ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধাপরাধী বিচার;###;মালেক নেওয়াজের জবানবন্দী

পাক আর্মি ও আলবদররা আমার বাবাকে শ্মশান ঘাটে নিয়ে হত্যা করে

প্রকাশিত: ০৫:২৭, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৫

পাক আর্মি ও আলবদররা আমার বাবাকে শ্মশান ঘাটে নিয়ে হত্যা করে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত জামালপুরের আলবদর বাহিনীর উদ্যোক্তা আশরাফ হোসেনসহ ৮ রাজাকারের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের ১৫তম সাক্ষী মোঃ মালেক নেওয়াজ ও ১৬তম সাক্ষী মোঃ মোখলেসুর রহমান তাদের জবানবন্দী প্রদান করেছেন। জবানবন্দীতে ১৫তম সাক্ষী মোঃ মালেক নেওয়াজ বলেন, পাকিস্তানী আর্মি ও আলবদররা আমার বাবা আব্দুল হামিদকে শ্মশান ঘাটে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দেয়। একইভাবে চাচাত ভাই ইয়াদ আলীকে গুলি করে হত্যা করে। ১৬তম সাক্ষী মোঃ মোখলেসুর রহমান জবানবন্দীতে বলেছেন, আব্দুল হামিদ মোক্তারকে আটক করে শ্মশান ঘাটে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে। ১৫তম সাক্ষীর জবানবন্দী শেষে আসামি পক্ষের আইনজীবী তাকে জেরা করেন। পরবর্তী সাক্ষীর জন্য আজ মঙ্গলবার দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে দুই সদস্য বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আদেশ প্রদান করেছেন। এ সময় সাক্ষীকে সাক্ষ্যদানে সহযোগিতা করেন প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল। আসামি পক্ষে ছিলেন এ্যাডভোকেট আব্দুস সোবহান তরফদার ও এ্যাডভোকেট এসএম মিজানুর রহমান। প্রসিকিউশনের ১৫তম সাক্ষী তার জবানবন্দীতে বলেন, আমার নাম মোঃ মালেক নেয়াজ। আমার বর্তমান বয়স আনুমানিক ৫৮ বছর। আমার স্থায়ী ঠিকানা, গ্রাম মৈশা ভাদুরিয়া, থানা- সষিাবাড়ি, জেলা- জামালপুর। আমার বর্তমান ঠিকানা- গোলাপবাগ, শহীদ আব্দুল হামিদ সড়ক, জামালপুর। আমি বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ময়মনসিংহ বিভাগের মহা-ব্যাবস্থাপক। আমার পিতা শহীদ আব্দুল একজন আইনজীবী ছিলেন। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ২২ জুলাই পাকিস্তান আর্মি জামালপুর শহরে আসে। পাকিস্তান আর্মি ও আলবদররা আমাদের বাড়ি ঘেরাও করে এবং তারা আমার বাবা ও ভাতিজা শামসুল আলমকে ধরে ফেলে। এর পর পাকিস্তান আর্মি ও আলবদর বাহিনীর লোকেরা আটককৃত আমার বাবা, ভাতিজা শামসুল আলম ও মাধুকে নিয়ে বাউশি গ্রামের ইসমাইল হোসেনের বাড়িতে যায়। জামালপুরে নিয়ে আসার পর ভাতিজা ও মাধুকে ছেড়ে দেয়। আমার বাবাকে পাকিস্তান আর্মি ও আলবদররা ধরে নিয়ে জামালপুর শহরে পিটিআই ক্যাম্পে নিয়ে যায় এবং সেখানে রেখে তাকে নির্যাতন করে। ঐ ক্যাম্পের একজন সুবেদার আমার বাবা বৃদ্ধ থাকায় ছেড়ে দেয়। পরে আলবদর আশরাফ হোসেনসহ অন্য রাজাকাররা আমার বাবাকে শ্মশান ঘাটে নিয়ে গুলি করে লাশ নদীতে ফেলে দেয়। এই ঘটনা আমি হযরত মুহুরীর কাছে শুনেছি। অন্যদিকে প্রসিকিউশনের ১৬তম সাক্ষী তার জবানবন্দীতে বলেছেন, ১৯৭১ সালের জুলাই মাসের ৭ তারিখে রাত ১২টার দিকে পাকিস্তান আর্মি ও রাজাকার বাহিনী লোকেরা যৌথভাবে পঞ্চপীর গ্রামে বড় ভাইয়ের শ্বশুরবাড়ি ঘেরাও করে। সেখান থেকে আমার বড় ভাই সাইদুর রহমান ওরফে সাধু চেয়ারম্যান ও তার শ্যালক আব্দুল হামিদকে আটক করে। পর আব্দুল হামিদ মোক্তারকে শ্মশান ঘাটে নিয়ে আলবদররা গুলি করে হত্যা করে। পরে লাশ নদীতে ফেলে দেয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আমি আমার বড় ভাই সাইদুর রহমান ওরফে সাধু চেয়ারম্যানের কাছ থেকে শুনেছি।
×