ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এবারের স্লোগান কবিতা মৈত্রীর কবিতা শান্তির’

পয়লা ফেব্রুয়ারি ঢাবিতে জাতীয় কবিতা উৎসব শুরু

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ১৬ জানুয়ারি ২০১৬

পয়লা ফেব্রুয়ারি ঢাবিতে জাতীয় কবিতা উৎসব শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে শৃঙ্খল মুক্তির আহ্বানে ১৯৮৭ সালে প্রথম শুরু হয় জাতীয় কবিতা উৎসব। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিস্তার ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ নির্মাণের প্রত্যয়ে প্রতিবছরই অনুষ্ঠিত হচ্ছে উৎসবটি। সেই ধারাবাহিকতায় এ বছর অনুষ্ঠিত হবে ৩০তম উৎসবটি। দুই দিনব্যাপী উৎসবের সূচনা হবে আগামী পয়লা ফেব্রুয়ারি। চলমান সময়কে ধারণ করে এবারের সেøাগান নির্ধারণ করা হয়েছে ‘কবিতা মৈত্রীর কবিতা শান্তির’। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিতব্য উৎসব উদ্বোধন করবেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক। জাতীয় কবিতা পরিষদ আয়োজিত উৎসবে অংশগ্রহণ করবেন বাংলাদেশের খ্যাতিমান ও নবীন-প্রবীণ কবিসহ ভারত, নরওয়ে, সুইডেন, মালয়েশিয়া, চীন ও তাইওয়ানের কবিরা। এছাড়া রাজধানীর টিএসসির পরিষদ কার্যালয়ে চলছে উৎসবে অংশগ্রহণে নিবন্ধন প্রক্রিয়া। ত্রিশতম উৎসব উপলক্ষে শুক্রবার টিএসসিতে পরিষদের অস্থায়ী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন এবারের উৎসব আহ্বায়ক কবি রবিউল হুসাইন, যুগ্মআহ্বায়ক কবি কাজী রোজী, পরিষদের সভাপতি কবি মুহাম্মদ সামাদ, সাধারণ সম্পাদক কবি তারিক সুজাত, পরিষদের সাবেক সভাপতি কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী, কবি ও কথাশিল্পী আনোয়ারা সৈয়দ হক, কবি হালিম আজাদ, কবি ও কণ্ঠশিল্পী বুলবুল মহলানবীশ। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় ১ ও ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার চত্বরে সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলবে উৎসব। জাতীয় কবিতা পরিষদের কমিটি কর্তৃক বাছাইকৃত কবিরাই কেবল উৎসবে কবিতা পাঠ করতে পারবেন। এজন্য ঢাকার কবিদের ৩০০ টাকা ও ঢাকার বাইরের কবিদের ২০০ টাকা প্রদানের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হবে। টিএসসির কবিতা পরিষদের অস্থায়ী কার্যালয়ে প্রতিদিন বিকেল ৫টা থেকে রাত আটটা পযর্šÍ নিবন্ধন চলছে। ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে নিবন্ধন কার্যক্রম। সংবাদ সম্মেলনে হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, বাংলাদেশে কবি একটি গৌণ শব্দ ছিল কিন্তু কবিতা পরিষদ এ শব্দটিকে গৌরবান্বিত করেছে। ১৯৮৭ সালে প্রথম উৎসবের প্রেক্ষাপটের সঙ্গে বর্তমান প্রেক্ষাপটের ভিন্নতা রয়েছে। সে সময় স্বৈরশাসনের কবলে আক্রান্ত এই দেশ। বর্তমানে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকরের মাধ্যমে কলঙ্কমুক্ত হয়েছে জাতি। এই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে নির্ধারিত হয়েছে এবারের সেøাগান। রবিউল হুসাইন বলেন, ৩০ বছর ধরে নানা প্রতিকূলতার মধ্যে কবিরা একইভাবে উৎসব করে যাচ্ছেনÑ এই নজির পৃথিবীতে বিরল। দেশের রাজনীতি থেকে শুরু করে আন্দোলন-সংগ্রামের মতো বিষয়গুলো সহজাতভাবেই জড়িয়ে গেছে এ উৎসবের সঙ্গে। দেশে যে কয়টি অসাম্প্রদায়িক উৎসব রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম এ কবিতা উৎসব। ধীরে এ উৎসবটি পরিণত হচ্ছে আন্তর্জাতিক উৎসবে। আনোয়ারা সৈয়দ হক বলেন, যেখানে দরিদ্র মানুষ আছে সেখানেই কবিতা থাকবে। কারণ কবিতা সব সময়ই বঞ্চিত মানুষের কথা বলে। কাজী রোজী বলেন, সংসদে একজন সদস্য হিসেবে আমাকে মনোনীত করায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি সরকারের কাছে। সংসদে দেয়া আমার প্রথম বক্তৃতাটি সমর্পণ করেছি কবিতার কাছেই। কোন নেতাকে নয়। মুহাম্মদ সামাদ বলেন, এ উৎসবের মধ্য দিয়েই একদিন বঙ্গবন্ধুর বিচার চাওয়া হয়েছে। কবিতা পরিষদের কাজ করেছেন দেশের স্বনামধন্য কবিরা। এ কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে নানা প্রতিকূল পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে কখনই উদ্দেশ্য থেকে সরে যায়নি পরিষদ। উৎসবের বিস্তারিত তুলে ধরে বক্তৃতা করেন পরিষদের সভাপতি মুহাম্মদ সামাদ ও লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সাধারণ সম্পাদক তারিক সুজাত।
×