ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাংক কর্মকর্তাকে নির্যাতন

জনগণের নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশের আইজিকে গবর্নরের চিঠি

প্রকাশিত: ০৮:০৩, ১৪ জানুয়ারি ২০১৬

 জনগণের নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশের আইজিকে গবর্নরের চিঠি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক গোলাম রাব্বীকে নির্যাতনের আলোচিত ঘটনায় জনগণের নিরাপত্তা চেয়ে ব্যাংকটির গবর্নর ড. আতিউর রহমান পুলিশের মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হককে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়েছেন। বুধবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক এএফএম আসাদুজ্জামান। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র বলছে, চিঠিতে ব্যাংকটির সহকারী পরিচালক নিরাপরাধ গোলাম রাব্বী নিজের পরিচয়পত্র দেখানোর পরও মোহাম্মদপুর থানার এসআই মাসুদ অমানুষিক নির্যাতন ও ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। গবর্নরের তরফ থেকে দেয়া চিঠিতে ঘটনার পরে এসআই মাসুদকে ওই থানা থেকে প্রত্যাহার করার জন্য পুলিশের সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানানো হয়। এ ঘটনার পর শুধু বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাই নয়, দেশের কোন মানুষই যেন পুলিশের নির্যাতনের শিকার না হয়, সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে অনুরোধ জানান গবর্নর। প্রসঙ্গত, গত ৯ জানুয়ারি রাত এগারোটার দিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের যোগাযোগ ও প্রকাশনা বিভাগের কর্মকর্তা গোলাম রাব্বী মোহাম্মদপুর থেকে কল্যাণপুরের বাসায় যাচ্ছিলেন। যাওয়ার পথে মোহাম্মদপুর এলাকার একটি এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলে বের হচ্ছিলেন। আচমকা পেছন থেকে এক পুলিশ সদস্য তার শার্টের কলার ধরেন। ব্যাংক কর্মকর্তার কাছে ইয়াবা আছে বলে এক পুলিশ সদস্য দাবি করেন। ব্যাংক কর্মকর্তা পুলিশ সদস্যের এমন অভিযোগে রীতিমতো হতভম্ব। এ নিয়ে পুলিশ সদস্যের সঙ্গে ব্যাংক কর্মকর্তার বাগবিত-া শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত ওই পুলিশ সদস্য ব্যাংক কর্মকর্তাকে অনেকটা টেনে হিঁচড়ে এসআই মাসুদের কাছে নিয়ে যান। এসআই মাসুদও ব্যাংক কর্মকর্তার কাছে ইয়াবা আছে বলে দাবি করেন। এমন দাবি ভিত্তিহীন বলে জানালে ব্যাংক কর্মকর্তাকে পুলিশের টহল গাড়িতে তুলে নেয়। এরপর ব্যাংক কর্মকর্তা নিজের পরিচয়পত্র দেখান। পরিচয় পাওয়ার পর ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন এসআই মাসুদ। টাকা দিতে অস্বীকার করলে ব্যাংক কর্মকর্তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন। এমনকি ক্রসফায়ারের নামে হত্যা করে বেড়িবাঁধে ফেলে রাখার হুমকিও দেন এসআই মাসুদ। নির্যাতনের এক পর্যায়ে খবর পেয়ে সহকর্মী ও পরিচিতরা ঘটনাস্থলে গেলে ব্যাংক কর্মকর্তাকে ছেড়ে দেন এসআই মাসুদ। জানা গেছে, ২০০১ সালে পুলিশ বিভাগে কনস্টেবল পদে চাকরি পান মাসুদ। চাকরি পাওয়ার সময়ে তিনি কলেজের ছাত্র ছিলেন। কয়েকবার পরীক্ষা দিয়েও পাস করতে পারেননি। পরে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও ডিগ্রী পাস করেন। পরবর্তীতে এএসআই এবং ২০১৩ সালে এসআই হিসেবে পদোন্নতি পান। পুলিশে চাকরি পেয়েই বেপরোয়া জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। তিনি ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়ীয়া থানাধীন এনায়েতপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ সোয়াইতপুর গ্রামের মরহুম সিরাজ উদ্দিন শিকাদারের ছেলে। এলাকায় আবদুল্লাহ নামেও পরিচিত। প্রায় ১০ বছর আগে পিতার মৃত্যু হয়।
×