ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আখেরি মোনাজাত

প্রকাশিত: ০৩:৩৮, ১১ জানুয়ারি ২০১৬

আখেরি মোনাজাত

এজতেমার আভিধানিক অর্থ সমাবেশ। বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায়ের এ সমাবেশের মূল উদ্দেশ্য হলো শান্তির ধর্ম ইসলামের মর্মবাণী প্রচার ও প্রসারের মাধ্যমে নৈতিক উৎকর্ষ সাধন এবং আত্মশুদ্ধি অর্জন। জঙ্গীবাদ, ধর্মান্ধতা, কূপম-ূকতা, মৌলবাদ, অশান্তি, হানাহানির বিপরীতে এই সমাবেশ বিশ্বমানবতার শান্তি, সম্প্রীতি ও কল্যাণ কামনা করে। সেই সঙ্গে অন্তরের পরিশুদ্ধি লাভের জন্য প্রার্থনা করে। টঙ্গীর অদূরে তুরাগ নদের তীরে এই এজতেমায় প্রতিবছরই সমাবেশ ঘটে। পবিত্র হজের পর মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় সমাবেশটি শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। রবিবার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে বিশ্ব এজতেমার প্রথম পর্ব। চারদিন বিরতির পর আবার ১৫ জানুয়ারি শুরু হবে দ্বিতীয় পর্ব। শুক্রবার প্রথম দিন ফজরের নামাজের পর আমবয়ানের মধ্য দিয়ে এজতেমার প্রথম পর্বের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথম দিন জুমার নামাজ পড়তে সেখানে আশপাশ এলাকা থেকে বহু মুসল্লি যোগ দেন। ১৯৬৬ সালে তুরাগ নদের তীরে এজতেমা শুরু হওয়ার পর থেকে পর্যায়ক্রমে এই সমাবেশে দেশ-বিদেশের মুসলমানের অংশগ্রহণ এবং এর আকার বৃদ্ধি ইসলামের বিশ্ব ভ্রাতৃত্বের অনন্য দিকটি তুলে ধরছে। তাই বিশ্বব্যাপী ধর্মপ্রাণ মুসলমানের কাছে এজতেমার গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে। মূল বয়ান উর্দুতে হলেও বাংলা, ইংরেজী, আরবী ভাষায় তাৎক্ষণিক অনুবাদের ব্যবস্থা রয়েছে। এজতেমায় যারা অংশ নেন তারা মূলত জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস, হানাহানির বিপরীতে শান্তির বাণীই প্রচার করে আসছেন। এজতেমা যথাযথভাবে সম্পন্ন হতে পারছে এটাই শান্তিকামী মানুষের প্রাপ্তি। বিশ্ব এজতেমার আখেরি মোনাজাতে অংশ নেয়া লাখো মুসলমান একদিকে যেমন আল্লাহর কাছে বিশ্ব মানবতার শান্তি, সম্প্রীতি ও কল্যাণ কামনা করেছেন, তেমনি অন্তরের পরিশুদ্ধি লাভের জন্য প্রার্থনাও করেছেন। এবারও আখেরি মোনাজাতে মুসলিম জাহানের কল্যাণ, দেশের কল্যাণ, মুসলিম উম্মাহর সুদৃঢ় ঐক্য, আখেরাত ও দুনিয়ার শান্তি কামনার মধ্য দিয়ে শেষ হলো বিশ্ব এজতেমার প্রথম পর্ব। ‘আমিন, আল্লাহুম্মা আমিন’ ধ্বনিতে তুরাগ তীর মুখরিত করে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টি লাভের আশায় আকুতি জানান মুসল্লিরা। মোনাজাত পরিচালনা করেন বিশ্ব তাবলীগ জামাতের শীর্ষস্থানীয় মুরব্বি ভারতের মাওলানা সা’দ। এ সময় তার সঙ্গে হাত তুলে কাতর ও বিনম্র শ্রদ্ধায় দোয়া করেন লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি। মানবতার শান্তি ও কল্যাণ প্রতিষ্ঠায় বিশ্ব এজতেমা অব্যাহতভাবে জোরালো ভূমিকা রাখবেÑ সেটাই প্রত্যাশা।
×