ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কৃষি জমি রক্ষায় সবাইকে সচেতন হতে হবে ॥ মতিয়া চৌধুরী

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ২৫ জানুয়ারি ২০১৬

কৃষি জমি রক্ষায় সবাইকে সচেতন হতে হবে ॥ মতিয়া চৌধুরী

সংসদ রিপোর্টার ॥ কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, দেশে প্রতিদিন মানুষ বাড়ছে, জমি কমছে। তবুও আমরা প্রধান খাদ্য ধান উৎপাদনে শুধু স্বয়ংসম্পূর্ণই নয়, বিদেশে রফতানিও করছি। দেশের কৃষি ক্ষেত্রে এই অগ্রগতি ও উন্নতি সাধিত হয়েছে, তা বহুলাংশে কৃষক, কৃষি বিজ্ঞানীদের নিরলস প্রচেষ্টা ও গবেষণার ফসল। শিল্পায়নের হাত থেকে দেশের কৃষি জমি রক্ষায় দেশের মানুষকেই সজাগ ও সচেতন হতে হবে। আমরা সংঘাত বা মারামারির দায় নিতে পারি না। আর প্রত্যেক জমিতে প্রহরা বসানোও মন্ত্রণালয়ের পক্ষে সম্ভব নয়। কেবল জনসচেতনতা ও জনসম্পৃক্ততা দরকার। সবাই সচেতন হলেইকৃষি জমি রক্ষা পাবে। রবিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে একাধিক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। সরকারী দলের সংসদ সদস্য আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইনের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, ধান, গম, ভুট্টা, আলু, বেগুন, টমেটোসহ অন্যান্য সবজি ফসলের বিভিন্ন উন্নত ও পরিবর্তিত প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা সহিষ্ণু জাত উদ্ভাবনের ফলে দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। উল্লেখযোগ্য সাফল্যের মধ্যে রয়েছে বন্যা, খরা, লবণাক্ততা, জলমগ্নতা ও তাপমাত্রা সহিষ্ণু ধান, গম ও ইক্ষু এবং অন্যান্য ফসলের জাত উদ্ভাবন। কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থায় আমাদের এই সাফল্যসমূহ স্পষ্টতই দৃশ্যমান হচ্ছে। প্রধান খাদ্য ধান উৎপাদনে দেশ আজ স্বয়ংসম্পূর্ণ। বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত ধানের জাত দেশের শতকরা ৮৩ ভাগ জমিতে চাষ করা হচ্ছে, যা মোট ধান উৎপাদনের প্রায় ৯১ ভাগ। তিনি জানান, বাম্পার উৎপাদন হওয়ায় আমরা ধান ও আলু রফতানি করছি। তিনি জানান, গম, ভুট্টা, আলু, টমেটোসহ অন্যান্য শাক-সবজি উৎপাদনেও দেশের কৃষি বিজ্ঞানীদের উদ্ভাজিত জাত এবং উৎপাদন কৌশল প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। কৃষি ক্ষেত্রে এ উন্নয়নে গ্রামের মানুষের আয় বৃদ্ধি এবং ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ায় জীবন-মানের উন্নয়ন হয়েছে, যা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমান সরকারের আমলে উদ্ভাবিত ৪টি জাতের ফলন হাইব্রিড জাতের কাছাকাছি হওয়ায় চাষীদের কাছে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। সরকারী দলের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম কৃষকরা ধানের নায্যমূল্য পাচ্ছে না উল্লেখ করে এ থেকে পরিত্রাণের উপায় জানতে চান। জবাবে কৃষিমন্ত্রী স্বীকার করেন, সেচযুক্ত উৎপাদিত ধানের দাম নিয়ে কৃষকদের কিছুটা অসুবিধা হচ্ছে। আর দ্বিতীয় কারণটি হচ্ছে, কৃষকরা সরাসরি কেন্দ্রে গিয়ে ধান বিক্রি করতে পারছে না। মধ্যস্বত্বভোগীদের হস্তক্ষেপের কারণে কৃষকরা প্রকৃত মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তিনি বলেন, একটা সময় ছিল যখন ধানের দাম বেশি ছিল, কিন্তু মানুষের ক্রয় ক্ষমতা ছিল না। এখন মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। তবে সেচযুক্ত ধান উৎপাদনের ক্ষেত্রে কৃষকদের মাঝে আমরা শতকরা ২০ ভাগ করে ভর্তুকি দিয়ে যাচ্ছি। তবে কৃষকরা বৃষ্টিনির্ভর উৎপাদনে গেলে উৎপাদন মূল্যে অনেক কমে যাবে। সেজন্য নানা প্রজাতির হাইব্রিড ধান আমরা কৃষকদের মাঝে নিয়ে যাচ্ছি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে মতিয়া চৌধুরী বলেন, দেশের খাদ্য গুদামে চালের চেয়ে ধানের বস্তা দ্বিগুণ জায়গা দখল করে। এর ফলে সরকারী পর্যায়ে ধান ক্রয়ের পরিমাণ বৃদ্ধির এখন সুযোগ নেই।
×