ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

দ্রুত কার্যকর করার পরামর্শ সংসদীয় কমিটির

অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালার খসড়ায় আর পরিবর্তন নয়

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ২৩ জানুয়ারি ২০১৬

অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালার খসড়ায় আর পরিবর্তন নয়

নাজনীন আখতার ॥ জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা ২০১৫-এর খসড়ায় আর কোন পরিবর্তন আনার পক্ষে নয় তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কিছু অনলাইন গণমাধ্যমে উস্কানিমূলক তথ্য প্রচার করে সহিংসতা ছড়ানো হয় এবং রাষ্ট্রদ্রোহের মতো অপরাধও করা হয় উল্লেখ করে তা নিয়ন্ত্রণে নীতিমালা দ্রুত কার্যকর করার ওপর জোর দিয়েছে সংসদীয় কমিটি। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়। কমিটির সভাপতি এ কে এম রহমতুল্লাহ্র সভাপতিত্বে বৈঠকে অংশ নেন কমিটির সদস্য তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সুকুমার রঞ্জন ঘোষ, সিমিন হোসেন (রিমি) এবং সাইমুম সরওয়ার কমল। বৈঠকে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মরতুজা আহমদসহ মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, বৈঠকে খসড়া নীতিমালাটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। খসড়ায় আর কোন পরিবর্তন চায় না সংসদীয় কমিটি। গত বছরের ২১ জুলাই খসড়া নীতিমালাটি তথ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়। ১২ আগস্টের মধ্যে সর্বসাধারণকে মতামত দিতে বলা হয়। দ্বিতীয় দফায় ৩১ আগস্ট এবং তৃতীয় দফায় ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মতামত দেয়ার সময় বাড়ানো হয়। সাধারণ মানুষ ছাড়াও বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকেও মতামত দেয়া হয়। নীতিমালা প্রসঙ্গে কমিটির সভাপতি এ কে এম রহমতুল্লাহ জনকণ্ঠকে বলেন, অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালাটির খসড়ার ওপর একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। বর্তমানে তা চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। নীতিমালার কোন অংশের বিষয়েই কমিটির কোন দ্বিমত নেই। তাই কমিটি চায় না এতে আর কোন পরিবর্তন আসুক। বরং নীতিমালাটি দ্রুত কার্যকর করার ওপর জোর দিয়েছে কমিটি। চূড়ান্ত খসড়া নীতিমালা অনুসারে, অনলাইন গণমাধ্যম বলতে বাংলা, ইংরেজী বা অন্য কোন ভাষায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে স্থির ও চলমান চিত্র, ধ্বনি ও লেখা বা মাল্টিমিডিয়ায় অন্য কোন রূপে উপস্থাপিত তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ বা সম্প্রচারকারী ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানকে বোঝাবে। অনলাইন গণমাধ্যমের জন্য কোন ধরনের জামানত রাখতে হবে না। এর আগে বেসরকারী টেলিভিশন ও বেতারের জন্য প্রণীত জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা বাস্তবায়নের জন্য যে জাতীয় সম্প্রচার কমিশন গঠন করা হবে, সেই কমিশনকেই জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা দেয়া হতে পারে। সংশ্লিষ্টদের মতে, অনলাইন গণমাধ্যমের ওপর সরকারের কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। দেশে কত সংখ্যা অনলাইন গণমাধ্যম আছে তার সঠিক পরিসংখ্যানও সরকারের কাছে নেই। নীতিমালা না থাকায় বিভিন্ন সময়ে কিছু অনলাইন গণমাধ্যমের বিষয়ে সহিংসতা ছড়ানোর অভিযোগ উঠলেও সরকার কোন ব্যবস্থা নিতে পারে না। খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে, সশস্ত্র বাহিনীসহ দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত অন্য কোন বাহিনীর প্রতি কটাক্ষ, বিদ্রুপ বা অবমাননা করা যাবে না অনলাইন গণমাধ্যমে। অপরাধ নিবারণ ও নির্ণয়ে অথবা অপরাধীদের দ- বিধানে নিয়োজিত সরকারী কর্মকর্তাদের হাস্যস্পদ করে ও ভাবমূর্তি নষ্ট করে এমন তথ্য-উপাত্ত প্রচার, প্রকাশ ও সম্প্রচার করা যাবে না। রাষ্ট্রদ্রোহমূলক ও হিংসাত্মক ঘটনা প্রদর্শন করে এমন কোন তথ্যও প্রচার করা যাবে না। এদিকে সংসদ সচিবালয়ের গণসংযোগ বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিগত বৈঠকে গৃহীত সিদ্বান্তগুলোর বাস্তবায়ন অগ্রগতি এবং তথ্য অধিদফতরের (পিআইডি) সার্বিক কার্যক্রম, সমস্যা ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা বিষয়ে আলোচনা হয়। সভায় অনলাইন তথ্য গবেষণা ও অনলাইন তথ্য নীতিমালা বিষয়ে আলোচনা হয়। এছাড়াও বৈঠকে তথ্য অধিদফতরের সার্বিক কার্যক্রম পরিদর্শনের লক্ষ্যে সংসদীয় কমিটির তা পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
×