ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংসদে সম্পর্ক ছিন্নের দাবি ;###;পাকিস্তান একের পর এক কূটনৈতিক শিষ্টাচারবিরোধী কাজ করে চলেছে ;###;পাকিস্তান-বাংলাদেশ সম্পর্ক কী হবে তা ভবিষ্যত বলবে- সংসদে পররাষ্ট্রমন্ত্রী

খাদের কিনারে

প্রকাশিত: ০৫:২৪, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

খাদের কিনারে

তৌহিদুর রহমান ॥ ঢাকা-ইসলামাবাদের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক এখন গভীর খাদের কিনারে। দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক একেবারে ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম। পাকিস্তানের দোষেই এই সম্পর্ক ভেঙ্গে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইসলামাবাদের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে এখন গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে ঢাকা। অবশ্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী মঙ্গলবার জানিয়েছেন, পাকিস্তান বরাবরই হতাশ করছে। তবে পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক টানাপোড়েন চললেও এখনই বাংলাদেশ সম্পর্ক ছিন্ন করছে না। এদিকে ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন প্রায় সাত ঘণ্টা নিখোঁজ থাকার ঘটনায় ঢাকায় পাকিস্তানের হাইকমিশনার সুজা আলমকে তলব করেছে সরকার। কূটনৈতিক সূত্র জানায়, পাকিস্তান বার বারই ঢাকা-ইসলামাবাদের সম্পর্ক তিক্ত করে চলেছে। ঢাকা থেকে পাকিস্তানের কোন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করলে, পাকিস্তানও ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছে। আবার ঢাকার পাকিস্তানের কোন কর্মকর্তাকে বাংলাদেশ বহিষ্কার করলে, পাকিস্তানও ইসলামাবাদের বাংলাদেশ হাইকমিশনের সম পদের কর্মকর্তাকে বহিষ্কার করছে। এছাড়া ঢাকার পাকিস্তানের হাইকমিশনারকে তলব করলে পাল্টা ব্যবস্থাস্বরূপ ইসলামাবাদে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব করা হচ্ছে। সর্বশেষ সোমবার ঢাকার পাকিস্তান হাইকমিশনের প্রেস বিভাগের এক কর্মকর্তাকে আটকের পর ইসলামাবাদের বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস বিভাগের এক কর্মকর্তা সাত ঘণ্টা নিখোঁজ হন। বাংলাদেশী কূটনীতিক মৌসুমী রহমানকে পাকিস্তান থেকে বহিষ্কারের পর ইসলামাবাদ ও করাচীর বাংলাদেশ মিশনের কূটনীতিকদের বিরুদ্ধে দেশটি ষড়যন্ত্র শুরু করে। বাংলাদেশী কূটনীতিকদের বিরুদ্ধে অপরাধ খোঁজার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। সে কারণে বাংলাদেশের ওই দুই মিশনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়। বাংলাদেশের কূটনীতিকরা যেখানেই যান সেখানেই তাদের পিছে পিছে গোয়েন্দাদের গাড়ি যাচ্ছে। আবার বাংলাদেশী কূটনীতিকদের বাড়ির আশপাশেও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়েছে পাকিস্তান। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে ইতোমধ্যেই পাকিস্তানের কাছে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পাকিস্তান ভিয়েনা কনভেনশন লঙ্ঘন করছে। ইসলামাবাদ ও করাচীর মিশনে গোয়েন্দাদের মাধ্যমে বাংলাদেশের কূটনীতিকদের হয়রানি করা হচ্ছে। কোনভাবেই যেন বাংলাদেশের কূটনীতিকদের হয়রানি না করা হয়, সে বিষয়ে পাকিস্তানকে সতর্ক করে দেয়া হয়। তবে পাকিস্তান এ বিষয়ে কোন ইতিবাচক পদক্ষেপ নেয়নি। সব মিলিয়ে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক এখন খাদের কিনারে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। এর আগে গত ৩০-৩১ জানুয়ারি ঢাকায় দক্ষিণ এশীয় স্পীকার সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জাতীয় সংসদের সকল স্পীকার যোগ দিলেও পাকিস্তানের উচ্চকক্ষ সিনেটের সভাপতি মিয়া রাজা রাব্বানী এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেননি। এছাড়া গত ১৩-১৪ জানুয়ারি ঢাকায় দক্ষিণ এশীয় পয়ঃনিষ্কাষণ সম্মেলনে সকল দক্ষিণ এশিয়ার সকল দেশকে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে ওই সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ার সকল দেশ আসলেও পাকিস্তান অংশগ্রহণ করেননি। সে সময় পাকিস্তান জানিয়েছিল, তারা ৬০ সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে ঢাকায় আসবে। তবে শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান ওই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেননি। