ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নতুন তালিকাভুক্ত আইটিসির সন্দেহজক লেনদেন

প্রকাশিত: ২৩:৫৫, ১৩ জানুয়ারি ২০১৬

নতুন তালিকাভুক্ত আইটিসির সন্দেহজক লেনদেন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানি আইটি কনসালটেন্টস লিমিটেডকে ঘিরে আবারো নতুন করে কারসাজি শুরু হয়েছে। তালিকাভুক্তির আগে প্রকাশ করা আর্থিক প্রতিবেদনে কোম্পানিটির লোকসান হলেও লেনদেনের শুরুর পর থেকেই বিক্রেতাশূণ্য হয়ে লেনদেন হচ্ছে। যদিও লোকসানী ও নন-মার্জিন এই কোম্পানির প্রতি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কেন এতো আগ্রহ তা বাজার সংশ্লিষ্টরাও খুঁজে পাচ্ছেন না। উভয় স্টক একচেঞ্জ কর্তৃপক্ষও বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত। এমনকি টানা তিন দিন দর বাড়ার কারণ জানতে চেয়ে ইতিমধ্যে প্রধান বাজার ঢাকা স্টক একচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ কোম্পানিটিকে নোটিশও পাঠিয়েছে। বুধবারে কোম্পানিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শেয়ার দর বাড়ার কোনো কারণ নেই। তবে বাজার সংশ্লিষ্টরা এই লেনদেনকে সন্দেহজনক মনে করছেন। জানা গেছে, শেয়ারটির অ¯^াভাবিক দর বাড়ার পেছনে কারণ জানতে চেয়ে ডিএসই নোটিস পাঠায়। এর জবাবে কোম্পানিটি জানায়, কোনো রকম মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই শেয়ারটির দর বাড়ছে। বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত চার কার্যদিবসের প্রতিদিনই শেয়ারটির দর বেড়েছে। এ সময়ে শেয়ারটির দর ৪৭ টাকা ৭ পয়সা থেকে বেড়ে ৬২ টাকা ৪০ পয়সা পর্যন্ত হয়। অর্থাৎ শেয়ারটির দর বেড়েছে ১৪ টাকা ৭০ পয়সা আর শেয়ারটির এই দর বাড়াকে অ¯^াভাবিক বলে মনে করছেন ডিএসই কর্তৃপ¶। এর আগেও গত দুই বছর ধরে নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে ঘিরে কারসাজি ঘটনা ঘটে। গুজব ছড়িয়ে অনেক শেয়ারের দরই আকাশচুম্বী করে তোলা হয়। সবশেষে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। যেমনটি ঘটেছে শাহজিবাজার পাওয়ারের ক্ষেত্রে শুরুর দিকে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড একচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) নজর না দিলেও পরে একাধিকবার লেনদেন বন্ধ করতে বাধ্য হয়। এরপরে নতুন শেয়ারের দর যেন অতিরিক্ত না বাড়ে সেই কারণে লেনদেন শুরুর প্রথম ৩০ কার্যদিবসে শেয়ারটিকে নন-মার্জিনেবল শেয়ার হিসেবে নির্দেশনা জারি করা হয়। এরপরেও থেমে নেই আইটিসি শেয়ারের দৌরাত্ম। এখন থেকেই আইটিসি শেয়ারের প্রতি বিশেষ নজর না দিলে এটিকে ঘিরেই আবারো কারসাজির চেষ্টা চালাবে নানা চক্র। গত চার কার্যদিবসের লেনদেনের চিত্র বিশ্লেষণ করলে এমনটিও বোঝা যায়। বাজার সংশ্ল্ষ্টিরা মনে করছেন, লোকসানী এই কোম্পানিটির শেয়ারের দরের লাগাম এখনই টানতে হবে নইলে। আরও একটি শেয়ার কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটতে পারে। এদিকে প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর ১৫) অনিরী¶িত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ কোম্পানির লোকসান হয়েছে ৪১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। কোম্পানির বেসিক শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে হয়েছে ০.০৬ টাকা। যা আগের বছরে একই সময়ে লোকসানের পরিমাণ ছিল ৩ কোটি ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ০.৪২ টাকা। উল্লেখ্য, শেয়ার প্রতি আয় ওয়েটেড এভারেজ আইপিও-পূর্ববর্তী পরিশোধিত শেয়ারের ওপর ভিত্তি করে হিসাব করা হয়েছে যা ছিল ৭ কোটি ৫০ লাখ শেয়ার। আর ২০১৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর তারিখে সমাপ্ত ৩ মাস সময়ের জন্য আইপিও-পরবর্তী ৮ কোটি ৭০ লাখ শেয়ারের ওপর ভিত্তি ধরে হিসাব করলে বেসিক শেয়ার প্রতি লোকসান হয় ০.০৫ টাকা। আর ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ পর্যন্ত এ কোম্পানির শেয়ার প্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) হয়েছে ১৮.৫২ টাকা।
×