও দেন শাজাহান খান। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ১৯৫ জনের তালিকা প্রকাশ করার কথা থাকলেও নতুন পাঁচজনের তথ্য পাওয়ায় ২০০ জনের তালিকা করা হয়েছে। এরকম আরও তথ্য আসছে দাবি করে এই মন্ত্রী বলেন, সেগুলো যাচাই-বাছাই করে ভবিষ্যতে আরও তালিকা প্রকাশ করা হবে। প্রকাশিত তালিকার ৬৮ জনের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের নীলনকশা প্রণয়ন ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় যে, আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার আন্দোলন-এর দাবিসমূহ বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে উপস্থাপনের জন্য স্পীকারের কাছে স্মারকলিপি দেয়া হবে। এ লক্ষ্যে আজ বুধবার বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে মিছিল সংসদ অভিমুখে যাত্রা করবে। এতে যোগ দেবেন দেশের বিশিষ্টজনসহ বিভিন্ন সেক্টরের প্রতিনিধি ও সর্বস্তরের মানুষ। সংবাদ সম্মেলনে জেনেভা কনভেনশনসহ আন্তর্জাতিক সব যুদ্ধনীতি লঙ্ঘন করে সরাসরি গণহত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগে অংশ নেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে ১১৮ জনের বিরুদ্ধে। ১৪ জনের বিরুদ্ধে ব্যাপক হারে গণহত্যায় অংশ নেয়ায় অভিযোগ করা হয়েছে। এই তালিকার একজন লেফটেন্যান্ট জেনারেল, পাঁচজন মেজর জেনারেল, পাঁচজন কর্নেল, ২০ জন ব্রিগেডিয়ার, ৩৯ জন লেফটেন্যান্ট কর্নেল, ৪৫ জন ক্যাপ্টেন, ৮১ জন মেজর, দুজন লেফটেন্যান্ট, তিনজন বিমানবাহিনীর ও তিনজন নৌবাহিনীর কর্মকর্তা রয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে শাজাহান খানের সঙ্গে ছিলেন সাংবাদিক আবেদ খান, চলচ্চিত্র পরিচালক কাজী হায়াৎ, মুক্তিযোদ্ধা ইসমত কাদির গামা, অধ্যাপক আব্দুল মান্নান চৌধুরী, অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী প্রমুখ। পাকিস্তানীদের গণবিচারের এই উদ্যোগের বিরোধিতা করে আসছে একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবির।
×