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল, বাংলাদেশ তাদের প্রতিনিধি দলকে ভিসা দেয়নি। অবশ্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সে অভিযোগ অস্বীকার করা হয়। ফলে দুই দেশের মধ্যে টানাপোড়েনের বিষয়টি খুব স্পষ্ট হয়ে উঠে। এদিকে পাকিস্তানে বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন সাত ঘণ্টা নিখোঁজের ঘটনায় ঢাকার পাকিস্তান হাইকমিশনার তলবের চিঠি দিয়ে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার পররাষ্ট্র্র মন্ত্রণালয়ে তাকে তলবের পর চিঠি দেয়া হয়। এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব না দিয়ে সুজা আলম বলেন, ‘সোমবারের ঘটনার বিষয়ে আমাকে জানানো হয়েছে। আমি ইসলামাবাদের সঙ্গে কথা বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানাব।’ ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস উইংয়ের পার্সোনাল স্টাফ (পিও) জাহাঙ্গীর হোসেন সোমবার বিকেল পাঁচটার দিকে মেয়েকে কোচিং থেকে আনতে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হন। দীর্ঘ সময় তার ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। প্রায় সাত ঘণ্টা পর রাত বারোটার দিকে তার সন্ধান পাওয়া যায়। রাত দেড়টার দিকে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সোহরাব হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, জাহাঙ্গীর নিরাপদে বাড়ি ফিরেছেন। জাহাঙ্গীরকে ধরে নেয়া হয়েছিল কি না, নিলে কারা নিয়েছে- এসব প্রশ্নে স্পষ্ট কিছু বলেননি সোহরাব। এই ঘটনায় মঙ্গলবার পাকিস্তানের হাইকমিশনার সুজা আলমকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়। ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রিয়ার এ্যাডমিরাল খুরশেদ আলমের সঙ্গে হাইকমিশনারের আলোচনা হয়। এ সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (দ্বিপক্ষীয়) মিজানুর রহমানও উপস্থিত ছিলেন। আলোচনাকালে জাহাঙ্গীর হোসেনের নিখোঁজের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। তবে পাকিস্তানের হাইকমিশনার জানিয়েছেন, এ বিষয়ে ইসলামাবাদকে বিস্তারিত জানাবেন। ইসলামাবাদ থেকে বিস্তারিত তথ্য পাওয়ার পর ঢাকাকে জানাবেন তিনি। ঢাকায় পাকিস্তান হাইকমিশনের এক কর্মকর্তার সন্দেহজনক গতিবিধির কারণে পুলিশের হাতে আটক হওয়ার পরপরই ইসলামাবাদে জাহাঙ্গীরের নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া যায়। পাকিস্তান দূতাবাসের প্রেস সেকশনের এ্যাসিসটেন্ট প্রাইভেট সেক্রেটারি আবরার আহমেদ খানকে সোমবার দুপুরে গোয়েন্দা পুলিশ ধরে নেয়ার পর সন্ধ্যায় হাইকমিশনের কর্মকর্তাদের জিম্মায় ছেড়ে দেয়। তার কাছে অবৈধভাবে রাখা ভারতীয় রুপী পাওয়া গিয়েছিল বলে পুলিশ দাবি করলেও তা প্রত্যাখ্যান করে পাকিস্তান হাইকমিশন এই ঘটনার নিন্দা জানায়। সোমবার রাতে ঢাকার পাকিস্তান হাইকমিশন থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, এই ঘটনাকে হয়রানি হিসেবেই দেখছে পাকিস্তান হাইকমিশন। অপবাদ ও মিডিয়া ট্রায়ালের পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তান হাইকমিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের এভাবে হেনস্থা করার এই ধরনটি দেখা যাচ্ছে। ২০১১ সাল থেকে আবরার আহমেদ ঢাকায় পাকিস্তান দূতাবাসের প্রেস সেকশনে কর্মরত রয়েছেন বলে জানায় পাকিস্তান হাইকমিশন। ঢাকা-ইসলামাবাদের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকে কেন্দ্র করে নতুন করে টানাপোড়েন শুরু হয়। যুদ্ধাপরাধী বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা আলী আহসান মুজাহিদের মৃত্যুদ-ে নাখোশ হয়ে গত ২২ নবেম্বর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় পাকিস্তান। পাকিস্তানের ওই প্রতিক্রিয়ার প্রতিবাদে গত ২৩ নবেম্বর দেশটির ঢাকায় নিযুক্ত হাইকমিশনার সুজা আলমকে তলব করে সরকার। সে সময় পাকিস্তানের হাইকমিশনারকে জানিয়ে দেয়া হয়, পাকিস্তান সরকার সরাসরি এখন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে। তবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পাকিস্তান সরকার কোনভাবেই যেন আর হস্তক্ষেপ না করে, সে বিষয়ে তাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়। ৩০ নবেম্বর ইসলামাবাদে নিযুক্ত বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার মৌসুমী রহমানকে তলব করে পাকিস্তান সরকার। তাকে তলবের পর ১৯৭১ সালের হত্যাকা-ে সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করে পাকিস্তান। তলব ও পাল্টা তলব নিয়ে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে নতুন করে টানাপোড়েন শুরু হয়। এরই মধ্যে গত ২৩ ডিসেম্বর ঢাকা থেকে পাকিস্তানের কূটনীতিক ফারিনা আরশাদকে বহিষ্কার করে বাংলাদেশ। ফারিনা আরশাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্টভাবে জঙ্গী তৎপরতার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ দেয় বাংলাদেশ। তাকে বাংলাদেশ থেকে বহিষ্কার করা হয়। তারই পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ইসলামাবাদ থেকে বাংলাদেশের কূটনীতিক মৌসুমী রহমানকে বহিষ্কার করে পাকিস্তান। দুই দেশের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য, তলব পাল্টা তলব, বহিষ্কার পাল্টা বহিষ্কারের পর সোমবার ঢাকা ও ইসলামাবাদে দূতাবাস কর্মকর্তাদের নিয়ে সর্বশেষ ওই ঘটনা ঘটে। সংসদ রিপোর্টার জানান, যুদ্ধাপরাধ ইস্যুতে পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েন চললেও এখনই বাংলাদেশ তা ছিন্ন করছে না বলে জাতীয় সংসদকে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তিনি বলেছেন, সম্পর্কের ক্ষেত্রে টানাপোড়েন থাকতে পারে। কূটনৈতিক সম্পর্কও তেমন। তারপরও যুদ্ধের সময়ে কূটনৈতিক সম্পর্ক টিকে থাকে। তাই পাকিস্তানের সঙ্গে টানাপোড়ন থাকলেও এই মুহূর্তে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন হচ্ছে না। তবে জাতীয় স্বার্থের বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। বাকিটা ভবিষ্যত বলে দিবে। মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ তথ্য জানান। সরকার দলীয় সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নানের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে কি ঘটছে তা সকলেই জানেন। যা খুবই দুঃখজনক। এ বিষয়ে আলোচনার জন্য পাকিস্তান হাইকমিশনারকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। কড়া ভাষায় তাদের আচরণের প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। তবে সম্পর্ক বিচ্ছিন্নের বিষয়টি এই মুহূর্তে বিবেচনা করা হচ্ছে না। কিন্তু জাতীয় স্বার্থের বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। সম্পূরক প্রশ্নে আব্দুল মান্নান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পাকিস্তান একের পর এক কূটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন করে চলেছে। তারা নানা ষড়যন্ত্রেও সঙ্গে লিপ্ত। এই অবস্থায় তাদের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখার প্রয়োজন আছে কি? এরপর একই বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ডা. রুস্তম আলী ফরাজী। তিনিও পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা হবে কিনা তা জানতে চান। জবাবে মন্ত্রী বলেন, একটু অপেক্ষা করুন। সবুরে মেওয়া ফলে। সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ওয়ারেসাত হোসেন বেলালের লিখিত প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য ও বিবৃতি প্রদান করে আমাদের হতাশ করেছে। তারা বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় প্রদান ও রায় কার্যকর করার প্রেক্ষিতে বিভিন্ন সময় অনাকাক্সিক্ষত প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হতে বরাবরই যথাযথ এবং জোরালো কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এরূপ ক্ষেত্রে প্রতিবারই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। পাকিস্তানের হাইকমিশনারকে বিভিন্ন সময়ে তলব করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে কোন ধরনের অনাকাক্সিক্ষত ও অযাচিত বিবৃতি বা মন্তব্য বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল। যা কোনভাবেই বরদাশত করা হবে না। পাকিস্তানকে একথা কঠোরভাবে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে পাকিস্তানী কর্তৃপক্ষ দায়িত্বশীল আচরণ করবে এবং এ ধরনের অনাকাক্সিক্ষত মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকবে এমন প্রত্যাশাও করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী। আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিকের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, পাকিস্তান বিভিন্ন বিবৃতিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকে ক্রটিপূর্ণ ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করেছে। এমনকি ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ-পাকিস্তান-ভারতের মধ্যকার স্বাক্ষরিত ত্রি-পক্ষীয় চুক্তির অপব্যাখ্যা করেও বিবৃতি দিয়েছে। ত্রিদেশীয় চুক্তিতে বাংলাদেশে গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করা যাবে না এমন কোন কিছুর উল্লেখ নেই। বরং পাকিস্তানই ১৯৭১ সালে গণহত্যার জন্য চিহ্নিত ও আটককৃত নিজ দেশের নাগরিকদের বিচারের আওতায় আনার বাধ্যবাধকতা অনুসরণে ব্যর্থ হয়েছে।
×