ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

রাঙ্গুনিয়া থেকে বাঁশ পাচার : লাখ লাখ টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

প্রকাশিত: ২৩:৫২, ১৩ জানুয়ারি ২০১৬

রাঙ্গুনিয়া থেকে বাঁশ পাচার : লাখ লাখ টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে  সরকার

পান্থনিবাস বড়ুয়া , রাঙ্গুনিয়া ॥ রাঙ্গুনিয়ার উপজেলার নদী ও সড়কপথে বেপরোয়াভাবে বাঁশভর্তি ট্রাক ও নদীপথে চালি তৈরি করে পাচার হচ্ছে বাঁশ। বন বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীদের যোগসাজশে অবৈধ পথে বাঁশ পাচার হওয়ায় রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। অন্যদিকে উজাড় হচ্ছে সরকারি বেসরকারিভাবে বনায়নকৃত বাঁশ বাগান। পার্বত্য চট্টগ্রামের সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে শতাধিক চোরাই বাঁশ পাচারকারী সিন্ডিকেট কাপ্তাই জেটি ঘাট হয়ে চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন জেলায় পাচার হচ্ছে প্রতিদিন । রাঙ্গামাটির জেলার কাপ্তাই ইছামতি , রাঙ্গুনিয়া, পোমরা চেক ষ্টেশন, হাটহাজারী, কাপ্তাই রা¯তার মাথাসহ অর্ধ শতাধিক চেক ষ্টেশন ম্যানেজ করে নির্দিষ্ট স্থানে পাচার করছে পাচারকারী সিন্ডিকেট । প্রতিদিন কমপক্ষে শতাধিক ট্রাক ভর্তি করে বাঁশ চট্টগ্রাম কাপ্তাই সড়ক পথে পাচার করে। অন্যদিকে নদীপথে কাপ্তাই নতুন বাজার কর্নফুলি নদী, ইছামতি নদীর রানীর হাট হয়ে বাঁশের চালি তৈরি করে পাচার করা হচ্ছে। বনাঞ্চল উজাড় করে বাঁশ পাচার করার ফলে বৃক্ষশূন্য হয়ে পড়েছে জানান পরিবেশ সচেতনরা। অপরদিকে কাপ্তাই বাঁধের উপর থেকে কর্ণফুলি কাগজ কলের ঠিকাদাররা কাগজ কলে বাঁশ সরবরাহ না করে খোলা বাজারে বিক্রি করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। বাঁশ ব্যবসা সহজ ও লাভবান হওয়ায় সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে এ ব্যবসার প্রতি ঝুঁকে পড়েছেন অনেকেই। নাম প্রকাশ না করা শর্তে কাপ্তাইয়ের জনৈক কাঠ ব্যবসায়ী জানান, কাপ্তাই জেটিমুখ ফরেস্ট ষ্টেশন, রাম পাহাড় বিট, চন্দ্রঘোনা ফরেস্ট স্টেশন, পোমরা চেক ষ্টেশনসহ বিভিন্ন ফরেস্ট চেক ষ্টেশনে প্রতি ট্রাক বাঁশ থেকে ৭শ থেকে ১ হাজার চাঁদা নেয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ট্রানজিট পাস (টিপি) নিয়ে উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের রানীরহাট বাজার থেকে ৮/১০ টি ট্রাকের মাধ্যমে প্রতিদিন হাজার হাজার বাঁশ দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিবহন হয়ে থাকে। প্রতিহাজার বাঁশে ১৪’শ টাকা রাজস্ব পায় সরকার। একটি ট্রাকে ১৫০০-২০০০ বাঁশ পরিবহন করা যায়। কিন্তু ২ হাজার বাঁশের স্থলে প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার পর্যন্ত পরিবহন করে ব্যবসায়ীরা। প্রতি ট্রাকে প্রায় এক হাজার বাঁশ অতিরিক্ত পরিবহন হওয়াতে সরকার অতিরিক্ত ১৪শ’ টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অতিরিক্ত বাঁশের জন্য ৭শ’ টাকা নিচ্ছে ইছামতি রেঞ্জ। বাণিজ্যিক বাঁশ পরিবহনে দৈনিক ৯ হাজার ৮শ’ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। এ খাত থেকে সরকার প্রতিমাসে ২ লাখ ৯৪ হাজার টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। মরিয়ম নগরের বাঁশ ব্যবসায়ী আহমদ হোসেন জানান, ট্রানজিট পাস(টিপি) নিয়ে বাঁশ সরবরাহ করা হচ্ছে তবে টিপির চেয়ে বেশি বাঁশ নিলে বন বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করতে হয় । টিপির বাইরে বাঁশ বোঝাই ট্রাক থেকে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে রাঙ্গুনিয়ার ইছামতি রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা দিলোয়ার ইসলাম জানান, সরকারি রাজস্ব আদায়ে আইন মেনে নদী ও সড়কপথে বাঁশ পাচার রোধে সজাগ রয়েছি।
×